সৌদিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের দুই কর্মচারী বরখাস্ত

প্রতীকী ছবি

গৃহকর্মী নির্যাতন

সৌদিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের দুই কর্মচারী বরখাস্ত

সৌদি আরব প্রতিনিধি

সৌদি ফেরত গৃহকর্মী রুনা লায়লার ওপর নির্যাতনের সংবাদের প্রেক্ষিতে দুজন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সৌদি আরবের রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিগত কয়েকদিনের বিভিন্ন জাতীয় ও অনলাইন পত্রিকায় এ সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদ দূতাবাস অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিয়ে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
 
ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে ইতোমধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তদন্তে অভিযোগ প্রমানিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে চাকুরি থেকে চূড়ান্ত অপসারণসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলেন, সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং যে কোন কর্মচারীর অনভিপ্রেত কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি প্রদর্শন করবে দূতাবাস।

বাংলাদেশি গৃহকর্মীদের জন্য গঠিত দূতাবাসের সেফ হাউজ সিসি টিভি দ্বারা সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে রাখা হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।  

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সৌদি আরব থেকে ফেরত আসা গৃহকর্মী রুনা লায়লা।

তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। চিরকুটে বাংলাদেশ দূতাবাস ও সৌদি আরব দূতাবাসকে সেফ হাউজে থাকা গৃহকর্মীদের বাঁচানোর অনুরোধ করা হয়েছে। চিরকুটে উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে গৃহকর্মীদের দিয়ে অনেক খারাপ কাজ করানো হয়। চিরকুটটির শেষদিকে মরতে বাধ্য করল লেখার পর চারজন ব্যাক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস। এর প্রেক্ষিতে দু'জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

জানা যায়, রুনা লায়লার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বিরল থানা এলাকায়। তিনি ২০১৬ সালের মার্চে সৌদি আরবে যান। একমাস আগে সৌদি আরব থেকে তিনি দেশে ফিরেছেন। গত সপ্তাহে তার লাগেজ নেয়ার জন্য বিমানবন্দরে যান। পরে টয়লেটে গিয়ে কিছু পান করেন। বিষয়টি টের পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পুলিশকে অবহিত করে। পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

রুনা লায়লার কাছ থেকে জানা যায়, সৌদি আরবে একটি কোম্পানীতে কিছুদিন কাজ করেন তিনি। কিন্তু সেখান থেকে ঠিকমতো বেতন দেওয়া হয়নি। পরে লোকমান নামের একজনের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। লোকমান তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সাত মাস ধরে নির্যাতন করেন। দেশে এসে কাজীর মাধ্যমে বিয়ে করবেন বলে জানালেও তা করেননি। ওই নারী আরো বলেন, সৌদিতে অনেক বাংলাদেশি নারী শ্রমিক আছেন। তাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চলছে।

সম্পর্কিত খবর