নির্বাচনে আসলে দোষ কী: হিরো আলম

হিরো আলম

নির্বাচনে আসলে দোষ কী: হিরো আলম

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

বড় বড় অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং খেলোয়াড়রা নির্বাচনে আসলে দোষ নেই, আমি আসলে দোষ কী? এ কথা জানিয়েছেন ঢালিউড-বলিউডে অভিনেতা বনে যাওয়া আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, চা-দোকানি থেকে নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারলে হিরো আলমের এমপি ইলেকশন করার খবরে হিংসে কেন?

শুক্রবার নিউজ টোয়েন্টিফোর কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।

বগুড়া সদরের এরুলিয়া বাজারের একসময়ের সিডি দোকানি হিরো আলম বলেন, নির্বাচনে জয়ী হতে পারলে এলাকার উন্নয়ন, দেশ ও দেশীয় চলচ্চিত্রের উন্নয়ন করব। জনগণের সেবা করব এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

‘কেন নির্বাচনে এসেছেন’ এমন প্রশ্নের জাবাবে হিরো আলম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুবার ৭১ ও ১৬ ভোটে হেরেছি। তখনই ঘোষণা দিয়েছিলাম, কোনো দিন নির্বাচন করলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করব। সেই সুযোগ এবার কাজে লাগাতে চাই। তাছাড়া মাশরাফির মতো খেলোয়াড়, ঢালিউডের প্রথম সাঁড়ির প্রায় সব নায়ক-নায়িকা ও অনেক সেলিব্রেটি নির্বাচনে এসেছেন।

আমি হিরো আলম আসতে দোষ কিসে?

আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র মতো বড় দল বাদ দিয়ে জাতীয় পাটিতে কেন? এর জাবাবে তিনি বলেন, পাল্লীবন্ধু এরশাদেকে ছোটকাল থেকেই দেখেছি তিনি অনেক জনপ্রিয়। তাছাড়া তার সময় মানুষ অনেক সুখে-শান্তিতে ছিল। দেশের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এজন্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পাটির ‘লাঙ্গল’ মার্কায় নির্বাচন করার ইচ্ছা পোষণ করি। বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিতে আবেদনপত্র জমা দিয়েছি।

কে এই ‘হিরো আলম’?
হিরো আলমের প্রকৃত নাম আশরাফুল আলম। বাংলাদেশের বগুড়ার এরুলিয়া গ্রামে তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। দরিদ্র পরিবারের সন্তান আলম। তিনি যখন ছোট, তখনই অর্থাভাবের কারণে আলমের বাবা-মা গ্রামের অন্য এক পরিবারের হাতে ছেলেকে লালন-পালনের দায়িত্ব তুলে দেন। আলমের পালক বাবা আব্দুর রজ্জাকও অবশ্য খুব ধনী ছিলেন না। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পরে আর আলমের খরচ জোগাতে পারেননি রাজ্জাক।

জীবিকা নির্বাহের তাগিদে আলম সিনেমা, গানের সিডির ব্যবসা সেই সঙ্গে শুরু করেন ডিশ টিভির ব্যবসাও।

নতুন ব্যবসায় ভালোই রোজগার করে আলম। ২০০৯ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন পাশের গ্রামের সুমি নামের তরুণীর সঙ্গে। বর্তমানে ছেলে আবির ও মেয়ে আলোকে নিয়ে সুখের সংসার তার।

আলম থেকে ‘হিরো আলম’ যেভাবে?
আসলে যখন সিডির ব্যবসা করতেন, তখনই ভিডিও-তে দেখতেন মডেলদের কার্যকলাপ। সেই সময়েই মাথায় চেপে বসে মডেল হওয়ার। তখন হাতে পয়সা ছিল না। কিন্তু পরে আর্থিক স্বচ্ছলতা আসার পরে নিজেই পয়সা খরচ করে ভিডিও তৈরি করে ফেসবুক আর ইউটিউবে ছড়িয়ে দেওয়া শুরু করেন। ইউটিউবে প্রায় ৫০০ মিউজিক ভিডিও ছাড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে আলোচনায় আসেন হিরো আলম। ইউটিউবে প্রকাশ করা তাঁর নিজস্ব ভিডিওগুলোও অনেক জনপ্রিয়। ভিডিওগুলোর নির্দেশনাও দেন হিরো আলম। ভিডিওগুলোর মূল চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। ইউটিউবে হিরো আলমের এসব ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তাঁর ভিডিও নিয়ে কৌতুক শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় তাঁর ভিডিও নিয়ে হয় ট্রল। তবে সবকিছু ছাপিয়ে তরুণ প্রজন্মের কাছে ব্যাপক পরিচিতি পান তিনি।

স্যোসাল মিডিয়ায় তিনি যে ভীষণ জনপ্রিয় তার প্রমাণ হলো- ফেসবুকে রেকর্ড অনুসারীর ভিত্তিতে গুগলের তথ্য।

এতে উল্লেখ করা হয়, বলিউড নায়ক সালমান খানের চেয়েও হিরো আলমকে গুগলে বেশিবার খোঁজা হয়েছে। আলটিমেট ইন্ডিয়ার বরাত দিয়ে ইউএনবির খবরে বলা হয়েছে, গুগলে কাকে সবচেয়ে বেশিবার খোঁজা হয়, তার একটি তালিকা করে ইয়াহু ইন্ডিয়া। জরিপে দেখা গেছে, ‘সুলতান’ ও ‘দাবাং’ তারকা খ্যাত সালমান খানকে পেছনে ফেলেছেন হিরো আলম। সালমানের চেয়েও বেশিবার খোঁজা হয়েছে হিরো আলমকে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর