কুখ্যাত গুণ্ডা এখন গরিবের বন্ধু!

নুডলস রান্না করছেন ইয়েন ওয়েই-শান

কুখ্যাত গুণ্ডা এখন গরিবের বন্ধু!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

এক সময় কুখ্যাত গ্যাংস্টার (গুণ্ডা দলের সদস্য) ছিলেন। আর এখন দিন কাটান গরিব মানুষজনের জন্য নুডলস বিলি করে।

সেই ছোট বেলাতেই অপরাধ জগতের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাইওয়ানের নিউ তাইপে শহরের ইয়েন ওয়েই-শানের। ১৫ বছর বয়সে একটি দলের সঙ্গে তীব্র গোলমালে জড়িয়ে পড়েন ইয়েন।

হাতাহাতিও হয় তাদের সঙ্গে। আর সেখানেই মৃত্যু হয় একজনের।

সেই কিশোর বয়সেই অনিচ্ছাকৃত খুনের দায়ে জেল হয় ইয়েনের। সাড়ে ৪ বছর কারাবন্দি থাকতে হয়।

কিন্তু জেল থেকে বের হওয়ার পর এক্কেবারে অপরাধ জগতেরই লোক বনে যান। গড়ে ওঠে নিজের বাহিনী।

দীর্ঘ দিন চলছিল এভাবেই। টার্গেট হয়ে পড়েন পুলিশের। বছর আটেক আগে ধরা পড়ে যান ইয়েন। তবে আদালত থেকে এটাই শেষ সুযোগ বলে ক্ষমা করে দেয়া হয় ইয়েনকে।

এর পরেই যেন দিনে দিনে অন্য স্বাধীনতার স্বাদ পেতে শুরু করেন ইয়েন। তার কথায়, ওই সুযোগটাই যেন আমার ঘুম ভাঙিয়ে দিয়েছিল। তখন থেকেই আমার পরিবার আর স্বাধীনতাকে আগলে রাখি আমি।

নিউ তাইপে শহরে একটি নুডলসের দোকান চালান ইয়েনের মা। নুডলস ছাড়াও সেই স্টলে পর্ক, চিংড়ি সঙ্গে বাঁধাকপিও মেলে। আর এই সব কিছুই সাধারণ খরিদদারদের জন্য মেলে ন্যায্য দামে। কিন্তু যাদের সামর্থ্য নেই,তাদের জন্য বিনামূল্যেই এই সব খাবারের বন্দোবস্ত করে থাকেন ইয়েন এবং তার মা।  

ইয়েন বলেন, ‘মাসে ৬০০ থেকে ৭০০ বাটি নুডলস ফ্রি তেই গরিব মানুষজনকে দেয়া হয়। ’

৪ বছর আগে মায়ের সঙ্গে এই কাজে হাত দিয়েছিলেন ইয়েন। আর আজ পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার বাটি নুডলস বিনামূল্যেই মানুষকে বিলি করেছেন বলে জানান এক সময়ের এই কুখ্যাত গুণ্ডা।

ইয়েনের মতে, মূলত বৃদ্ধ মানুষজন আর বেকার যুবকেরাই বিনামূল্যে খাবারের জন্য আবেদন করে থাকেন।

তবে শুধু নুডলসের দোকানেই দিন কাটে না ইয়েনের। জেলে গিয়ে বন্দিদের সঙ্গে রীতিমতো আলাপচারিতাও জমাতে যান তিনি।

৬২ বছরের আর এক সাবেক গ্যাংস্টার ইয়েনের দোকানের প্রতিদিনের কাস্টমার। পরিবারের সঙ্গেও সমস্ত যোগাযোগ ছিন্ন করে ফেলেছেন সেই ব্যক্তি।  

ইয়েনের ভাষ্য, ‘আমি অনেক অপরাধীকেই দেখেছি, নিজের জীবনটা এইভাবে শেষ করে ফেলতে। মাঝেমধ্যে আমারও ভেবে কষ্ট হয় যে, আমিও জীবনের কতটা সময় এই সব করেই নষ্ট করেছি। ’

‘অপরাধ জগতের সঙ্গে যুক্ত থাকাকালীন সময়ে মনে হতো আমি যেন একটা দড়ির ওপর দিয়ে হাঁটাচলা করছি। কারণ যে কোনো মুহূর্তেই আমার জন্য একজন শত্রু অপেক্ষা করে রয়েছে। আর এখন এমন মানুষদের সঙ্গে দেখা হয়, যারা আমাকে দেখে সত্যিই খুব খুশি। ’


সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, আনন্দবাজার পত্রিকা 

অরিন▐ NEWS24

সম্পর্কিত খবর