বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে ফাইনালে ভারত

বাংলাদেশ-ভারত সেমি-ফাইনাল ম্যাচের একটি মুহূর্ত

অনূর্ধ্ব১৯ এশিয়া কাপ ২০১৮

বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে ফাইনালে ভারত

ক্রীড়া ডেস্ক

স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনায় পুড়লো বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। যুব এশিয়া কাপের ‘বারংবার রঙ পাল্টানো সেমি-ফাইনালে’ ভারতের কাছে ২ রানে হেরে গেছে স্বাগতিকরা।  

১৭৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৪৬ ওভার ২ বলে ১৭০ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ ১৫ ওভারে মাত্র ৩৪ রান দরকার ছিল, হাতে ছিল ৫ উইকেট।

কিন্তু কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে এই সহজ সমীকরণ মেলাতে পারেনি ‘মিনি টাইগাররা’।     

রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দুই ওপেনার প্রান্তিক নওরোজ নাবিল ও সাজিদ হোসেনকে দ্রুত বিদায় করেন মোহিত জাংরা।

উইকেট ছুড়ে আসেন দুই ব্যাটিং ভরসা মাহমুদুল হাসান ও তৌহিদ হৃদয়।

প্রমোশন পেয়ে ছয়ে নেমে সুবিধা করতে পারেননি রিশাদ হোসেনও। লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার বোল্ড হয়ে যান দেশাইকে ভুল লাইনে খেলে। ফলে কুড়িতম ওভারে ৬৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে মহা বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।

সেখান থেকে দলকে লড়াইয়ে ফেরান শামিম-আকবর। এক-দুই করে নিয়ে সচল রেখেছিলেন স্কোর বোর্ড। বাউন্ডারির জন্য অপেক্ষায় ছিলেন বাজে বলের। ষষ্ঠ উইকেটে দুই জনে গড়েন ৭৪ রানের দারুণ জুটি।

৬৩ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ৪৫ রান করা কিপার ব্যাটসম্যান আকবরকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের প্রতিরোধ ভাঙেন হর্ষ ত্যাগী। খানিক বাদে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে মৃত বানিয়ে দেন এই বাঁহাতি স্পিনার।

মৃত্যুঞ্জয়ের আউটের পর ভারতের বোলারদের ওপর চড়াও হন শামিম। আয়ুশ বাদোনিকে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কায় উড়িয়ে ৬৯ বলে পৌঁছান ফিফটিতে। পরের ওভারে লংঅন দিয়ে হর্ষকে ছক্কায় উড়ান বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।   

৮০ বলে ৫ চার ও দুই ছক্কায় ৫৯ রান করা শামিমকে ফিরিয়ে আবার ম্যাচ নিজেদের দিকে ঘুরিয়ে দেন অজয় গঙ্গাপুরাম। দশম উইকেটে রকিবুল হাসানের সঙ্গে মিনহাজুর রহমান যখন জুটি বাঁধেন, বাংলাদেশ তখন জয় থেকে ১২ রান দূরে।

দলকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন তারা। হাতে যথেষ্ট বল, রান রেটের কোনো চাপ ছিল না। রকিবুল বল শর্ট থার্ড ম্যানে খেললে ঝুঁকি নিয়ে একটি রান নিতে চেয়েছিলেন মিনহাজুর। বেশ কিছুটা এগিয়ে যাওয়া এই ব্যাটসম্যান ফেরার চেষ্টা করেন। তবে তার আগেই স্টাম্প ভেঙে দেন বোলার গঙ্গাপুরাম। এর মধ্য দিয়ে নাটকীয় জয়ে ফাইনালে পৌঁছায় ভারত।  

এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ভারতেরও। ওপেনার দেবদত্ত পাদিক্কালকে কট বিহাইন্ড করে ফেরান শরিফুল।

সতর্ক ব্যাটিংয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন যশ্বসী জয়সওয়াল ও অনুজ রাওয়াত। সুইপ করে তৌহিদকে উড়ানোর চেষ্টায় শরিফুলের হাতে ধরা পড়ে শেষ হয় ৬১ বলে খেলা অনুজের ৩৫ রানের ইনিংস। সর্বোচ্চ ৩৭ রান করা ওপেনার যশস্বীকে বোল্ড করে দেন লেগ স্পিনার রিশাদ।

অফ স্পিনে তৌহিদ দ্রুত ফেরান যশ রাঠোরকে, রিশাদ বিদায় করেন অধিনায়ক সিমরানকে। ১ উইকেটে ৬৯ থেকে ভারতের স্কোর পরিণত হয় ৭৭/৫-এ।

ষষ্ঠ উইকেটে আয়ুশ বাদোনি ও সমীর চৌধুরীর ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে ভারত। দুই জনের ৫৯ রানের জুটি ভাঙেন মিনহাজুর। দুই ছক্কায় ৩৯ বলে ২৮ রান করে ফিরেন বাদোনি।

শেষের দিকে ফিরে বড় বাধা হয়ে থাকা সমীরকে (৩৬) বোল্ড করে দেন শরিফুল। এরপর বেশি দূর এগোয়নি ভারতের ইনিংস। অতিথিদের ইনিংসের লেজ দ্রুত ছেটে দেন শরিফুল ও মৃত্যুঞ্জয়।

আঁটসাঁট বোলিংয়ে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন শরিফুল। তৌহিদ ২ উইকেটে নেন ৪ রানে। দুটি করে উইকেট নেন মৃত্যুঞ্জয় ও রিশাদও।

আগামীকাল (৫ অক্টোবর) শুক্রবার দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। জয়ী দল রোববারের (৭ অক্টোবর) ফাইনালে ভারতের মোকাবেলা করবে।


অরিন▐ NEWS24 

সম্পর্কিত খবর