কাতারকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ফুটবল দল।

কাতারকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

শক্তিশালী কাতারকে ১-০ গোলে হারিয়ে এশিয়াড ফুটবলের নক আউট পর্বে উঠে গেল বাংলাদেশ। খেলার একেবারে শেষ সময়ে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার গোলে নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের ফুটবলের নতুন ইতিহাস।

২০২২ সালের বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ কাতার। তাদের র‌্যাংকিং ৯৮তম, যেখানে বাংলাদেশ ১৯৪তম স্থানে।

সেই কাতারকে এশিয়ান গেমস ফুটবলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। গড়েছে নতুন ইতিহাস। এশিয়ান গেমসের ইতিহাসে এই প্রথম বাংলাদেশ গ্রুপ পর্ব টপকে উঠে গেলো শেষ ষোলোয়।

সবাই যখন ধরেই নিয়েছিলেন ড্রয়েই শেষ হচ্ছে দুই দলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, ঠিক তখনই আসে সেই শুভক্ষণ।

নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে খেলা গড়িয়েছে তখন ইনজুরি সময়ে। তখনই পরিকল্পিত এক আক্রমণ থেকে অধিনায়কের কাছে নিখুঁত পাস দেন মাসুক মিয়া জনি। অধিনায়ক বলটি ধরেই ঢুকে পড়েন বক্সে। গড়ানো শটে প্রথম পোস্ট দিয়ে বল পাঠান কাতারের জালে।

আজকের ম্যাচের আগে গ্রুপ ‘বি’র সমীকরণটা ছিল দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে হলে কাতারকে জিততেই হবে। এদিকে বাংলাদেশ হারলেও শেষ। তবে ড্র করলেও সেরা তৃতীয় স্থান অধিকারী হিসেবে পরের রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। তবে থাইল্যান্ড যদি উজবেকিস্তানকে হারিয়ে দিত, তাহলে উজবেকিস্তানের সঙ্গে পরের রাউন্ডে সঙ্গী হতো তারাই। উজবেকিস্তান থাইল্যান্ডকে হারিয়ে দেওয়ায় কাতার ও বাংলাদেশের পথটা পরিষ্কার হয়ে যায়। তবে কাতার চাপ তৈরি করে খেলেও বাংলাদেশের রক্ষণ সেনাদের দৃঢ়তায় সুবিধা করতে পারেনি। তবে প্রথমার্ধের ১৭ মিনিটের মধ্যে এই ম্যাচে বাংলাদেশ যদি ২-০ গোলে এগিয়ে যেত তাহলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকত না। আগের ম্যাচে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে গোলদাতা মাহবুবুর রহমান সুফিল ওই সুযোগ দুটি হেলায় হারান। প্রথমবার সুফিল নিজেই ডান প্রান্ত দিয়ে কাতারি রক্ষণভাগকে ফাঁকি দিয়ে বক্সের মধ্যে ঢুঁকে যে শটটি নেন সেটি দ্বিতীয় বারের পাশ দিয়ে চলে যায়। পরে কাতারের রক্ষণের ভুল বোঝাবুঝিতে ওয়ান টু ওয়ান পরিস্থিতিতে বল পেলেও সেটি গোলরক্ষকের শরীরে মেরে নষ্ট করেন ঢাকার ফুটবলের উদীয়মান এই তরুণ।

দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ আক্রমণের ধারও বাড়ায়। তবে সবগুলো আক্রমণই ছিল প্রতি আক্রমণ থেকে। এ সময় কাতার গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠায় ফাঁক-ফোকর তৈরি হচ্ছিল প্রায়ই। কিন্তু সে সুযোগ থেকে পরিকল্পনামতো মাথা খাঁটিয়ে গোলের সুযোগ তৈরিতে দুর্বলতা ছিল বাংলাদেশের আক্রমণভাগের। এই অর্ধে সুফিল, সাদউদ্দিনরা কিছুটা নিষ্প্রভ হয়ে পড়লে তাদের তুলে নেন কোচ জেমি ডে। সুফিলের বদলে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও সাদের বদলে মতিন মিয়া মাঠে নামলে কিছুটা আক্রমণের ধার বাড়ে। তবে আবদুল্লাহ একটি সুযোগ নষ্ট করেন বক্সের মধ্যে মাথা ঠান্ডা রাখতে না পারার কারণে।

খেলা শেষ হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে বাংলাদেশ জয় সূচক গোলটি পেয়ে যায়। কিন্তু নিজেদের বেশ খানিকটা ভাগ্যবান ভাবতে পারে বাংলাদেশ দল। কাতারের একটি আক্রমণ প্রতিহত করতে গিয়ে বল বক্সের মধ্যে সুশান্ত ত্রিপুরার হাতে লাগলেও রেফারির দৃষ্টিতে সেটি পেনাল্টি দেওয়ার মতো ‘অপরাধ’ ছিল না। পরের আক্রমণ থেকেই ইতিহাস রচিত হয় বাংলাদেশের। প্রতি আক্রমণ থেকে বল পেয়ে জামাল ভূঁইয়া প্রায় একক প্রচেষ্টায় কাতারের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের বোকা বানিয়ে বল জালে ঠেলে দেন।

নক আউট পর্বে আগামী ২৪ আগস্ট ইরানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর