অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে ডাবল যাবজ্জীবন

প্রতীকী ছবি

অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে ডাবল যাবজ্জীবন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

কলেজছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় দুটি ধারায় জাহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির পৃথক যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তারের জনাকীর্ণ আদালত এ আদেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার গোছমারা গ্রামের প্রবাসী শহীদুল ইসলামের মেয়ে খোদেজা ইসলাম শিল্পী (২৮) একই উপজেলার তুলসীডাঙা গ্রামে তার মামার বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করত। শিল্পী ঢাকা ইডেন মহাবিদ্যালয়ে ইতিহাসে সম্মান ডিগ্রী প্রথম বর্ষে পড়াশুনা করাকালীন মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কাপড়পোড়া গ্রামের আওরঙ্গজেবের ছেলে জাহিদুল ইসলাম ওরফে শুভর।

শিল্পীকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে নগ্ন ছবি তুলে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে ওই বছরের ২১ জানুয়ারি বিয়ে করতে বাধ্য করে জাহিদুল।

পরে শিল্পির মা ও মামা রবিউল ইসলামসহ কয়েকজন তালাক দিয়ে শিল্পীকে বাড়ি নিয়ে আসে। ওই বছরের ২৫ মার্চ ইডেন কলেজের সামনে থেকে শিল্পীকে অপহরণ করে কুষ্টিয়ার বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে জাহিদুলসহ কয়েকজন। ২২ এপ্রিল শিল্পী সেখান থেকে পালিয়ে তারা মামার বাড়িতে চলে আসে।

অপহরণের পর ধর্ষণের নগ্ন চিত্র ধারণের অপমান সহ্য করতে না পেরে ২৪ এপ্রিল সে একটি চিরকুট লিখে মামার বাড়িতে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় মামা রবিউল ইসলাম অপহরণ ও ধর্ষণের পর শিল্পীকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করানোর অভিযোগে ২৫ এপ্রিল কলারোয়া থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১০ সালের ২৯ আগস্ট জাহিদুলের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার সাক্ষীর জবানবন্দি ও নথি পর্যালোচনা করে জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। একই আইনের ৯(ক) ধারায় ধর্ষণের অভিযোগে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন। তবে আসামি জাহিদুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট জহুরুল হায়দার বাবু ও সহকারি পিপি অ্যাডভোকেট নাদিরা পারভিন।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/জুঁই/তৌহিদ)


 

সম্পর্কিত খবর