নৈসর্গিক সৃষ্টি রাঙামাটির পাহাড়ি ঝর্ণা

নৈসর্গিক সৃষ্টি রাঙামাটির পাহাড়ি ঝর্ণা

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি প্রতিনিধি

পাহাড়ের বুক চিরে আছড়ে পড়ছে প্রবহমান সুরূল জলধারা। হ্রদ-পাহাড়ের সখ্যতায় হৃদয় নিংড়ানো সৌন্দর্য মিলেছে ঝর্ণার গায়ে। গুড়ি গুড়ি জলকনাগুলো আকাশের দিকে উড়ে গিয়ে তৈরি করছে কুয়াশার আভা। স্রোতধারার শীতল কলতানে নিক্কন ধ্বনির উচ্ছ্বাস ছড়িয়েছে চারপাশ।

যেন সবুজ অরণ্যের প্রাণের ছোয়ার পরশ এঁকেছে কেউ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপূর্ব নৈসর্গিক সৃষ্টি রাঙামাটির পাহাড়ি ঝর্ণা।

news24bd.tv

রাঙামাটি জেলায় অসংখ্য ছোট-বড় পাহাড়ি ঝর্ণা থাকলেও নয়নাভিরাম ও বিষ্ময়কর প্রাকৃতিক প্রাচুর্য শুধু রাঙামাটির বরকল উপজেলার শুভলং ইউনিয়নে দৃশ্যমান। যা দেখে হৃদয়-মন জুড়ে সৃষ্টি করে শিহরণ।

জানা গেছে, রাঙামাটির বরকল উপজেলায় ছোট-বড় অন্তত আটটি ঝর্ণা রয়েছে। এর মধ্যে মূল অর্থাৎ গিরিনির্ঝর ঝর্ণাটি সত্যিই আকর্ষণীয়। প্রায় ৩০০ফুট উঁচু থেকে বর্ষায় জলধারার অবিরাম পতনে সৃষ্ট নিক্কন ধ্বনিসমেত অপরূপ দৃশ্য না দেখলে কল্পনায়ও সে ছবি আঁকা অসম্ভব। শ্রাবণের প্রবল বর্ষণে যখন পাহাড় ফিরে পায় তার নব যৌবন। গিরিনির্ঝর ঝর্ণা তখন ফিরে পায় তার আদিরূপ। অপরূপ সৌন্দর্যে ভরা এ ঝর্ণা সেজেছে নবরূপে। ঝর্না সতেজতায় পাহাড়ি ঝিরিগুলো হয়ে উঠে প্রাণচঞ্চল। সাঁই সাঁই করে ধেয়ে চলে ঝিরির জলরাশি মিলেছে হ্রদের প্রাণে। বহু আগেই দেশ-বিদেশে ব্যাপক পরিচিতির বিস্তৃতি ঘটেছে রাঙামাটি শুভলং গিরিনির্ঝর ঝর্ণার। পাহাড়ে ঝর্ণার শীতল ও চঞ্চলা জলধারা সকল পর্যটককেই কাছে টানে সহজে। তাই বর্ষা এলেই ঝর্ণা স্পটে ভিড় জমে দেশি-বিদেশী পর্যটকের।

news24bd.tv

সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অসংখ্য মানুষের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে ঝর্ণা স্পট। কলকল ঝর্ণাধারার পানিতে গা ভিজিয়ে আনন্দে হারিয়ে যাচ্ছে অসংখ্য ভ্রমণ পিপাসু নারী-পুরুষ। ঝর্ণা স্থল এখন যেন আনন্দ উৎসবের ফোয়ারা। চারদিক ঘিরে রেখেছে সবুজ পাহাড়ের সমারোহ। মাঝখানে টলটলে কাপ্তাই হ্রদ। সেই হ্রদের ঘেষে পাহাড়ের কোল বেয়ে নেমে এসেছে অপূর্ব সুন্দরী সুবলং পাহাড়ি ঝর্ণা। তাকালেই দু’চোখ জুড়ে দৃষ্টি কাড়ে। জুড়িয়ে যায় হৃদয়-মন। যা না দেখলে কল্পনাতে আল্পনা আঁকা যাবে না।

রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের নৌযান ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. রমজান আলী জানান, শুস্ক মৌসুমে ঝর্ণার জলধারা শুকিয়ে গেলেও বর্ষায় নিজ রূপবৈচিত্র্যে ফিরে আসে গিরি নির্ঝর। বর্তমানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সেই অপরূপ দৃশ্য বজায় রয়েছে। যা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটক ও স্থানীয়রা ছুটছেন প্রতিদিন। তাই বোর্ট ভাড়া হচ্ছে উল্লেখযোগ্য হারে।

news24bd.tv

রাঙামাটির শুভলং ঝর্ণার টিকেট বিক্রেতা রিন্টু চাকমা জানান, বর্ষা শুরু হলেই পর্যটকের ঢল নামে সুবলং ঝর্ণা স্পটে। এখন সুবলংয়ের ঝর্ণাকে ঘিরে পর্যটকের অনেক ভিড়। অনেকে পরিবার, পরিজন ও আপনজনসহ ঝর্ণা অবলোকনের জন্য আসে। তাই জমে উঠেছে ব্যবসাও।

তবে শুভলং ঝর্ণাটি ঘিরে পর্যটন ব্যবসা গড়ে উঠলেও সংরক্ষণ করার জন্য নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। কিংবা পর্যটকদের জন্য গড়ে তোলা হয়নি বিশেষ ব্যবস্থা।

এব্যাপারে কথা হয় ঢাকা থেকে আগত শুভলং ঝর্ণায় ঘুড়তে যাওয়া পর্যটক মো. শরীফ আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, শুভলং ঝর্ণাটি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি। আর বর্ষাতে ঝর্ণার পানির স্রোত বেড়ে যায়। দেখতে অন্যরকম ভালো লাগে। তবে শুভলং ঝর্ণা স্পটে আর কিছুই  দেখার নাই।

news24bd.tv

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/মুমু/তৌহিদ)
 

সম্পর্কিত খবর