কোটা বাতিলের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

মন্ত্রিসভার বৈঠক

কোটা বাতিলের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি চাকরিতে প্রবেশে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) কোটা পদ্ধতি না রাখার প্রস্তাবকে মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে। আজ (৩ অক্টোবর, বুধবার) দুপুরে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে প্রবেশে কোটা বাতিলের যে সুপারিশ করেছিল সচিব কমিটি, তাতে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। অর্থাৎ ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত চাকরিতে কোনো কোটা থাকবে না।

এসব পদে নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। এর মাধ্যমে কোটা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হলো। দু’একদিনের মধ্যেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

এর আগে গেল ১৭ সেপ্টেম্বর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সব ধরনের কোটা তুলে দেওয়ার সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল সচিব কমিটি।

প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে বেতন কাঠামো অনুযায়ী মোট ২০টি গ্রেড রয়েছে। এর প্রথম গ্রেডে অবস্থান করেন সচিবরা। আর প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে যারা নিয়োগ পান তাদের শুরুটা হয় ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের মধ্যে।  

একজন গেজেটেড বা নন গেজেটেড প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা ৯ম গ্রেডে নিয়োগ পেয়ে থাকেন। এসব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমানে ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০% জেলা কোটা, ১০% নারী কোটা, ৫% ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা, ও শর্তসাপেক্ষে ১% প্রতিবন্ধী কোটা অর্থাৎ মোট ৫৬% কোটা সংরক্ষণের বিধান রেখেছে সরকার।  

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে এই ৫৬% কোটা তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছে সচিব কমিটি। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কোনো কোটা তুলে দেওয়ার ব্যাপারে সুপারিশ দেয়নি ওই কমিটি।

প্রতিবেদনে মুক্তিযোদ্ধা কোটা তুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হলেও মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণের বিষয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ রয়েছে বলে এতদিন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকার আদালতের পরামর্শ চাইবে এমন কথাও বলা হয়েছিল।  

সচিব কমিটির প্রতিবেদন দেওয়ার আগে এ বিষয়ে আদালতের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, এ বিষয়ে রাষ্ট্রের আইন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে।

সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। যার ধারাবাহিকতায় গেল ৮ এপ্রিল ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’-এর ব্যানারে শাহবাগে অবস্থান নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দিনভর অবস্থানে শাহবাগ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের হটিয়ে দিতে পুলিশ টিয়ারশেল ছুঁড়লে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহবাগ এলাকায় সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে গেল ১১ এপ্রিল সংসদে দাঁড়িয়ে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল বা সংস্কারের প্রয়োজন আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে সচিব কমিটি গঠন করে সরকার।


অরিন▐ NEWS24 

সম্পর্কিত খবর