রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রবাসীদেরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রবাসীদেরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রবাসীদেরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে:

শারীরিকভাবে পরিপূর্ণ সুস্থ না হওয়া সত্বেও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে সাংগঠনিক, রাজনৈতিক ও সমসাময়িক বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে কথা বললেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের কল্যাণে সকলকে একযোগে কাজের আহ্বান জানালেন এবং সামনের নির্বাচনে দলীয় প্রাথীদের পক্ষে জোট গড়ার কথা বললেন।

এছাড়া, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিকভাবে যে সাড়া পড়েছে, তার সমর্থনে প্রবাসীদেরও সোচ্চার হওয়ার কথা বললেন। বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে সাক্ষাতের সময় সকলেই শেখ হাসিনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রচনায় তাকে আরও বহু বছর বেঁচে থাকা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনাকে সকলেই ৭১তম জন্মদিনের শুভেচ্ছাও জ্ঞাপন করেন।  

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে ম্যাকলিন সিটিতে টাইসন বুলেভার্ডে অবস্থিত রিটজ কার্লটন হোটেলের সুইটে স্থানীয় সময় রবিবার আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সাক্ষাৎ দেন শেখ হাসিনা।  

গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার তার পিত্তথলীতে সফল অস্ত্রোপচারের পর শেখ হাসিনা মোটামুটি সুস্থ হওয়ায় নেতা-কর্মীদের সাক্ষাৎ দিতে সম্মত হন। এর ফলে সারা আমেরিকা থেকেই দলের সক্রিয় নেতা-কর্মীদের সমাগম ঘটেছিল এই হোটেলের পার্শ্ববর্তী শপিং মল তথা টাইসন বুলেভার্ডের কর্নারে।

 

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপের সমন্বয়ে প্রথমেই ম্যারিল্যান্ড, ওয়াশিংটন ডিসি এবং স্বাগতিক ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্য আওয়ামী লীগের ৩০ জন কথা বলেন শেখ হাসিনার সাথে। দীর্ঘক্ষণ তারা কথা বলার সময় শেখ হাসিনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বের জন্যে অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন। নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন মেট্র ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট সাদেক খান, ভাইস প্রেসিডেন্ট শিব্বির আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, আকতার হোসেন, মুজিবর রহমান এবং নূরল আমিন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী বাকি, সহ-সম্পাদক হারুন অর রশীদ। ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সেলিম, সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস, সাধারণ সম্পাদক মইনুল তাপস এবং জ্যেষ্ঠ নেতা ড. খন্দকার মনসুর। ভার্জিনিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিক পারভেজ, সহ-সভাপতি আবুল হাশেম এবং সেক্রেটারি আমর ইসলাম।  

এরপর শেখ হাসিনার সুইটে প্রবেশ করেন নিউইয়র্ক মহানগর, নিউইয়র্ক স্টেট, বস্টন, কানেকটিকাট, ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ গ্রুপের পক্ষে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, সেক্রেটারি এমদাদ চৌধুরী, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি শাহীন আজমল প্রমুখ।  

এরপর ঢুকেন মহিলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। তারা যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে অধিকসংখ্যক নারীর অন্তর্ভুক্তির দাবি জানালে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নারীতো মহিলা আওয়ামী লীগেই রয়েছেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে তো কয়েকজন মহিলা রয়েছেনও। ’এ গ্রুপে ছিলেন মমতাজ শাহানা, মোর্শেদা জামান, ফারহানা হানিফ, লিপি প্রমুখ।  

ছাত্রলীগের সাথে ঢুকে পড়েছিলেন শ্রমিক লীগ আর যুবলীগের কয়েকজন। তারা যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নয়া কমিটি অবিলম্বে প্রদানের দাবি জানান। এ সময় মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নিবাচিত একজন ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল (যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সাবেক নেতা) শেখ হাসিনাকে অবহিত করেন যে, আড়িয়াল বিলে আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট স্থাপনে এলাকার সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তাই নতুন করে সেই প্রকল্প গ্রহণ করা উচিত।  

শতাধিক নেতা-কমীর সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বলার পর শেখ হাসিনা তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাসায় চলে যান।

২ অক্টোবর সোমবার রাতে লন্ডনের উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটন ডিসি ত্যাগ করবেন শেখ হাসিনা। একথাও দলীয় কর্মীদের জানিয়েছেন সভানেত্রী নিজেই। তিনি সকলের দোয়া চেয়েছেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ যে চালেঞ্জ গ্রহণ করেছে তা সফলতার সাথে বাস্তবায়িত করার জন্যে। নেতা-কর্মীরা যখন শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেছেন সে সময় সুইটে ছিলেন ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা টিমের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

এদিকে, শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাতের জন্যে জড়ো হওয়া কয়েক শত নেতা-কর্মী দিনভর টাইসন বুলেভার্ডে ‘শান্তি সমাবেশ’ করেন। তারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে চলমান উন্নয়নের সমথনে স্লোগান দেন। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনার ভূমিকার প্রশংসা করে অনেকে বক্তব্য রাখেন। একইসাথে এই প্রবাসে অবস্থানরত জামাত-শিবিরের এজেন্টরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। শান্তি সমাবেশে নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, ড. সিদ্দিকুর রহমান, ড. খন্দকার মনসুর, নিজাম চৌধুরী, আব্দুস সামাদ আজাদ, আইরিন পারভিন, আকতার হোসেন, মোহাম্মদ ফারুক, মহিউদ্দিন দেওয়ান, আবুল হাসিব মামুন, আব্দুর রহিম বাদশা, তৈয়বুর রহমান টনি, অ্যাডভোকেট শাহ বখতিয়ার, হাজী এনাম, ফরিদ আলম, মিসবাহ আহমেদ, শাহানারা রহমান, সোলায়মান আলী, হিন্দাল কাদির বাপ্পা, খোরশেদ খন্দকার, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, সেক্রেটারি এমদাদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মাসুদ হোসেন সিরাজি, যুগ্ম সম্পাদক আইয়ুব আলী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নুরুজ্জামান সর্দার, সহ-সভাপতি দরুদ মিয়া রনেল, সেক্রেটারি সুবল দেবনাথ, মহিলা আওয়ামী লীগের মমতাজ শাহনাজ, অ্যাডভোকেট মোর্শেদা জামান, বাংলাদেশ আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরামের ফারহানা হানিফ প্রমুখ।  

সম্পর্কিত খবর