যেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত

জামায়াতের প্রস্তুতি

যেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সব দলেন অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ দেশের সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল তাদের মনোনয়ন ফরম বিক্রি চলছে। দলগুলো তাদের প্রার্থী বাছাইয়ে ব্যস্ত।

কিন্তু আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে দেশের অন্যতম আলোচিত-সমালোচিত ধর্মভিত্তিক দল জামায়াত ইসলামী কীভাবে তাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়েছে তা নিয়ে সর্ব মহলে গুঞ্জন চলছে।

নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় জামায়াত দল হিসেবে বা দাড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না ।

এ ব্যাপারে জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তাদের দলের নিবন্ধন বাতিল হলেও নির্বাচনের জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

কিন্তু জামায়াতের নেতারা অন্য কোনো নিবন্ধিত দলের প্রতীকে বা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে পারবেন বলে কিছুদিন আগে এক বক্তব্যে নিশ্চিত করেন নির্বাচন কমিশন সচিব।

শফিকুর রহমান বলেন, আমরা বিশ দলীয় জোটের অংশ, যেটি এখন ২৩ দলে পরিণত হয়েছে।

আমরা জোটের ভিত্তিতেই নির্বাচনে অংশ নেব।

নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিবেচনায় জামায়াতের হাতে দুইটি পথ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

‌‌‌‘একটি হলো জোটের কোনো একটি নিবন্ধিত দলের মার্কা নিয়ে নির্বাচন করতে পারি অথবা স্বতন্ত্রভাবেও নির্বাচন করতে পারি। ’

তবে কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া হবে তা এখনো দলগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানান এ জামায়াতের শীর্ষ নেতা।

জামায়াতে ইসলামীর মোট কতজন জোটের প্রতীকে বা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে পারেন - এই প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান জানান, তাদের অনুমান অনুযায়ী ৫০ থেকে ৬০ জন এবারের নির্বাচনে অংশ নেবে।

‘জামায়াত থেকে কারা নির্বাচনে অংশ নেবে তা জোটের দলগুলোর সমঝোতার ভিত্তিতেই নির্ধারিত হবে’-বলেন এ জামায়াত নেতা।

‘জোটের প্রধান শরিক দলের (বিএনপি) সাথে অতিসত্বর বৈঠক হবে আমাদের। ওই বৈঠকে আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব এবং দলীয় ফোরামে এই বিষয়টি নিয়ে আলাপ আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব। ’

ঐক্যফ্রন্ট গঠনের সময় বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আপত্তি তোলে কয়েকজন নেতা। বিএনপি যেন জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা ত্যাগ করে - এমন পরামর্শও দেওয়া হয় তাদের।

এরকম পরিস্থিতিতেও কোনো একটি আসনে ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষেই জামায়াতের নেতাকর্মীরা কাজ করবেন বলে নিশ্চিত করেন জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি।

‘একটি বৃহত্তর উদ্দেশ্যকে যদি সফল করতে হয় তাহলে সবাইকে বড় মনের পরিচয় দিতে হবে’, বলেন সিনিয়র এ জামায়াত নেতা।

একইভাবে যেসব আসনে জামায়াতের নেতারা প্রার্থীতা করবেন, সেসব আসনে ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা জামায়াতের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

নির্বাচনে নিজেদের প্রতীক ব্যবহার করতে না পারা অথবা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দলের বেশ কয়েকজন নেতার সাজা কার্যকর হওয়ার কারণে দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযান ও কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে মনে করেন তিনি।

‘প্রতিটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনেই আমরা স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করেছি এবং সেসব নির্বাচনে জনগণের সমর্থনের বিবেচনায় আমরা আশাবাদী যে দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করলেও বড় কোনো সমস্যা সৃষ্টি হবে না। ’

তবে দলের প্রথম সারির বেশ কয়েকজন নেতা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত থাকায় দল বড় ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি বলেন, শীর্ষ নেতারা দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় দল যতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জামায়াতের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থানের কারণে।

‘কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে দেশের সকল শাখা কার্যালয় সরকার বন্ধ করে দিয়েছে এবং আমাদের কোনো কার্যক্রমই সরকার স্বস্তির সঙ্গে সম্পাদন করতে দিচ্ছে না, যেটি আমাদের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। ’

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর