শিক্ষকের যৌন হয়রানিতে অতিষ্ঠ ছাত্রীরা

কার্তিক চন্দ্র কীর্তনিয়া

শিক্ষকের যৌন হয়রানিতে অতিষ্ঠ ছাত্রীরা

রতন মাহমুদ • শরীয়তপুর প্রতিনিধি

শরীয়তপুর সদর উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের কীর্তি নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করতেন কার্তিক চন্দ্র কীর্তনিয়া। কিন্তু মহান পেশায় নিয়োজিত এই মানুষটির বিরুদ্ধে কোমলমতি শিশুদের যৌন হয়রানির অভিযোগসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।

শিক্ষক কার্তিক চন্দ্র দীর্ঘদিন যাবৎ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে আসছে বলে জানায় অধ্যয়নরত একাধিক ছাত্রী। পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী বলে, সুযোগ পেলেই ওই শিক্ষক তার সংবেদনশীল স্থানে হাত দেয়,বাড়ির কাজের লেখা দেখাতে গেলে কৌশলে তার বুকে হাত দেয়।

পঞ্চম শ্রেণির অারও এক ছাত্রী অভিযোগ করে বলে, কার্তিক চন্দ্র প্রায়শই তাকে আড়ালে আবডালে ডাকে,গায়ে হাত দেয়ার চেষ্টা করে,একদিন জোর করে ওই ছাত্রীকে ধরতে গেলে সে দৌঁড়ে এসে কেঁদে ফেলে এবং তার মামার নিকট বিচার দেয়।

এই ঘটনায় ওই এলাকার যুবকরা ওই শিক্ষককে মারধর করে। এলাকাবাসী জানায়, গেল ২ জুলাই একটি মেয়েকে ঘরের ভিতর আটকে রেখে সারারাত যৌন নির্যাতন করে কার্তিক ও তার কথিত ভাগ্নে।

পরে আহত অবস্থায় এলাকাবাসী মেয়েটিকে উদ্ধার করে।

এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী কার্তিককে মারধর করতে বিদ্যালয়ে ছুটে যায়। কিন্তু খবর পেয়ে কার্তিক পালিয়ে যায়। এরপর আর ওই বিদ্যালয়ে সে আসেনি।

এদিকে, গেল ১৭ জুলাই কার্তিক পদোন্নতি পেয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়ে একই উপজেলার ছোটো বিনোদপুর নদীর পাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলে যায়। তার সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে সে সামনা-সামনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায়। মুঠোফোনে কার্তিক দোষ স্বীকার করে  এবং তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে বলে।

এ ব্যাপারে চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মোঃ সিরাজ মিয়া বলেন,তার মেয়েকে ওই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে দিয়েছেন। কিন্তু কার্তিক তার মেয়েকে প্রায়শই যৌন হয়রানি করে।

জানা যায়, ২০১২ সালে কার্তিক প্রথমে শৌলপাড়া ইউনিয়নের গয়ঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথমে চাকরিতে যোগদান করে। সেখানেও তার নামে যৌন কেলেঙ্কারির একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এলাকাবাসীর ভাষ্য, কার্তিক ওই বিদ্যালয়ে থাকাকালীন একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করে। এজন্য ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মামুনসহ এলাকাবাসী কার্তিককে মারধর করে।

বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি হরিনাথ চন্দ্র বলেন,কার্তিকের মত শিক্ষক যদি বিদ্যালয়ে থাকে, তাহলে বিদ্যালয়ের পরিবেশ চরমে পৌঁছাবে।

যৌন নিপীড়ক কার্তিক চন্দ্রকে অবিলম্বে চাকুরিচ্যুতের দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয়সমূহের অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং এলাকাবাসী।

 

রতন/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর