পা দিয়ে নারীদের স্তন স্পর্শ করেন এ ‘গুরু’

৭৬ বছর বয়সী ‘গুরু’

পা দিয়ে নারীদের স্তন স্পর্শ করেন এ ‘গুরু’

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

পা দিয়ে নারী ভক্তদের স্তন স্পর্শ করে যৌন হয়রানির দায়ে এক স্বঘোষিত ‌‘গুরু’কে জেলে পাঠানো হয়েছে। এই নারীরা যখন আচার অনুষ্ঠানের জন্য তার কাছে আসতো তখন তারা সেই ‘গুরু’র শরীর ম্যাসাজ করে দিতেন।

আর তখনই মেয়েদের ওপর এভাবে চড়াও হতেন মোহানিয়াল রজনী। যিনি নিজেকে 'দেবতা' বলেও দাবি করতেন।

৭৬ বছর বয়সী সেই ‘গুরু’কে আদালত সাড়ে তিনবছরের কারাদণ্ড দেন।

হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি অংশের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব রজনী নিজেকে ‘দেবতা’ বলে দাবি করতেন। নারীদের নিজেদের তার কাছে উৎসর্গ করার কথা বলতেন। খবর বিবিসির

তবে শুধু পা দিয়েই নয়, তিনি হাত দিয়েও মেয়েদের শরীরের ব্যক্তিগত অংশ স্পর্শ করার মাধ্যমে যৌন নিপীড়ন চালিয়েছেন।

এমন কাণ্ডকে দাবি করেছেন নারীদের জন্য ‘আশীর্বাদ’ বা ‘পবিত্রতা অর্জন’ হিসেবে।

ব্রিটেনের লেস্টার ক্রাউন কোর্ট-এর বিচারক রবার্ট ব্রাউন এই ধরনের যৌন হয়রানিকে ‘বিশ্বাসের গুরুতর লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি মনে করেন, এ ধরনের হামলার ফলে প্রত্যেকেই যে মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপক ক্ষতির স্বীকার হয়েছেন, সেটা আশ্চর্যজনক নয়।

রজনী চার ধরনের যৌন হামলার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এর আগে।

তার শরীর ম্যাসাজ করার সময় দুইজন নারীর স্তন তিনি অন্তত দশবার নিজের পা দিয়ে স্পর্শ করেন বলে স্বীকার করেছেন। সেই সঙ্গে হাতও ব্যবহার করেছেন।

ওই নারীদের আত্মীয়দের তিনি বলেন, সে তাদের ‘গুরু’ এবং এর ফলে তারা ‘পবিত্রতা’ লাভ করেছে।

প্রসিকিউটর এস্থার হ্যারিসন বলেন, রজনী জনসম্মুখে কখনো নিজেকে গুরু বলে দাবি করেননি কিংবা নিজের পরিবারের কাছেও না।

কিন্তু ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলে গেল এবং নিজেকে সে তাদের ‘গুরু’ শুধু নয়, ‘দেবতা’ বলে ঘোষণা করে, বলেন মিজ হ্যারিসন।

ব্যক্তিগত সেবা
মিজ হ্যারিসন বলেন, নারীরা প্রতি সপ্তাহে ‘ছোটোখাটো, ঘনিষ্ঠ জমায়েত’ এর উদ্দেশ্যে মোহালিয়ান রজনীর সঙ্গে সাক্ষাত করতেন।

সেখানে তারা তাকে বিভিন্ন রকম সেবা দিতেন। তবে মিজ হ্যারিসন জানান, প্রয়োজনের চেয়েও এটা ছিল একান্ত ব্যক্তিগত।

তিনি বলেন, যখন তারা সেবা করতো তখন সে (মি. রজনী) একটি বিছানার ওপর শুয়ে পড়তো।

সাধারণত চার কিংবা পাঁচজন তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ম্যাসাজ করতো। সেখানে ওই নারীদের শাড়ি পরে আসার নির্দেশনা ছিল ।

পরে তার বিরুদ্ধে যৌন হামলার অভিযোগ আনা হলে তিনি নিজের সাফাই গেয়ে দাবি করেন যে, ওই নারীরা তাদের মনের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুই দেবতাকে সমর্পণ করেছিল কি-না সেটাই পরীক্ষা করে দেখা হতো স্পর্শ করার মাধ্যমে।

৭৬ বছর বয়সী এই ব্যক্তি দাবি করেন তার অনুগতরা এতে পরিশুদ্ধতা পাবে এবং প্রথমবার তার যৌন হামলা পর সেই নারী তার আশীর্বাদ পেয়েছেন বলে দাবি করেন।

দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে যখন আরেকজন নারী রজনীর কাছে এসে স্বীকার করেন যে নিজের সমবয়সী এক পুরুষের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক ছিল। এরপর তাকে ‘পবিত্র’ করার জন্য তার শরীরের প্রাইভেট পার্ট এভাবে স্পর্শ করে সে, বলেন মিজ হ্যারিসন।

তবে আদালতে তার পক্ষে আইনজীবী এলিনর লজ কিউসি বলেন, সর্বদা একজন দয়ালু ,স্নেহময়, যত্নশীল পিতা, দাদা, চাচা এবং সবার পরম-আত্মীয় হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।

খবরটি জানাজানি হওয়ার পর তিনি তার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তার আইনজীবী বলেন, নিজ সম্প্রদায়ের লোকজনকে নিয়ে এমন কোনো খেলা খেলতে পারেন না। কারণ তিনি তাদের প্রতি দশকের পর দশক ধরে অত্যন্ত যত্নশীল।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর