পঞ্চগড়ে ভয়াবহ  সড়ক দুর্ঘটনায় মা ছেলেসহ  নিহত ১০

স্বজনদের কান্নায় আকাশ-বাতাশ ভারি হয়ে উঠেছে

পঞ্চগড়ে ভয়াবহ  সড়ক দুর্ঘটনায় মা ছেলেসহ  নিহত ১০

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

নিমন্ত্রণ খেয়ে বাড়ি ফিরছিল মা লাভলি বেগম (৩৫) ছেলে ইয়াছিন (৭) । বিয়ের একমাসের মাথায় শশুর বাড়ি থেকে ফিরছিল চাচা ইউনুস হোসেন (২২) ভাতিজা মনির হোসেন (৬) । পিএসসি পরীক্ষার্থী একমাত্র মেয়ে মিমের জন্য নতুন জামাকাপড় নিয়ে ঢাকা থেকে ফিরছিলেন বাবা মোজাম্মেল হোসেন । ঘরে ফেরা হয়নি কারোই ।

মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনা তাদের জীবন কেড়ে নিয়েছে।  

শুক্রবার রাত আটটার দিকে বাংলাবান্ধা –পঞ্চগড় মহাসড়কের দশমাইল এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত হয় । গুরুতর আহত হয় কমপক্ষে ১৩ জন । তাদের অনেককেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 অন্যান্য আহতদের প্রার্থমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে ।

তেঁতুলিয়া গামী একটি বাসের সাথে একটি ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনা স্থলে ৬ জন নিহত হয়। অন্যদেরকে হাসপাতালে ভর্তির সময় কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের মধ্যে ২ শিশু এক নারী রয়েছে ।  

নিহতরা হলেন সদর উপজেলার জোত হাসনা গ্রামের শহীদুল ইসলামের ছেলে ইয়াছিন (৭) এবং তার স্ত্রী লাভলী বেগম (৩৫) একই উপজেলার শিতলী হাসনা গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে রেজাউল (২২),  বোদা উপজেলার উৎকুড়া গ্রামের ছতি চন্দ্রের চেলে অনিত্য (২০) তেঁতুলিয়া উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের ওমর আলীর মেয়ে রাহেলা (১০), একই উপজেলার উত্তর কাশেমপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে ফরিদুল ইসলাম (৩৫) গুয়াবাড়ি গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে রাসেল (২০),গড়িয়াগজ গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে  ইউনুছ (২৮) একই গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে মনির হোসেন (৬)  এবং মমিন পাড়া গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে মোজাম্মেল হোসেন (৪৫)।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,  ভাই বোন এন্টার প্রাইজ নামের একটি বাস (মৌলভিবাজার ব-০০৪৪) পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়া যাচ্ছিল। অপরদিক তেঁতুলিয়া থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী একটি ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে নেয়ার সময় ৩ জন ও রংপুরে নেওয়ার পথে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের বাড়ি পঞ্চগড় সদর, বোদা ও তেঁতুলিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

এ ঘটনায় পঞ্চগড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে । নিহত এবং আহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে হাসপাতালের সামনে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। নিহতদের আত্মীয়-স্বজনদের কান্নায় আকাশ-বাতাশ ভারি হয়ে উঠেছে । তাৎক্ষনিক হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েন করা হয় । জেলাপ্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন তাৎক্ষনিক হাসপাতাল এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন । জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদেও প্রত্যেক পরিবারকে তাৎক্ষনিক ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়। আহতদেরকেও চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হয়েছে।  
 

NEWS24▐ কামরুল

সম্পর্কিত খবর