ড. কামাল নৌকা থেকে নেমে খুনিদের সঙ্গে: প্রধানমন্ত্রী

ড. কামাল নৌকা থেকে নেমে খুনিদের সঙ্গে: প্রধানমন্ত্রী

মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কামাল হোসেন নৌকা থেকে নেমে সিরিয়াল খুনিদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। রতনে রতন চেনে শিয়ালে চেনে কচু, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

রোববার বিকালে মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটে জনসভায় ভাষণকালে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

উন্নয়ন তাদের (বিএনপির) চোখে পড়ে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি সকলের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে।

মাথাপিছু আয় বেড়েছে। আজ বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশকে আজকে উন্নয়নের রোল মডেল বলা হয়। আর তাদের (বিএনপির) উন্নয়ন মানে মানি লন্ডারিং।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ষড়যন্ত্র করে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। এরা খুনী পরিবার। পিলখানা হত্যাকণ্ডের সঙ্গেও বিএনপি জড়িত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন সরকার গঠন করলাম মাত্র ২৫ দিনের মাথায় পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই হত্যাকাণ্ডে বিএনপি-জামায়াতের হাত ছিল। ওই হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী পরিবারে ৩৩ জন নিহত হয় বলেও জানান তিনি।

বিএনপির সঙ্গে ড. কামাল যোগ দেওয়ায় এর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, সে (খালেদা জিয়া) নিজে এতিমের টাকা মেরেছে। অগ্নি সন্ত্রাস করে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে। যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত- তাদের সঙ্গে জোট করেছে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী হিসেবে পরিচিত সেই কামাল হোসেন ও তার সঙ্গে আরও কিছু খুচরা আধুলি।  

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার স্বীকৃতি পেয়েছে, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করেছে, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকা মার্কা মানেই দেশের মানুষের উন্নয়ন হবে, পেট ভরে ভাত খাবে, লেখাপড়া শিখবে, উন্নত জীবনযাপন করবে। জনগণ ধীনের শীষে ভোট দেয়নি, অথচ সেই ধানের শীষের সঙ্গে জোট বেঁধে মরা গাঙে জোর দিয়েছেন আমাদের কামাল হোসেন-মান্না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য আগামীতে আপনারা নৌকায় ভোট দেবেন। পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান, প্রায় ৬০ ভাগ কাজ সমাপ্ত।

সমাবেশে বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আগামীতে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করেবেন। শেখ হাসিনা মানে বাংলাদেশের উন্নয়ন, শেখ হাসিনা মানে দক্ষিণবঙ্গের উন্নয়ন।

শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, আগে মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম যেতে হতো। পদ্মা সেতুর কাজ সমাপ্ত হলে দক্ষিণবঙ্গেই শিল্প-কলকারাখানা গড়ে উঠবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে মাদারীপুর জেলায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। সকাল থেকেই জনসভাস্থলে মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ শরীয়তপুর ও ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আসতে শুরু করে। জনসভায় প্রায় লক্ষাধিক নেতা-কর্মীর সমাগম ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয় শিবচর উপজেলা।

জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ওবায়দুল কাদের, সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মুজিবুল হক, কর্ণেল (অব.) ফারুক খান, সালমান এফ রহমান, শাজাহান খান, ডা. দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন, বি এম মোজাম্মেল, এনামুল হক শামীম, কর্ণেল (অব.) শওকত, নাঈম রাজ্জাক, রোকসানা ইয়াসমিন ছুটি, শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা, মিয়াজউদ্দিন খান, কাজল কৃষ্ণ দে, খালিদ হোসেন ইয়াদ, পাভেলুর রহমান শফিক প্রমূখ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামসুদ্দিন খান। সঞ্চালনা করেন মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/বেলাল/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর