পাঁচপাড়ায় কালী মন্দির ভাংচুর, আহত ৩

কালী মন্দির ভাংচুর

পাঁচপাড়ায় কালী মন্দির ভাংচুর, আহত ৩

ইমন চৌধুরী, পিরোজপুর

পিরোজপুর সদর উপজেলার সিকদার মল্লিক ইউনিয়নের পাঁচপাড়া বাজারে অবস্থিত একটি কালী মন্দির ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত আনুমানিক দেড় টার দিকে প্রায় অর্ধশত লোকের একটি দুর্বৃত্ত দল শাবল, হাতুড়ি, পিলার কাটার যন্ত্র ও লাঠি সোটা নিয়ে মন্দিরে হামলা চালায়।

মন্দিরে থাকা একটি কালী প্রতিমা ভেঙ্গে পাশ্ববর্তী খালে ফেলে দেয়। হামলাকারীরা মন্দিরের জায়গায় থাকা টিনের চালাঘর ভেঙ্গে ফেলে এবং মন্দিরের ইটের তৈরী ভীতের একাংশ ভেঙ্গে ফেলে।

এছাড়া তারা যন্ত্র দিয়ে মন্দিরের পিলার কেটে ফেলার চেষ্টা করে। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ী এবং এলাকাবাসি টের পেয়ে হামলাকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করলে হামলাকারীরা তাদের উপর চড়াও হয়ে মারধর করে। এতে গৌরাঙ্গ লাল মাঝি (৫৫), দিলিপ মৃধা (৩৫) ও শুকুরঞ্জন মন্ডল (৩৬) নামে তিন জন আহত হয়।

এক পর্যায়ে এলাকার হিন্দু-মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

পুলিশ এ ঘটনায় মহিদুল ও অহিদুজ্জামান নামে দুই জনকে আটক করা হয়েছে।

এদিকে, মন্দির ভাংচুরের প্রতিবাদে বাজারের ব্যবসায়ী এবং এলাকাবাসি পাঁচপাড়ায় পিরোজপুর-নাজিরপুর সড়কে গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করে। পরে সকালে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ২৫ মিনিটি পর তারা অবরোধ তুলে নেয়।

news24bd.tv

মন্দির ভাংচুরের বিষয়ে মন্দির কমিটির সম্পাদক সুধীর মাঝি অভিযোগ করে বলেন, সিকদারমল্লিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শহীদ মন্দিরের জায়গাটি জবর দখল করে নেয়ার জন্যই তার লোকজন দিয়ে মন্দির ভাংচুর করেছে।

তিনি জানান, মন্দিরের জায়গা নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। তারপরও জোর করে মন্দির ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা চলছে। এর আগে শহীদের পিতা রফিকুল ইসলামও মন্দিরের জায়গা দখল করার চেষ্টা করেছিল।

সিকদারমল্লিক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মন্দির কমিটির সভাপতি সুভাষ চন্দ্র মিস্ত্রি জানান, মন্দিরের জায়গা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। এ অবস্থায় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তার লোকজন দিয়ে মন্দিরটি ভেঙ্গে মন্দিরের জায়গা দখল করতে চাচ্ছে। রাত দেড় টার দিকে ৫০/৬০ জনের একটি দল অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে মন্দিরে হামলা চালিয়ে কালী প্রতিমা ভেঙ্গে খালে ফেলে দেয়। মন্দিরের একপাশের ইটের গাথুনি ভেঙ্গে ফেলেছে। আরসিসি পিলার মেশিন দিয়ে কেটে ফেলার চেষ্টা করছে। মন্দিরের নির্মান কাজের জন্য আনা আড়াই হাজার ইটসহ পাশের অন্য এক মুসলমান ব্যবসায়ীর ইট লুটপাট করে নিয়ে গেছে।

 তিনি জানান, মন্দির ভাঙ্গার সময় টের পেয়ে এলাকার হিন্দু মুসলমানরা একজোট হয়ে প্রতিরোধ করতে গেলে তাদের মারধর করে তারা পালিয়ে যায়।

পিরোজপুর সদর থানার ওসি এস এম জিয়াউল হক জানান, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। হামলার সন্দেহভাজন হিসেবে দুই জনকে আটক আটক করা হয়েছে।

পিরোজপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ হোসেন রোববার ভোরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন কালে বলেন, মন্দিরের জায়গা বিষয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। তবে মন্দিরে হামলা ও ভাংচুরের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে।

 

NEWS24কামরুল