‘১০ মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ৪২২টি’

১০ মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ৪২২

‘১০ মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ৪২২টি’

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

দেশে চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে ৪২২ জন বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার।
এদের মধ্যে ক্রসফায়ারে নিহত ৪১৫ জন, গুলিতে দুইজন এবং নির্যাতনে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া এই সময়ের মধ্যে গুমের শিকার হয়েছে ৭১ জন এবং কারাগারে নিহত হয়েছেন ৫৭ জন।

গতকাল এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এ জানুয়ারি মাসে ১৯ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৭ জন, মার্চে ১৮ জন, এপ্রিলে  ২৯ জন, মে মাসে ১৫১ জন, জুনে ৫০ জন,  জুলাইয়ে ৬৯ জন, আগস্টে ২৪ জন, সেপ্টেম্বরে ৩৬ জন  এবং গত  অক্টোবর মাসে ১৯ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

এ ছাড়া, এ সময়ের মাঝে সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফ-এর হাতে নিহত হয়েছে ৮ জন, আহত হয়েছে ২০ জন এবং ১২ জন অপহরণের শিকার হয়েছে।

প্রথম ১০ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছে ৬৮ জন এবং আহত হয়েছে ৩ হাজার ৩৬৫ জন। অক্টোবর পর্যন্ত দেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৫৮৫ টি, যৌন হয়রানীর শিকার হয়েছে ১৪৭ জন, এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ২৫টি, গণপিটুনিতে মারা গেছে ৪৫ জন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার কারণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার, গুজব ছড়ানো, ও সরকার বিরোধী’ পোস্ট দেওয়ার কারণে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেপ্টেম্বর মাসে পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গতমাসে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  

সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৭১ জন সাংবাদিক নানাভাবে আক্রমণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে আহত হয়েছেন ৪৪ জন, লাঞ্ছিত হয়েছেন ১৮ জন, হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন আরো ৯ জন।

অধিকার তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, বর্তমান আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক রূপ নিয়েছে। ২০১৪ সালে ৫ই জানুয়ারি বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো এই জোট ক্ষমতায় আসার পর মানবাধিকার পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে। লাগামহীনভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে এক ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের ডিসেম্বরে একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নেওয়া হলেও সমস্ত রাজনৈতিক দলের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরী হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধীদল ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর ব্যাপক দমন-পীড়নের মাধ্যমে মতপ্রকাশ ও সভা-সমাবেশের অধিকার লঙ্ঘিত করে নির্বাচনী মাঠে একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তার করেছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর