সৌদিতে নারী বন্দিদের যৌন হয়রানি নিয়ে তোলপাড়

সৌদিতে নারী বন্দিদের যৌন হয়রানির অভিযোগ

সৌদিতে নারী বন্দিদের যৌন হয়রানি নিয়ে তোলপাড়

নিউজ টোয়েন্টিফোর অনলাইন

সৌদি কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদের নামে মুখোশ পরে নারী বন্দিদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বন্দী নারী অধিকারকর্মীদের ইলেকট্রিক শক ও নির্মমভাবে বেত্রাঘাতের অভিযোগ এনেছেন মানবাধিকারকর্মীরা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বন্দী নারীদের এমনভাবে নির্যাতন করা হয়েছে যে তারা ঠিকমতো উঠে দাঁড়াতে ও হাঁটতে পারছেন না।

দেশটির ধাভান কারাগারে এ নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পাশাপাশি একই অভিযোগ এনেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। খবর বিবিসির

চলতি বছরের শুরুতে সৌদিতে একাধিক প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা, বুদ্ধিজীবী ও নারী অধিকারকর্মীকে আটক করা হয়। সর্বশেষ প্রখ্যাত সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার ঘটনা ঘটে। সৌদি রাজপরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলায় জামাল খাসোগিকে নির্মমভাবে হত্যার পর ইলেক্টিক করাত দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করে বাক্সবন্দি করার অভিযোগ ওঠে।

এ নিয়ে সারা বিশ্বে চলছে তোলপাড়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বন্দী নারীদের ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাদের বেত্রাঘাতও করা হয়েছে। ফলে তারা ঠিকমতো উঠে দাঁড়াতে ও হাঁটতে পারছেন না। এদের মধ্যে একজনকে যৌন হয়রানি করেছেন মুখোশপরিহিত এক জিজ্ঞাসাকারী।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, কমপক্ষে তিনজন নারী বন্দীকে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছে ও বেত্রাঘাত করা হয়েছে। যৌন হয়রানি প্রসঙ্গে হিউম্যান রাইটসের অভিযোগ, এসব নারীদের জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরা হয়েছে ও চুমু দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বিবিসি থেকে সৌদি কর্তৃপক্ষের মন্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও সৌদির পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

গত বছর নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দিয়ে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তবে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি এমন সময়ে দেওয়া হয়, যখন নারী অধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে ধরপাকড় চলছে।

এ পর্যন্ত ১৭ জন অধিকার কর্মীকে আটক করেছে সৌদি। এদের মধ্যে পাঁচজনই নারী। আটকের পর আটজনকে সাময়িক সময়ের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান, যিনি একজন প্রগতিশীল সংস্কারক হিসেবে নিজেকে দাবি করে, তার নেতৃত্বে সৌদিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। তবে বিরোধীদের দমন করতে তিনি সর্বোচ্চ নিষ্ঠুর পন্থা অবলম্বন করতেও কুণ্ঠাবোধ করছেন না।

সর্বশেষ গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন প্রখ্যাত সাংবাদিক ও ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক জামাল খাসোগি। পরে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়, খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা বলছে, সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশেই সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত খবর