দুই বছরের সাজাপ্রাপ্তরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না

হাইকোর্ট

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ

দুই বছরের সাজাপ্রাপ্তরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না

নিউজ টোয়েন্টিফোর অনলাইন

বিচারিক আদালতে দুই বছরের বেশি সাজা হলে আপিল বিভাগে বিচারাধীন থাকাবস্থায় কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও একেএম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সাজা স্থগিতে বিএনপির পাঁচ নেতার আবেদন খারিজ করে দেওয়া আদেশে এমন পর্যবেক্ষণ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী একেএম আমিনুদ্দিন মানিক বলেছেন, এ আদেশের ফলে আপিল করেও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দণ্ডিত নেতাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই।

বিএনপির পাঁচ নেতা হলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উলাহ আমান, বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের নেতা ডা. এ. জেড. এম. জাহিদ হোসেন, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি ওয়াদুদ ভূঁইয়া, ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সাংসদ ও ঝিনাইদহ বিএনপির সভাপতি মো. মশিউর রহমান এবং ঝিনাইদহ-১ আসনের সাবেক সাংসদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. আব্দুল ওহাব।

আবেদনকারী আমান উল্লাহ আমানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আরিফুল ইসলাম। ডা. জাহিদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আইনজীবী আহসানুল করিম ও খায়রুল আলম চৌধুরী। মশিউর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক। ওয়াদুদ ভূঁইয়া ও মো. আবদুল ওহাবের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক ও  আইনজীবী একেএম ফখরুল ইসলাম।

সবগুলো মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সাথে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম খান ও এ. কে. এম. ফজলুল হক।

এ বিষয়ে আমিনউদ্দিন মানিক জানান, হাইকোর্টে করা আবেদনে তারা উল্লেখ করেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সাজা স্থগিত হওয়া আবশ্যক। পরে হাইকোর্ট তাদের আবেদন খারিজ করে এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে পর্যবেক্ষণও দিয়েছেন আদালত। পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, সংবিধানে স্পষ্ট বলা আছে কারো দুই বছরের বেশি সাজা হলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তাই দণ্ডিদের আপিল চলাকালে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই।

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে বিএনপি'র এই পাঁচ নেতার বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। পরবর্তীতে তারা উচ্চ আদালতে আবেদন করে জামিন পান।

বিগত ২১ জুন ২০০৭ সালে ঢাকার বিশেষ আদালত নম্বর-১ আমান উল্লাহ আমানকে ১৩ বছরের সশ্রম  কারাদণ্ড ও ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। ১ অক্টোবর ২০০৭ সালে তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।  

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত নম্বর-৬ ডা. এ.জেড.এম. জাহিদ হোসেনকে ২৫ মে ২০০৮ সালে ১৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা প্রদান করেন। গত ৩ জুন ২০০৯ সালে তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।

যশোর বিশেষ জজ আদালত গত ২৫ অক্টোবর ২০১৭ সনে আলহাজ্ব মো. মশিউর রহমানকে ১০ বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৭০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করেন। তিনি ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ সালে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ ওয়াদুদ ভূঁইয়াকে মোট ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার রায় দেন। তিনি এ বিষয়ে হাইকোর্টে আপিল করে ২০০৯ সালের ২৮ এপ্রিল জামিন পান।

মো. আবদুল ওহাবকে যশোরের স্পেশাল জজ ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তিনি এ বিষয়ে আপিল করে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।

সম্পর্কিত খবর