মশা তাড়ানোর সহজ উপায়

মশা।

মশা তাড়ানোর সহজ উপায়

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মশার উপদ্রবও বাড়তে থাকে। মশার কামড় থেকে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে। তাই মশার ব্যাপারে সব সময় সতর্ক থাকতে হয়।

আজ আপনাদের জানাব মশার উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়ার বেশ কিছু উপায়।

একনজরে জেনে নিন মশা তাড়ানোর কার্যকরি উপায়গুলো-

১। লেবু ও লবঙ্গের ব্যবহার: একটি লেবু দুই টুকরো করে কেটে নিন। কাটা লেবুর ভেতরের অংশে বেশ কয়েকটা লবঙ্গ গেঁথে দিন। লেবুর মধ্যে লবঙ্গের পুরোটা গেঁথে শুধু মাথার অংশ বাইরে রেখে দিন।

এরপর লেবুর টুকরোগুলো একটি প্লেটে রেখে ঘরের কোণায় রেখে দিন। ব্যস, এতেই মশার উপদ্রব থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এই পদ্ধতিতে মশা ঘরের ধারেকাছে ঘেঁসবে না।

২। কর্পূরের ব্যবহার: কর্পূরের গন্ধ মশা সহ্য করতে পারে না। কর্পূরের টুকরো একটি ছোটো পাত্রে রেখে সেটি পানি দিয়ে পূর্ণ করুন। এরপর এটি ঘরের কোণে রেখে দিন। অল্প সময়ের মধ্যেই ঘর থেকে মশা পালিয়ে যাবে। দুদিন পর পাত্রের পানি পরিবর্তন করুন। পাত্রে রাখা আগের পানি ফেলে দেবেন না। এই পানি ঘর মোছার কাজে ব্যবহার করলে ঘরে পিঁপড়ের উপদ্রব থেকেও মুক্তি পাবেন।

৩। নিমের তেলের ব্যবহার: নিমের মশা তাড়ানোর গুণ রয়েছে। সমপরিমাণ নিমের তেল ও নারকেল তেল মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন। দেখবেন মশা আপনার ধারে কাছে ভিড়বে না এবং সেই সঙ্গে ত্বকের অ্যালার্জি, ইনফেকশন জনিত নানা সমস্যাও দূর হবে।

৪। পুদিনার ব্যবহার: ছোট গ্লাসে পানি নিয়ে তাতে ৫ থেকে ৬ গাছি পুদিনা রেখে খাবার টেবিলে রাখুন। তিন দিন অন্তর পানি বদলে দেবেন। জার্নাল অফ বায়োরিসোর্স টেকনোলোজির গবেষণা মতে তুলসির মতো পুদিনা পাতারও রয়েছে মশা দূরে রাখার ক্ষমতা। এছাড়াও পুদিনার গন্ধে অনেক পোকামাকড়ও পালিয়ে যায়।

৫। টবে লেমন গ্রাস লাগান: থাই লেমন গ্রাসে আছে ‘সাইট্রোনেলা অয়েল’ যা থেকে বের হয় একধরনের শক্তিশালী সুগন্ধ। এই সুগন্ধ কিন্তু মশাদের যম। মশারা এর কাছেও ঘেঁষে না। ফলে আপনার আশেপাশে লেমন গ্রাসের ঝাঁড় থাকলে মশারা আপনাকে খুঁজে পাবে না।

৬। ধুনোর সঙ্গে নিশিন্দা ও নিমপাতার গুঁড়ো: প্রতিদিন নিশিন্দা ও নিমপাতার গুঁড়ো ধুনোর সঙ্গে ব্যবহার করলে মশার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

৭। হলুদ বৈদ্যুতিক আলো: ঘরের মশার উৎপাত কমাতে বৈদ্যুতিক আলোটি হলুদ সেলোফেনে জড়িয়ে দিন। দেখবেন মশা কমে গেছে, কারণ মশা হলুদ আলো থেকে দূরে থাকতে চায়। এছাড়া ঘরে এবং ঘরের বাইরে লাইট বাল্বগুলো পরিবর্তন করুন। মশারা সাধারণত সব লাইটের প্রতি আকৃষ্ট হয় না।

