কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূকে নির্যাতন

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ ছবিতা রাণী

কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূকে নির্যাতন

রেজাউল করিম মানিক • লালমনিরহাট প্রতিনিধি

কুপ্রস্তাবে রাজি  না হওয়ায় এক সংখ্যালঘু গৃহবধূ ও তার পরিবারের ২ সদস্যকে পিটিয়ে জখম করেছে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মসুর দৈলজোর গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে।  

নির্যাতিত গৃহবধূর নাম ছবিতা রাণী। তিনি ওই গ্রামের সুধাংশু রায়ের স্ত্রী।

বর্তমানে ছবিতা রাণী, তার শ্বশুর ধরনী কান্ত কর্মন ও শাশুড়ি তারুবালা আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় গত রাতে আদিতমারী থানায় ৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন ওই ভুক্তভোগী সংখ্যালঘু নারী।  

আসামিরা হলেন- একই গ্রামের মৃত আব্দুল সামাদের ছেলে ও এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি মো. চাঁন মিয়া(৪৮), তার স্ত্রী আসমা বেগম(৪০), ভাই মো. বাবুল মিয়া(৩৫), তার স্ত্রী সাহিদা বেগম(২৭) , এনামুল হকের স্ত্রী মোছা. সাহানা বেগম(২৬) ও বড় ভাই মো. সুরুজ মিয়া (৫৮)।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ছবিতা রানী দরিদ্রতার কারণে চাঁন মিয়ার জমিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

এ সুযোগে চাঁন মিয়া তাকে কু প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে রাজি না হলে গেল ৭-৮ মাস যাবৎ ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি তাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করা অব্যাহত রাখে।  

এ বিষয়টি চাঁন মিয়ার বড় ভাই সরুজ মিয়াকে নালিশ করলে তিনি বিচার না করে উল্টো ওই গৃহবধূকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন এবং তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে চাঁন মিয়া ছবিতা রানী ও তার মেয়ে জবা রানী রায়ের(২০) অশ্লীল ছবি প্রিন্ট করে নিজ গ্রামে ছড়িয়ে দেন।  

গেল রোববার (১২ আগস্ট) চাঁন মিয়া গৃহবধূর মেয়েসহ তার অশ্লীল ছবি নিয়ে বাড়িতে এসে বলেন, ‘তুই যদি আমার সাথে সর্ম্পক না করিস, তাহলে তোর এবং তোর মেয়ের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিবো। ’

এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে চাঁন তার লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে গৃহবধূর ওপর হামলা চালায়। তারা ছবিতা রাণীকে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। তার চিৎকারের শ্বশুর ধরনী কান্ত কর্মন ও শাশুড়ি তরুবালা পুত্রবধূকে রক্ষায় এগিয়ে আসলে তাদেরও একই কায়দায় মারধর করা হয়।  

পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে আদিতমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।  

এ ব্যাপারে আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

 

মানিক/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর