‘দেশের মালিক মহারানি-মহারাজা নন, জনগণ’

ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষনেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

‘দেশের মালিক মহারানি-মহারাজা নন, জনগণ’

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

সরকারের কথার এক পয়সার দামও নেই বলে দাবি করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষনেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, সরকারের কথার এক পয়সার দামও নেই। সেটা গত ৫ বছরে প্রমাণিত হয়েছে। সংবিধান ১৬ আনা উপেক্ষা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, দেশের মালিক কোনও মহারানি-মহারাজা নন, এই দেশের মালিক জনগণ। জনগণের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আপসহীনভাবে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা দেশের মালিক হিসেবে ঐক্যবদ্ধ থাকব।

ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিদ্ধান্ত নেব। সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। ভোটকেন্দ্রে পাহারা দিতে হবে।

‘যেভাবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হয়রানি করছে, তা অপরাধ, মহা-অপরাধ। হয়রানি বন্ধ করতে হবে। স্বাধীন বাংলাদেশে এটা চলতে দেওয়া যায় না। ’ বলেন ঐক্যফ্রন্টের এ শীর্ষ নেতা।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বাঁচার উপায় হলো জনগণকে শক্তভাবে দাঁড়িয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। দেশের মালিক আপনারা। এজন্য আপনাদের শক্তভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এটা কোনো ব্যক্তির রাষ্ট্র নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এটায় আমাদের দাবি। আমাদের অধিকার আমরা আদায় করব। জনগণ আজ জেগেছে, এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামীকালের (৭ নভেম্বর) সংলাপ সফল না হলে এবং দাবি না মানলে পরদিন ( ৮ নভেম্বর) রাজশাহী অভিমুখে রোডমার্চ করা হবে।  ৯ নভেম্বর রাজশাহীতে জনসভা হবে। পরে খুলনা ও বরিশাল অভিমুখেও রোডমার্চ হবে।

তিনি বলেন, সংলাপে দাবি না মেনে তফসিল ঘোষণা করা হলে নির্বাচন কমিশন ভবন অভিমুখে পদযাত্রা করবে ঐক্যফ্রন্ট।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া জেলে যাবার সময় বলেছিলেন, কারাগার আমি ভয় পাই না। দেশের সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনের নির্দেশনা তিনি (খালেদা) দিয়ে গেছেন। আজ আমরা জাতীয় নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ। ঐক্যবদ্ধ প্রক্রিয়াতেই দুঃশাসন থেকে মুক্তি, জনগণের শাসন নিশ্চিত করা হবে।

‘আগামীকাল (৭ নভেম্বর) আবার ছোট সংলাপ হবে। আমরা সংলাপে বিশ্বাস করি। কিন্তু নাটক করলে চলবে না। আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) সরে যেতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। আমাদের দাবি দাওয়া মেনে নিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। ’

‘চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ হাজার ৩৭১টি মামলা হয়েছে। আমরা আর গ্রেপ্তার হতে চাই না, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করব। জনগণের সরকার গঠন করতে চাই’। বলেন ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, কিছু দূরে হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় সময় কাটাচ্ছেন খালেদা জিয়া। তিনি যেটা আশা করেছিলেন, আজকে জাতীয় নেতৃবৃন্দ একমঞ্চে উঠেছেন।

গ্রেপ্তার বন্ধের দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা বলেছিল গ্রেপ্তার-হয়রানি করা হবে না। কিন্তু আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আজকেও আমাদের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  

সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধান বক্তা ছিলেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব।

এছাড়া সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন- বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, ডা. জাফরুল্লাহ, মাহমুদুর রহমান মান্না, আ স ম আবদুর রব, সুলতান মো. মনসুর, মোস্তফা মহসীন মন্টু, আবদুল মালেক রতন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আবদুল মঈন খান।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর