দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ও তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানসহ বিদ্যুৎ, জ্বালনি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের ৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহসহ উচ্চ পদস্থ এই প্রতিনিধি দলটি কয়লা লোপাটে অভিযুক্ত ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন। এছাড়াও কয়লা নতুনভাবে উত্তোলন শুরুর সময় কমিয়ে আনার জন্য চায়নিজ ঠিকাদার ও শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করেন।
আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তারা খনির সার্বিক বিষয় তুলে ধরেন।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘এতো নিরাপত্তার মধ্যেও কয়লা গায়েব হলে সকল দায়-দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। আমরা তাদের সাথে কথা বলেছি এবং তাদের বক্তব্য শুনেছি। ’
‘অভিযুক্তরা বলছেন, ২০০৫ সাল থেকে স্টোক মেলানোর সময় যে সিস্টেম লস হয় তা দেখানো হয়নি। তবে তাদের মুখের কথা আমরা বিশ্বাস করিনি।
এদিকে, খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব আহমেদ কায়কোয়াস বলেন, ‘দেশে যতগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে, তা দিয়ে বর্তমানে চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা রয়েছে। বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। তবে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় পিক আওয়ারে (সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা) সর্বোচ্চ ৮টি জেলায় ১শ থেকে দেড়শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে। শুধু পিক আওয়ারে কিছুটা লোডশেডিং হতে পারে। সিরাজগঞ্জের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়ে লোডশেডিংয়ের মাত্রা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। ’
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহর ভাষ্য, ‘কয়লা দ্রুত উত্তোলনের জন্য চায়নিজ ঠিকাদারদের অনুরোধ করেছি। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শ্রমিকদের সাথে কথা হয়েছে। তারা ছুটি বাদ দিয়ে কাজে বেশি সময় দিচ্ছেন। আশা করি, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কয়লা উত্তোলন শুরু হবে। ’
উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে ১ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে গেল ২৪ জুলাই পার্বতীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এই মামলায় খনির সদ্য অপসারিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিবউদ্দীন আহম্মদ, কোম্পনি সচিব আবুল কাশেম প্রধানিয়াসহ ১৯ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়। ইতোমধ্যেই মামলার নথি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দিনাজপুর আঞ্চলিক শাখা থেকে কেন্দ্রীয় দুদকের কর্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
পলাশ/অরিন/