অভিবাসী ঠেকাতে সীমান্তে ৫০০০ সৈন্য পাঠাচ্ছেন ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি

অভিবাসী ঠেকাতে সীমান্তে ৫০০০ সৈন্য পাঠাচ্ছেন ট্রাম্প

নিউজ টোয়েন্টিফোর অনলাইন

যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচনের আর কিছু দিন বাকি। এই মুহূর্তে অভিবাসী প্রবেশ ঠেকাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ সীমান্তে ৫২০০ সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম পাঠাচ্ছেন। সপ্তাহের শেষ নাগাদ তারা সীমান্তে পৌঁছে যাবে। বিষয়টিকে ট্রাম্পের রাজনৈতিক চাল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

পেন্টাগন ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মুখপাত্রের বরাত দিয়ে সীমান্তে সেনা পাঠানোর কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা সিএনএন।

সমালোচকরা বলছেন, যেখানে দেশের অভ্যন্তরে যত্রতত্র বোমা হামলা ও হিংসাত্মক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটছে, ট্রাম্প সেদিকে দৃষ্টি না দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে শত মাইল দূরে কোন অভিবাসী দল অবস্থান করছে তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন। মূলত জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে এটা ট্রাম্পের একটি রাজনৈতিক কৌশল।

জানা গেছে, ওই অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত থেকে ৯০০ মাইল দূরে রয়েছে এবং সীমান্তে পৌঁছাতে তাদের সপ্তাহখানেক সময় লাগবে।

এসব অভিবাসী যাতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে আশ্রয় প্রার্থনা করতে না পারে সেজন্যই সীমান্তে কড়া পাহারা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

জেনারেল টেরেন্স জন ও'শোগনেসি বলেছেন, "আমাদের মূল পরিকল্পনা হলো দক্ষিণ টেক্সাস, অ্যারিজোনা এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করা। সেখানকার সীমান্ত প্রতিরক্ষা শক্তিশালী ও নিরাপদ করা। সৈন্যদল সামরিক সরঞ্জামাদি নিয়ে বর্ডারে চলে যাবে। কাস্টমস ও সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের শক্তি বৃদ্ধি করবে। সীমান্তের প্রত্যেকটা প্রবেশপথে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।

তিনি বলেন, আমাদের বক্তব্য খুবই সাধারণ। পেন্টাগন সীমান্তে সেনাদলের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা ইউনিট, কমান্ড পোস্ট, সামরিক পুলিশ ইউনিট এবং পরিবহন বিমান পাঠাবে। এমনকি রাতে পাহারা দেওয়ার জন্য সেন্সর দিয়ে সজ্জিত হেলিকপ্টার পাঠাবে। এবং আমরা যা করছি তা আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

যদিও যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী দেশের অভ্যন্তরীণ আইন প্রয়োগের জন্য সেনাবাহিনীর ব্যবহার অবৈধ।

সমালোচকরা বলছেন, এটা ট্রাম্পের একটা রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি। তিনি মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে অভিবাসী ইস্যুকে একটা ক্রাইসিস হিসেবে সামনে দাঁড় করাতে চাইছেন। এটা নিয়ে একটা ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন এবং মিডিয়ার মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দিতে চাইছেন।  

সেন্টার ফর আমেরিকান প্রোগ্রেস- এর প্রেসিডেন্ট নিরা ট্যান্ডেন,  সংস্থাটির প্রবীণ কর্মী হেনরি ফার্নান্দেজ এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত রাব্বি ডেভিড সাপারস্টেইন এক বিবৃতিতে বলেন, অভিবাসী ঠেকাতে বর্ডারে এখন সৈন্য পাঠানো ট্রাম্পের রাজনৈতিক চাল। এটা অযৌক্তিক। ওই অভিবাসী দলটি এখনো যুক্তরাষ্ট্র সীমান্ত থেকে শত মাইল দূরে। তারা আমেরিকার জন্য কোন হুমকি নয়। তারা নিরস্ত্র, দিন দিন আকারে ছোট হচ্ছে এবং তাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। যদি তারা সীমান্তে চলেও আসে, সেজন্য আমাদের আইন রয়েছে।

প্রভাবশালী বেশ কয়েকজন ডেমোক্র্যাট ও সিএনএন- কে পাঠানো বোমার কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, আমরা এখন সত্যিকার অর্থে যে হুমকিতে আছি তা হলো- যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বোমা হামলা এবং হিংসাত্মক বন্দুক হামলা। ট্রাম্পের উচিত এগুলো নিয়ে মাথা ঘামানো।

সম্পর্কিত খবর