৮। চা-পাতা পোড়ান ব্যবহৃত: চা-পাতা ফেলে না দিয়ে রোদে শুকিয়ে নিন। এইভাবে ওই চা পাতা ধুনোর বদলে ব্যবহার করুন। শুকনো চা পাতা পোড়ানো ধোঁয়ায় ঘরের সমস্ত মশা, মাছি পালিয়ে যাবে।

৯। নিমপাতা পোড়ান: আগুনে নিমপাতা পোড়ালে যে ধোঁয়া হবে তা মশা তাড়ানোর জন্য খুবই কার্যকর।

১০। ক্যাটনিপ অয়েল: ক্যাটনিপ অয়েলের nepetalactone নামক পদার্থ মশা তাড়াতে DEET (Diethyle-Meta-toluamide) থেকে প্রায় ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী।

১১। বারান্দায় চামচিকার বাক্স রাখুন: ভয় পাওয়ার কিছু নেই। চামচিকারারা ঘণ্টায় কয়েকশত পোকা-মাকড় খায়। তাই মশা তাড়াতে ব্যাট হাউস বানাতে পারেন। বারান্দায় কিংবা ভেন্টিলেটরের কাছে রাখুন আর চামচিকাদের কাজ করতে দিন।

১২। ফ্যান চালু রাখুন মশারা খুবই হালকা। অন্যদিকে একটি ফ্যানের স্পীড ঘণ্টায় প্রায় দুই মাইল। মশার উড়বার গতিবেগের চাইতে ফ্যানের ঘুরবার গতি অনেক বেশি হওয়াতে সহজেই মশাদের ব্লেডের কাছে টেনে নেয়।

১৩। কালো, নীল ও লাল কাপড়: এড়িয়ে চলুন মশাদের পছন্দের রঙের পোষাক এড়িয়ে চলুন। কি অবাক হচ্ছেন! হ্যাঁ কিছু কিছু প্রজাতির মশা কয়েকটি গাঢ় রঙের প্রতি আকৃষ্ট হয় যেমন কালো, নীল আর লাল। আর তারা গরমের প্রতিও সংবেদনশীল।

১৪। সুগন্ধি ব্যবহার: করুন মশারা সুগন্ধি থেকে দূরে থাকে। সুতরাং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে শরীরে আতর, সুগন্ধি, কিংবা লোসন মেখে শুতে পারেন।

১৫। রসুনের স্প্রে করুন: রসুনের স্প্রে মশা তাড়াতে খুবই কার্যকারী। ৫ ভাগ পানিতে ১ ভাগ রসুনের রস মেশান। মিশ্রণটি একটি বোতলে ভরে শরীরের যেসব স্থানে মশারা কামড়াতে পারে সেসব স্থানে স্প্রে করুন। এতে যে কোন ধরণের রক্ত চোষারা আপনার ধারে কাছেও আসবে না।

১৬। জমানো জল: থেকে দূরে থাকুন খেয়াল রাখুন যেন কোথাও জল জমে না থাকে। ঘরের আনাচে-কানাচে কিংবা উঠোনে জল জমে থাকলে সেখানে মশারা বংশবিস্তার করতে পারে। তাই যেখানেই জল জমুক না কেন, তা সরিয়ে ফেলুন। মশার বংশবিস্তার রোধ করুন।

১৭। নারিকেলের আঁশ পোড়ান: নারিকেলের গায়ে থাকা আঁশের সাহায্য দূর করতে পারেন মশা। নারিকেলের আঁশ শুকিয়ে টুকরা করুন। একটি কাঠের পাত্রে রেখে জ্বলন্ত ম্যাচের কাঠি ধরুন। ৫-৬ মিনিটের মধ্যেই মশা দূর হবে।

১৮. কেরোসিন তেল স্প্রে: কেরোসিন তেল স্প্রে বোতলে নিন। কয়েক টুকরা কর্পূর মেশান। ভালো করে ঝাঁকিয়ে স্প্রে করুন রুমে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর