স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন!

অঞ্জনা মণ্ডল

স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন!

বেলাল রিজভী • মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি এলাকায় বাবুল মজুমদারের বাড়িতে এক নারী স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ করছেন। দাবি মেনে না নিলে আত্মহত্যা করবেন বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। তবে এই ঘটনার পর থেকে ছেলের বাড়ির লোকজন বাড়ি থেকে সটকে পড়েছে।  

জানা গেছে, কদমবাড়ি এলাকার বাবুল মজুমদারের ছেলে মিহির মজুমদারের সাথে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে অঞ্জনা মণ্ডল নামে এক তরুণীর বিয়ে হয়।

বিয়ে হলেও স্ত্রীর স্বীকৃতি দেয়নি মিহির। এ কারণে কয়েক দফা সালিশ ডেকে বিষয়টি সুরাহারে চেষ্টা করা হলেও নানা অজুহাতে কালক্ষেপণ করে ছেলের পরিবার।

অনশনকারী অঞ্জনা মণ্ডল জানান, মিহির মজুমদারের সাথে তাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক থেকেই ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বরের রাজৈর কালী মন্দিরের পুরোহিতের মাধ্যমে বিয়ে করেন এবং ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর মাদারীপুর জজ কোর্টে ম্যারেজ রেজিস্ট্রি করা হয়। কিন্তু মিহিরের বাবা বাবুল মজুমদার বিষয়টি মেনে নিতে চাচ্ছে না এবং বিষয়টি ধামাচাপা ও তালাক দেয়ার জন্য তাকে এর আগেও শারীরিক ও মানসিকভাবে নিযার্তন করেছে।

 

অবশেষে নিরুপায় হয়ে অঞ্জনা মণ্ডল স্ত্রীর অধিকার আদায়ে শনিবার (১৪ জুলাই) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করেন। দাবি মেনে না নিলে আত্মহত্যারও ঘোষণা দেন তিনি।  

আরও পড়ুন → স্ত্রীর মর্যাদা চাইতে গিয়ে লাঞ্ছিত ছাত্রলীগ নেত্রী

অঞ্জনা মণ্ডল বলেন, ‘মিহিরের সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক থেকেই দু’জনের ইচ্ছেতে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে আমরা ঢাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। পরে আমার শ্বশুর ইউপি আমাদের ভুল বুঝিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসে। ’ 

‘পরে আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে জোরপূর্বক বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। সর্বশেষ গ্রাম্য সালিশ কর্তাদের কাছে এক মাসের সময় চায় সমস্য সমাধানের। কিন্তু কয়েক মাস পার হলেও কোনো ফল না পেয়ে আমি শ্বশুর বাড়িতে আসতে বাধ্য হয়েছি। ’
 
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের পরিবারের কেউ বাড়িতে নেই। কোথায় গেছে- জানতে চাইলে প্রতিবেশীরা কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারেন নি।
 
এ ব্যাপারে এলাকার কয়েকজন গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা সালিশের সময় ছিলেন এবং মেয়েটিকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ছেলের বাবা ইউপি সদস্য হওয়ায় কারও কথায় কর্ণপাত করেন নি। এখন যে পরিস্থিতি হয়েছে, তাতে আইনের সাহায্য নেয়া উচিৎ।

মেয়ের খালাতো ভাই ভবোতোষ সরকার বলেন, ‘মিহিরের স্ত্রী যে অঞ্জনা মন্ডল, তার আইনগত প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। আমি চাই, আমার বোনকে যেন স্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হয়। তা না হলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো। ’

এদিকে, মিহিরের বাবা বাবুল মজুমদারের (ইউপি সদস্য) সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে নম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল মোর্শেদ বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জানতাম না। জানার পর আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে সকল প্রকার আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ’
 

 

রিজভী/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর