কলেজ ছাত্রকে গাছে বেঁধে পেটালেন এএসপি!

ছাত্রকে গাছে বেঁধে পেটানোর দৃশ্য [ফাইল ছবি]

কলেজ ছাত্রকে গাছে বেঁধে পেটালেন এএসপি!

সুমন বর্মণ • নরসিংদী

নরসিংদীর মনোহরদীতে মোবাইল ফোন চুরির অপবাদ দিয়ে রনি মৃধা (১৮) নামে এক কলেজ ছাত্রকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক সহকারী সুপারিটেনডেন্ট পুলিশের (এএসপির) বিরুদ্ধে। ওই সময় নির্যাতিত ছাত্রকে বাঁচাতে গেলে তার মাকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।  

ওই ঘটনায় এএসপি খলিলুর রহমানকে প্রধান আসামি করে মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেছে নির্যাতিত ছাত্রের পরিবার।

নির্যাতিত রনি মৃধা উপজেলার একদুয়ারীয়া গ্রামের ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন মৃধার ছেলে।

সে শিবপুর মডেল কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

অভিযুক্ত এএসপি খলিলুর রহমান ওই ইউনিয়নের মৃত সুলতান উদ্দিনের ছেলে। তিনি এস.বি ঢাকা (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) সহকারী পুলিশ সুপারের দায়িত্বে রয়েছেন।  

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- এএসপি খলিলুর রহমানের ৩ ভাই ওলি মিয়া, আব্দুল মালেক, আসাদুল্লাহ, ভাতিজা টিপু ও রফিজউদ্দিনের ছেলে মোশারফ মিয়া।

মামলা এজাহারে বাদী জসিম উদ্দিন অভিযোগ করেন, গেল ২৯ আগস্ট অভিযুক্ত খলিলুর রহমান ও তার ভাইয়েরা মিলে কলেজ ছাত্র রনি মৃধাকে (১৮) মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে ধরে নিয়ে যায়। পরে বাড়ির পাশে একটি গাছের সাথে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করে।  

ঘটনার পর ছেলেকে নির্যাতনের কারণ জানতে জসিম উদ্দিনের স্ত্রী শিউলি বেগম এএসপি খলিলুরের বাড়িতে গেলে তারা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে তারা ছেলের সামনে শিউলি বেগমকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এ সময় অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েকজন তাদের মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন।

ঘটনার পর ভুক্তভোগী পরিবার মনোহরদী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তা প্রত্যাখান করে নির্যাতনের শিকার কলেজ ছাত্রের মা শিউলি বেগম।  

পরে তিনি ৪ সেপ্টেম্বর আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এএসপি খলিলুর রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এর আগের দিন তার স্বামী ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে একই আসামিদের বিরুদ্ধে আরেকটি সিআর মামলা দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, নির্যাতনের বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করতে আসেনি। তবে এএসপি সাহেব মোবাইল ফোনে জানান যে, ঘটনার দিন তিনি বাড়ির বাইরে বের হলে এলাকার কিছু ছেলে ওনার মোবাইল ফোন ছিনতাই করার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় ইউপি সদস্যের ছেলে জড়িত ছিল বলে জানায়। পরে বিষয়টি মীমাংসার জন্য ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেন।

জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে সহকারী পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান বলেন, ‘রনি মৃধা আমার ভাতিজিকে স্কুল থেকে ফেরার পথে মোটর সাইকেলে তুলে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। সেই ঘটনার প্রতিবাদ করায় সে বাড়িতে এসে আমাদেরকে হুমকি দিয়ে গেছে। এরই পর আমাদের বাড়িতে দুর্ঘর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। ’

‘এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে আমার ওপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে গেলে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমঝোতা হয়। এখন উল্টো তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনছে। ’



সুমন▐ অরিন▐ NEWS24