পুরুষসঙ্গী ছাড়া বাসা ভাড়া মেলে না তাদের

নাইজেরিয়ার নারীরা।

পুরুষসঙ্গী ছাড়া বাসা ভাড়া মেলে না তাদের

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

পুরুষসঙ্গী ছাড়া বাসা ভাড়া পায় না আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার মেয়েরা। নাইজেরিয়ার অনেক বাড়ির মালিক সন্দেহ করেন একা মেয়ে মানেই যৌনকর্মী। ফলে একা মেয়েদের পক্ষে বাসা ভাড়া পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

অনুফানমিলোলার বয়স ৩০।

পেশাজীবনে ইতোমধ্যে সফলতা পেয়েছেন। সহজেই তিনি একটা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু পাঁচ মাস ধরে বাসা খুঁজে না পেয়ে অবশেষে ঠাঁই হয়েছে এক বান্ধবীর বাসার সোফা।

ভালো একটা চাকরি পেয়ে সে লেগোস থেকে আবেওকুটা তে চলে আসে।

আর্থিকভাবে সচ্ছল হওয়ার পরেও মধ্যবিত্ত বা একটু বিত্তবানদের এলাকাতে একটা অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিতে পারেননি। কারণ একটাই তিনি একা থাকবেন ওই বাসাতে। খবর বিবিসির

অনুফানমিলোলা বলছিলেন, প্রথমে আমাকে শুনতে হয় আমি কি বিবাহিত? আমি বলি না, তারপর প্রশ্ন করা হয় কেন আমি বিয়ে করিনি। আমি বিভ্রান্ত হই। একটা বাসা ভাড়া নেওয়ার সঙ্গে বিয়ের কী সম্পর্ক?

আমরা ভদ্র লোককে বাসা ভাড়া দিতে চাই। অনুফানমিলোলা বলছিলেন, এই বৈষম্য ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে।

তিনি বলেন, ৯৯ শতাংশ বাড়ির মালিক যাদের সঙ্গে আমি সাক্ষাত করেছি, তারা কেউ আমাকে বাসা ভাড়া দেয়নি, কারণ আমি একা নারী। অনেক মালিক এবং এজেন্ট আমাকে বলেছে তুমি কি তোমার পুরুষ-সঙ্গী বা স্বামীকে আনতে পারবে? এই ধরণের অ্যাপার্টমেন্টে আমরাই চাই না কোনো পুরুষ আসুক, আমরা চাই একজন ভদ্র মানুষকে ভাড়া দিই।

পুরুষদের বেশি অর্থ আছে
সিলভিয়া অয়িনডা রিটেইল সেক্টরের একজন প্রডাক্ট ম্যানেজার। ৩১ বছরে তার বাগদান হয়। কিন্তু প্রতি বাড়িওয়ালা তাকে বলেন, আগে তার হবু স্বামীকে আনতে হবে তারপর তারা অ্যপার্টমেন্ট দেখাবে।

নাইজেরিয়াতে একটা কথা প্রচলিত আছে 'স্মল গার্ল, বিগ গড'।

এই কথার অর্থ অনেকটা এমন, যারা সিঙ্গেল মেয়ে তাদের অর্থের যোগানদাতা থাকে। তারা বেশির ভাগই হয় বৃদ্ধ লোক।

মিজ অয়িনডা বলছিলেন, বাড়ির মালিকরা মনে করেন বেশির ভাগ তরুণী যারা একা থাকে তাকে ওই রকম। কোলম্যান ওয়াফোর একটি বাড়ির মালিক এবং বেশ কিছু সম্পত্তির মালিক।

তিনি বলছিলেন, তিনি এক্ষেত্রে বৈষম্য করেন না।

কিন্তু তার বেশির ভাগ ভাড়াটিয়া এবং ক্রেতাই পুরুষ। কারণ তাদের তুলনামূলক বেশি অর্থ আছে।

তিনি বলেন, বেশির ভাগ একা মেয়েরা হয় তাদের বাবা-মা অথবা পুরুষসঙ্গী ওপর নির্ভরশীল। আপনি নিশ্চিত করে বলতে পারবেন না এক বছর পর কী হবে। প্রতিটা বাড়িওয়ালা চায় কোনো ঝামেলা ছাড়া মাসের ভাড়া পাবে আর সময়মত কন্ট্রাক্ট নবায়ন করবে।

তিনি বলছিলেন, বেশির ভাগ একলা মেয়েরা কোনো কাজ করে না।

এখানে মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের জন্য কাজের সুযোগ বেশি। এটাই এখানকার পরিস্থিতি।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর