মাদারীপুরে তরুণ-তরুণীকে থানায় আটক রেখে নির্যাতন

প্রতীকী ছবি

মাদারীপুরে তরুণ-তরুণীকে থানায় আটক রেখে নির্যাতন

মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুরের শিবচরে এক এসআইর বিরুদ্ধে তিন তরুণ-তরুণীর ঘুরতে যাওয়ার ‘অপরাধে’ থানায় আটক রেখে নির্যাতন ও টাকা দাবীর অভিযোগ উঠেছে। পরে টাকা দিয়ে তরুণ-তরুণীদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে শিবচর উপজেলার বাখরেরকান্দি গ্রামের হালিম দারোগার ছেলে হৃদয় দারোগা তার বন্ধু শওকত হোসেন এবং তার চাচাতো বোন জুলেখা ব্যক্তিগত কাজে কাদিরপুর ইউনিয়নের ডিগ্রিরচর এলাকায় যায়। এসময় ওই তরুণ-তরুণীকে ভদ্রাসন পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সাইফুল আটক করে।

পরে তাদের কাছে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করে। টাকা না দিলে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় এসআই সাইফুল।

অভিযোগ উঠেছে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের হয়রানির ভয়ে জুলেখাকে এবং হৃদয়ের বন্ধু শওকত হোসেনকে চল্লিশ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেয় দুই পরিবার। কিন্তু আটক হৃদয়ের পরিবার থানায় যোগাযোগ না করায় থানা হাজতে আটকে রেখে রাতভর নির্যাতন চালানো হয় হৃদয়ের উপর।

পরে শুক্রবার সকালে হৃদয়ের পরিবার এসআইর চাহিদা মোতাবেক টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেয়।

এ ব্যাপারে আটক জুলেখার বাবা বলেন, ‘আমার কাছে প্রথমে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। আমার কাছে টাকা নেই জানালে পরে দুই লাখ টাকা চায় এসআই সাইফুল। পরে বিশ হাজার টাকায় দিলে আমার মেয়েকে ছেড়ে দেয়। ’

মাদারীপুর আইনজীবী সমিতির সদস্য আবুল হাসান সোহেল বলেন, ‘যদি কারো বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকে তাহলে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারে। আটক করে আবার ছেড়ে দেওয়া এটা রহস্যজনক। যদি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকত তাহলে আদালতে হস্তান্তর করবে। তাদের ছেড়ে দেওয়া কিংবা নির্যাতন করার সুযোগ নেই পুলিশের। ’

ঘুষ দারির বিষয়টি অস্বীকার করে এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশ তাদের আটক করেনি। স্থানীয়রা আটক করে পুলিশকে খবর দিয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসে। কী অপরাধে তাদের থানায় নেওয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এব্যপারে ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি বলতে পারবেন। ’

শিবচর থানার ওসি জাকির হোসেন বলেন, ‘পরোকিয়া প্রেমের সূত্র ধরেই ছেলে মেয়ে পালিয়ে গিয়েছিল ওই এলাকায়। পরে স্থানীয়রা তাদের আটক করে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে আসে। ঘুষ দাবির বিষয়টি সত্য নয়। ওদের তো পাঁচ হাজার টাকা দেওয়ারও ক্ষমতা নেই। ওই মেয়েটির সংসার ভেঙ্গে যেতে পারে তাই মেয়ের বাবার অনুরোধে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ’