আগে যাচাই করুন, তারপর বিছানায় যান: প্রিয়তি

স্বামী মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে তানিয়া। -প্রিয়তির ফেসবুক থেকে

আগে যাচাই করুন, তারপর বিছানায় যান: প্রিয়তি

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

তানিয়া। মিস আর্থ ইন্টারন্যাশনাল, মিস আয়ারল্যান্ডসহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক খেতাবজয়ী মাকসুদা আক্তার প্রিয়তির বোন। সেই তানিয়ার স্বামী জড়িয়েছেন পরনারীতে। একটি নয়, দুটি নয়, অনেকগুলো।

রাতভর পরকীয়া করতে সন্ধ্যারাতেই তানিয়াকে জোর করে খাইয়ে দিতেন ঘুমের ওষুধ। এক পর্যায়ে সব জেনে যায় তানিয়া। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। এরপর থেকে তানিয়ার সামনেই চলে স্বামীর প্রেমলীলা।
এ ঘটনা থানা পর্যন্ত গড়িয়েছে, তবে কোন সুফল আসেনি। উল্টো নির্যাতনের খড়গ নেমে এসেছে তানিয়ার ওপর। এমনকি সেই প্রেমিকা এসেও তানিয়াকে শাসিয়ে গেছেন। এসব ঘটনা জানিয়েছেন তানিয়ার বোন প্রিয়তি। বোনের এই অবস্থা দেখে বিদেশে বসে চুপ থাকতে পারছেন না আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত ব্যক্তিত্ব মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি। আয়ারল্যান্ডে বসে ফেসবুকে সরব হয়েছেন যাতে তার বোন সুবিচার পায়। যাতে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে।

বোনের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও বিষয়টি নিয়ে গত এপ্রিল থেকে ফেসবুকে সরব প্রিয়তি। বেশ কয়েকটি স্ট্যাটাস দেন পুরো ঘটনা জানিয়ে। তবে তাতে বিষয়টি সমাধান হয়নি, উল্টো পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। সম্প্রতি ভগ্নিপতির বান্ধবি তার সঙ্গে তানিয়ার স্বামীর অন্তরঙ্গ ছবি দেখিয়ে তাদের মধ্যে গভীর প্রেম দাবি করে এবং তানিয়াকে ঘর ছাড়তে পরোক্ষভাবে চাপ দেয় বলে অভিযোগ প্রিয়তির। আজ ফেসবুকে সেই সব ছবি দিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন মিস আর্থ ইন্টারন্যাশনাল। একইসঙ্গে মেয়েদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, বৈমানিক বা ভালো চাকরি করছে (তানিয়ার স্বামী শেখ মাহমুদুল হাসান একজন বৈমানিক) বা মিষ্টি কথা বলছে এমন কাউকে দেখলেই লাফিয়ে পড়তে হয় না, আগে যাচাই করুন, তারপর বিছানায় যান। সম্মান আপনারই থাকবে। প্রিয়তির স্ট্যাটাসটি নিউজ টোয়েন্টিফোরের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

news24bd.tv

''ছবিতে যে বৌকে দেখছেন সে আমার বোন আর বোনের সাথে তার স্বামী। আর তার স্বামীর সাথে যে হিজাব পরা মেয়েটিকে দেখছেন, সে তার সর্বশেষ প্রেমিকা।  
তাদের কথপোকথনের এমন এমন স্ক্রিনশট আমি পেয়েছি যে ফেসবুকে দেয়ার সাহস আমার নেই। কোথা থেকে কথা শুরু করবো বুঝতে পারছি না। ঘটনা নয় বছর ধরে চললেও আমি প্রকাশ্যে কথা বলা শুরু করেছি গত এপ্রিল থেকে, বোনের অসম্মতি থাকা সত্ত্বেও, আমি আর পারছিলাম না।

প্রেমিকার সঙ্গে মাহমুদুল হাসান। । - প্রিয়তির ফেসবুক থেকে

অবশেষে এতো বছর, এতো দিন পর আমার বোন শক্ত হল। দেয়ালে শুধু তার পিঠ ঠেকেনি, যখন রাস্তাঘাটে মার খেতে খেতে তার পিঠ ভাঙা শুরু হল তখন নিজের শেষ রক্ষা করার জন্য সে অবশেষে আইনের দ্বারস্থ হল। যেমনটি আগের থেকেই আন্দাজ করেছিলাম আমরা, এই মামলাটি নারী নির্যাতনের হলেও যথেষ্ট গাফলতি হবে, যেহেতু পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমার বোনের স্বামীর পূর্বপরিচিত। এর আগেও এফআইআর করতে গেলে উনারা রাখেননি প্রমাণ ও মেডিকেল রিপোর্ট ছাড়া। এবার অনেক ঘোরানোর পর কেইসটি রাখলেও সাথে সাথেই ফোন করে জানিয়ে সাবধান করে দেয় তার স্বামীকে।

তার স্বামী বিমানবাহিনীর বহিষ্কৃত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শেখ মাহমুদুল হাসান, যার রনি ও সজিব দুইটি ডাক নাম আছে। সে বর্তমানে নভো এয়ারলাইন্সের ট্রেইনি পাইলট হিসাবে কর্মরত। সবাই তাকে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ নামেই চিনে। যার নামে চট্টগ্রামে মাজার ডাকাতির মামলা চলছে।  

আমার বোন এতো স্মার্ট নয় যে খোঁচাখুঁচি করে, কারও পিছনে পিছনে ফলো করে ছবিগুলো কালেক্ট করবে। ওর ভাগ্য ভালো নাকি খারাপ জানি না, মাহমুদের সাথে যেই মেয়ের প্রেম হয়, সেই মেয়েগুলোকে ছেড়ে যখন সে অন্য মেয়ের কাছে চলে যায় তখন ওই মেয়েগুলো এসে আমার বোনের কাছে ছবি ও অন্যান্য প্রমাণ দিয়ে যায়। আমার বোনকে প্রতি রাতে জোর করে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিত, যাতে সে রাতভর মেয়েদের সাথে প্রেম করতে পারে। আর আমার বোন মার খাওয়ার ভয়ে চুপচাপ খেয়ে ফেলতো।

আচ্ছা, সে প্রেম করবে করুক, দশটা মেয়ের সাথে সেক্স করবে করুক , আমার বোনকে ছেড়ে দিক। সম্পত্তির লোভ তার এতোই যে, একটা এতিম মেয়েকে দিনের পর দিন এইভাবে মারধোর করে রাখতে হবে? যেই মেয়ে অন্ধের মতো যাকে ভালোবেসে সংসার করার জন্য পড়ে আছে, যার কুকীর্তি ঢাকার জন্য নিজের বোন- সহ পরিবারের সকল সদস্যদের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন রেখেছিল দীর্ঘ ছয় বছর! হ্যাঁ, দোষ আমার বোনের যে, তাদের একমাত্র সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সন্তানের বাবাকে বার বার মাফ করে দিচ্ছিল। হ্যাঁ, অনেক বড় অন্যায় করে তারা-ই যারা অন্যায়কে দিনের পর দিন প্রশ্রয় দেয়।

সংশ্লিষ্ট খবর: বোনের স্বামীর কাণ্ডে হতবাক প্রিয়তি

এবার তো এই মেয়েই (হিজাব পরা) বাসায় এসে আমার বোনের কাছে তাদের অন্তরঙ্গ ছবি ও অনলাইন সেক্স চ্যাট দেখিয়ে প্রমাণ দিতে চাইলো তাদের মধ্যে গভীর প্রেম, আমার বোন যাতে তার স্বামীকে ছেড়ে চলে যায়, নির্লজ্জের মতো কেন পড়ে আছে স্বামীর সংসারে। এই নিয়ে প্রশ্ন করাতে মাহমুদ আবারো শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং সাথে হুমকিও দেয়, 'থাকতে হলে তানিয়াকে (আমার বোন) এইভাবেই থাকতে হবে'। এরপর থেকে তানিয়ার সামনে বসে বসেই মাহমুদ তাদের প্রেমলীলা চালিয়ে যায়।
মাহমুদ আমার বোনের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে যে ক্ষতি করেছে, তার ক্ষতিপূরণ সে সারা জীবনেও দিতে পারবে না, শুধু আশা করছি তানিয়া যেন সুবিচার পায়।
আর সাথে মেয়েদেরও বলছি, বৈমানিক বা ভালো চাকরি করছে বা মিষ্টি কথা বলছে এমন কাউকে দেখলেই লাফিয়ে পড়তে হয় না, আগে যাচাই করুন, তারপর বিছানায় যান। সম্মান আপনারই থাকবে। ''

স্ট্যাটাসটি মাকসুদা আক্তার প্রিয়তির ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মাহমুদুল হাসান নিউজ টোয়েন্টিফোরকে মুঠোফোনে বলেন, আমাদের সংসারে কোন সমস্যা হয়নি। আমরা একসঙ্গে আছি, সুখে-শান্তিতে আছি। প্রিয়তি শুরু থেকেই আমাদের বিয়ের বিপক্ষে ছিল। তৃতীয় পক্ষ আমাদের সংসারে ভাঙন লাগাতে চাইছে। থানায় কোন মামলাও হয়নি।

তবে তানিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, আমি শুধু বাচ্চাটার দিকে তাকিয়ে এত বছর ধরে সহ্য করে যাচ্ছি। মাহমুদুল এখন ঘরে মেয়ে মানুষ নিয়ে আসে। বাচ্চাটার সামনে আমাকে মারধোর করে। এখন মামলা তুলে নিয়ে সমঝোতা করার জন্য আমাকে বিভিন্ন ভাবে চাপ দিয়ে যাচ্ছে।

সম্পর্কিত খবর