ফ্লোরিডায় বাংলাদেশি আইয়ুবের ঘাতকের আত্মসমর্পণ

নিহত যুবলীগ নেতা আইয়ুব আলী (বায়ে) ও তার খুনি টাইরন ফিল্ডস।

ফ্লোরিডায় বাংলাদেশি আইয়ুবের ঘাতকের আত্মসমর্পণ

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে

ফ্লোরিডার ব্যবসায়ী ও যুবলীগ নেতা আইয়ুব আলীর সন্দেহভাজন ঘাতক টাইরন ফিল্ডস জুনিয়র (১৯) আত্মসমর্পণ করেছে। হত্যার ৭২ ঘণ্টা পর শুক্রবার অপরাহ্নে তিনি আত্মসমর্পণ করেন।

একই সিটির সন্নিকটে ডিয়ারফিল্ডের বাসিন্দা এই কৃষ্ণাঙ্গ যুবক ব্রাউয়ার্ড পুলিশ স্টেশনে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। শুক্রবার বাদ জুমআ দক্ষিণ ফ্লোরিডা এলাকায় একটি মসজিদে জানাযার পর আইয়ুব আলীকে মুসলিম গোরস্তানে দাফন করা হয়।

এরপরই ঘাতকের আত্মসমর্পণের সংবাদ দেয় পুলিশ ডিপার্টমেন্ট।

গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টায় নর্থ লডারডেল সিটিতে আন্ট মোলিজ ফুড স্টোরে কর্মরত অবস্থায় ডাকাতের গুলিতে নিহত হন ৬১ বছর বয়সী ৪ সন্তানের জনক আইয়ুব আলী। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নানোপুর গ্রামের সন্তান আইয়ুব আলী যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন ২২ বছর আগে।

উল্লেখ্য, আইয়ুবের জ্যেষ্ঠ কন্যা ইলামা (১৭) এবং পুত্র রাহাত (১৫) মারজোরি স্টোনম্যান ডগলাস হাই স্কুলে পড়ালেখা করে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এই স্কুলে নির্বিচারে গুলিতে ১৭ ছাত্র/শিক্ষক নিহত এবং আরো ১৭ জন আহত হয়। সেদিন তারা ভাই-বোন টেবিলের নীচে লুকিয়ে আত্মরক্ষা করেছিল। অথচ সেই বুলেটই কেড়ে নিল তাদের পরিবারের উপার্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তি-বাবাকে।

আইয়ুব আলীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু কাজী হায়দার জানান, আমেরিকার স্বপ্ন পূরণের জন্যে কঠোর শ্রম দিয়েছেন আইয়ুব। গত বছরই পার্কল্যান্ডে বাড়ি ক্রয় করে সপরিবারে উঠেছেন।

শোকে কাতর এই পরিবারের অপর বন্ধু মির্জা মোস্তাক জানান, এখন পর্যন্ত সন্তানেরা বিশ্বাস করতে চায় না যে, তাদের বাবা মারা গেছেন। ভাই-বোনেরা শোকে পাথর হয়ে পড়েছে। আইয়ুব আলীর স্ত্রী ফারহানা এবং অপর দুই শিশু সন্তান কেবলই কাঁদছে। আইয়ুব আলীর স্টোরের সিসিটিভির ফুটেজ প্রকাশের পর স্থানীয় পুলিশ ৩ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল ঘাতকের সন্ধানদাতার জন্যে। সর্বসাধারণের কাছে সহযোগিতা চেয়ে ফুটেজ থেকে ছবি সংগ্রহ করে প্রচার করাও হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও মার্কিন গণমাধ্যমগুলোতে প্রচার ও প্রকাশ করা হয় ঘাতকের ছবি।

সার্ভিলেন্স ভিডিওতে দেখা যায়, বন্দুকধারি ঘাতক স্টোরে প্রবেশের পর আলীর কাছে থেকে কিছু নিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে। মুহূর্তের মধ্যেই আবার সে স্টোরে ঢুকে আইয়ুবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে বেড়িয়ে যায়।

রক্তাক্ত আলীকে নিকটস্থ ব্রাওয়ার্ড মেডিকেল সেন্টারে নেওয়ার পর জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, আইয়ুব আলী বেঁচে নেই। গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা তদন্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন।

ফোর্ট লডারডেল পুলিশ জানায়, শুক্রবার বেলা ঠিক সাড়ে ১২টায় টাইরন ফিল্ড আত্মসমর্পণ করে। ২১ জুলাই শনিবার সকালে তাকে ক্রিমিনাল কোর্টে হাজির করা হয়। তাকে জামিনহীন আটকাদেশ দিয়ে ব্রাউয়ার্ড কাউন্টি জেলে পাঠিয়েছেন মাননীয় আদালত। তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র ডাকাতি এবং হত্যার অভিযোগ পেশ করা হয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।  

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)
 

সম্পর্কিত খবর