‌‘অপহরণকারীর সঙ্গে শুতে রাজি হয়েছিলাম’

‌‘অপহরণকারীর সঙ্গে শুতে রাজি হয়েছিলাম’

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

গেল বছর অপহরণের পর ইতালিতে ৬দিন আটকে রাখা হয় ব্রিটিশ মডেল ক্লোয়ি এইলিংকে। কিন্তু তিনি মুক্তি পেয়ে ফিরে এসে যে বর্ণনা দেন, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন অনেকেই।

তবে সম্প্রতি আসল সত্যিটা বেরিয়ে এসেছে। বিবিসি’র সাংবাদিক ভিক্টোরিয়া ডার্বিশায়ারকে এইলিং বর্ণনা করেছেন কিভাবে তিনি মুক্তি পেয়েছেন আর কিভাবে অপহরণকারীদের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘দুই দিন ধরে একটি সুটকেসের মধ্যে শিকলে আটকে থাকার পর অপহরণকারীর সঙ্গে বিছানায় একসঙ্গে শুতে রাজি হই। ’ 

‘যতোই আমরা কথাবার্তা বলতে শুরু করলাম, ততোই আমাদের মধ্যে একটি সম্পর্ক গড়ে উঠতে শুরু করলো। আমি বুঝতে শুরু করলাম, সে (অপহরণকারী) আমাকে পছন্দ করছে। তখন আমি ভাবলাম, আমাকে এর সুযোগ নিতে হবে।

দক্ষিণ লন্ডনের বাসিন্দা ক্লোয়ি এইলিং জানান, তাকে ক্যামেরাবন্দি করা হবে, তাই ফটোশুট করতে লুকাজ হের্বা নামের একজনের আমন্ত্রণে তিনি গেল বছরের জুলাই মাসে ইতালির মিলান শহরে যান।

কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর তাকে মাদক মেশানো ইঞ্জেকশন দেয়া হয়। কাপড়-চোপড় খুলে ফেলা হয় আর হাত বেঁধে গাড়ির বুটে ভরে প্রত্যন্ত একটি খামারবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

এইলিংয়ের ভাষ্য, এটা ছিল অত্যন্ত ভীতিকর। ওই ফার্ম হাউজে যাওয়ার পর হের্বা (অপহরণকারী) তাকে জানায়, ৩ লাখ ইউরো না দেয়া হলে তাকে যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হবে।

‘আমি ভেবেছিলাম, সে যা বলছে তার সবই সত্যি। তাকে এক সেকেন্ডের জন্যও আমার সন্দেহ হয়নি, কারণ সে আমার প্রতিটি প্রশ্নের খুঁটিনাটি উত্তর দিচ্ছিল। ’ 

কিন্তু সেই অপহরণকারী এটাও জানতে চায় যে, সে এইলিংকে চুমু খেতে পারে কিনা এবং তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক সম্পর্ক গড়ে ওঠা সম্ভব কিনা।  

কুড়ি বছর বয়সী তরুণী বলেন, ‘আমি ভাবলাম, এটাই আমার এখান থেকে বের হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ। ’

news24bd.tv

‘যখন আমি তাকে বললাম যে, এটা (সেক্স) হতে পারে, তখন সে খুবই উৎফুল্ল হয়ে যায় এবং সত্যিই ভাবতে শুরু করে যে, এ রকম কিছু হতে যাচ্ছে। সে সব সময় এ বিষয়েই কথা বলতে শুরু করে। তার এই আচরণ দেখে আমি বুঝতে পারি, আমাকে বিষয়টি চালিয়ে যেতে হবে। ’

যখন সেই অপহরণকারী বুঝতে পারে যে, কোনো মুক্তিপণ পাওয়া যাবে না, তখন সে তাকে ছেড়ে দেয় এবং নিজেই গাড়ি চালিয়ে মিলানে ব্রিটিশ কনস্যুলেটে পৌঁছে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যখন তারা (এইলিং ও হের্বা) কনস্যুলেট খোলার অপেক্ষায় একটি ক্যাফেতে বসে ছিলেন, তাদের হাসতে আর মজা করতে দেখা গেছে।  

এ ব্যাপারে এইলিং বলেন, ‘এটা হয়তো অনেকের কাছে অবাক লাগতে পারে। কিন্তু কেন আপনি এমন একজনের সঙ্গে মুখ গোমড়া করে থাকবেন, যার আপনার জন্য আবেগ রয়েছে এবং সেজন্য আপনাকে মুক্তিও দিয়েছে?’

‘সে যাতে আমার প্রেমে পড়ে, সেজন্য আমার সবকিছুই করতে হয়েছে’- যোগ করেন ব্রিটিশ মডেল ক্লোয়ি এইলিং।

উল্লেখ্য, এইলিংকে অপহরণের দায়ে হের্বাকে ১৬ বছর ৯ মাসের কারাদণ্ড দেয় আদালত।  আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে পোল্যান্ডের এই নাগরিক বলেন, এর আগে এইলিংয়ের সঙ্গে তার দেখা হয়েছে। প্রথম দেখাতেই তিনি তার প্রেমে পড়ে যান।  

এইলিংকে বিছানায় পেতে এবং তাকে নিয়ে একটি স্ক্যান্ডাল তৈরি করতে তিনি তাকে অপহরণ করেছিলেন বলে দাবি করেন হের্বা।

সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট

অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর