আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, নিহত ১

বসতবাড়িতে তাণ্ডবলীলা, ইনসেটে নিহত আওয়ামী লীগ কর্মী ছাখাওয়াত মাতুব্বর

আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, নিহত ১

বসতবাড়ি ভাঙচুর-লুটপাট
খায়রুজ্জামান সোহাগ ✦ ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের সালথার আটঘর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী ছাখাওয়াত মাতুব্বর ওরফে ছাকা মুহুরীকে (৫৫)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০জন।  

দফায় দফায় এ সংঘর্ষে হামলা-পাল্টা হামলায় ১৫টি বসত বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেেআনতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আটঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান সোহাগ ও গট্রি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল মতিন বাদশার সাথে গট্রি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওদুদ মাতুব্বরের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।  

এরই জের ধরে গতকাল সোহাগ চেয়ারম্যানের সমর্থক বিকুল মোল্যার ওপর আক্রমণ করে ওদুদ মাতুব্বরের লোকজন।

এ ঘটনার পর সোহাগ চেয়ারম্যানের সমর্থকেরা পাল্টা হামলা চালায়। এ নিয়ে গোয়ালপাড়া গ্রামে দুই পক্ষের মাঝে কয়েকদফা সংঘর্ষ চলে। এতে উভয় পক্ষের ৫টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। লুটপাট করা হয় ঘরের মালামাল।  

পরবর্তীতে ফজলুল মতিন বাদশার কয়েকশ সমর্থক দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আটঘরের খোয়াড়  গ্রামের ওদুদ মাতুব্বরের সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা ছাখাওয়াত মাতুব্বরসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে।  

পরে হাসপাতালে নেবার পথে মারা যান ছাখাওয়াত। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন ৫জন। এদের মধ্যে হাবিব ফকিরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে আজ (৪ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার) সকালে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।  

এখানেই সংঘর্ষের শেষ নয়। ছাখাওয়াত মাতুব্বর নিহত হবার পর ফজলুল মতিন বাদশা এবং ওদুদ মাতুব্বরের সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন। এ সময় কমপক্ষে ১০টি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।  

সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে ফরিদপুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের উত্তেজনার সৃষ্টি হলে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আজ দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ফরিপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা।  

আওয়ামী লীগ নেতা ওদুদ মাতুব্বর জানান, পরিকল্পিতভাবে সোহাগ চেয়ারম্যান ও বাদশা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।

আটঘর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সোহাগ জানান, ওদুদ মাতুব্বরের লোকজন আমার এক কর্মীকে মারধর করে। কিন্তু পরবর্তীতে গট্রির সাবেক চেয়ারম্যান বাদশার লোকদের সাথে ওদুদ মাতুব্বরের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। এতে আমার কোন কর্মী জড়িত নয়।  

ফজলুল মতিন বাদশা জানান, ওদুদ মাতুব্বরের লোকজন হামলা চালালে আমার সমর্থকেরা প্রতিরোধ করে।  

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা বলেন, হামলা ও ভাঙচুরকারীরা যতই শক্তিশালী হোকনা কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় নিরীহ কাউকে হয়রানি করা হবেনা। হত্যার বিষয়ে একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।  
 

 

খায়রুজ্জামান▐ অরিন▐ NEWS24

সম্পর্কিত খবর