হাইওয়ে পুলিশ-গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ৪

আহত পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে

হাইওয়ে পুলিশ-গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ৪

সুমন বর্মণ • নরসিংদী

নরসিংদীর শিবপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ট্রলি ওঠাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর সাথে হাইওয়ে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ২ পুলিশ সদস্যসহ ৪ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্য এক কলেজ ছাত্র ও গ্রামবাসী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় সবাইকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছ।

আজ (১৪ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার) সকাল ১১টার দিকে শিবপুর উপজেলার চৈতন্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবল মাহাবুবুর ও কনস্টেবল বিল্লাল হোসেন। গুলিবিদ্ধ ২ পথচারী হলেন সবুজ পাহাড় কলেজের শিক্ষার্থী অহিদ্দুল্লাহ (১৯) ও মোহন মিয়া (৪০)।  

পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইট বোঝাই একটি ট্রলি মহাসড়ক দিয়ে যাচ্ছিল।

টহলরত হাইওয়ে পুলিশ ট্রলিটিকে আটক করে ৭ হাজার টাকা আদায় করেন। এরই মধ্যে ট্রলিটি সাইড করতে গিয়ে রাস্তার পাশে গর্তে পড়ে যায়। এ সময় পুলিশ গাড়িটিকে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নিতে চালককে তাড়া দেয়।  

news24bd.tv

কিন্তু কোনভাবেই ট্রলি গাড়িটিকে ওঠাতে পারছিলনা চালক। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাইওয়ে পুলিশ সদস্যরা ট্রলির চালককে মারপিট শুরু করে। এ সময় মহাসড়কের পাশে বসা ফলের দোকানদারা এগিয়ে এসে এর প্রতিবাদ করে।

এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা ফল দোকানির ওপর লাঠিচাজ করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে ২ পুলিশ সদস্য আহত হন।  

এ সময় পুলিশের ছোড়া গুলিতে কলেজ ছাত্রসহ ২ গ্রামবাসী গুলিবিদ্ধ হন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।  

তবে গ্রামবাসীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, মহাসড়কের পাশে বসা বিভিন্ন ফলের দোকান প্রতি দৈনিক ৫শ টাকা করে চাঁদা দাবি করে হাইওয়ে পুলিশ। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পুলিশ তাদের ওপর লার্ঠিচাজ করে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইসমাইল মিয়া বলেন, ট্রলিটি আটকের পর পুলিশ চালকের কাছ থেকে জরিমানার কথা বলে ৭ হাজার টাকা আদায় করেন। কিন্তু গাড়িটি গর্তে পড়ে যাওয়ায় চালত সেটিকে উঠাতে পারছিলনা। তাই পুলিশ সদস্যরা চালককে মারধর শুরু করেন। এ সময় ফল ব্যাবসায়ীরা এগিয়ে যাওয়াতে তাদেরও মারধর শুরু করেন। পরে গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে।  

news24bd.tv

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফল ব্যাবসায়ী বলেন,‘আমরা গরিব মানুষ। মহাসড়কের পাশে দোকানদারি করে জীবিকা নির্বাহ করি। পুলিশ সদস্যরা প্রতিদিন ৫শ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমরা অস্বীকৃতি জানানোয় তারা আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। পরে গ্রামবাসীর সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ’

ইটাখোলা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সরকারের চলমান কর্মসূচি ও দুর্ঘটনা রোধের অংশ হিসেবে মহাসড়কে থ্রি হুইলারসহ নসিমন-করিমন ও ট্রলি বন্ধের অভিযান চলছিল। এরই মধ্যে স্থানীয় ইউপি সদস্য আলামিন মেম্বারের একটি ট্রলি ইট বোঝাই করে মহাসড়ক দিয়ে যাচ্ছিল। পুলিশ ট্রলিটিকে আটক করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায় এবং আমাদের দুইটি অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়। ’

‘এক পর্যায়ে অবস্থার অবনতি হলে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে শিবপুর থানা পুলিশ এসে অস্ত্র উদ্ধার করে। ’

 

সুমন▐ অরিন▐ NEWS24