প্রবাসীদের মন জয় করলেন ওবায়দুল কাদেরপত্নী

ইশরাতুন্নেসা কাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের মিয়া। পাশে মিলা প্রু।

প্রবাসীদের মন জয় করলেন ওবায়দুল কাদেরপত্নী

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে

সাংগঠনিক কোন পদ-পদবি নেই। সভা-সমাবেশেও দেখা যায় না। এমন একজনকে ঘিরেই আবর্তিত হলো যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী পরিবারের সম্প্রীতির বন্ধন। পরস্পরের প্রতি অগাধ আস্থার বহিঃপ্রকাশও ঘটালেন নেতা-কর্মীরা।

এমন একটি অনন্য পরিবেশের মধ্যমণি ছিলেন ইশরাতুন্নেসা কাদের। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী।  

ইশরাতুন্নেসা কাদের ১৬ দিনের যুক্তরাষ্ট্র সফরে আওয়ামী পরিবারে সাংগঠনিক ঐক্যের ভিতকে আরো সংহত করে গেলেন। গত মঙ্গলবার তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে নিউইয়র্ক ত্যাগের সময়ে নেতা-কর্মীদের শ্রদ্ধায় আপ্লুত হলেন।

জেএফকে এয়ারপোর্টে যে আবেগে তাকে ১৬ অক্টোবর অভ্যর্থনা জানানো হয়েছিল, গত মঙ্গলবার ফিরে যাবার সময়ে সেই আবেগের জাগরণকে আরো বিস্তৃত করার আহবান জানিয়ে গেলেন তিনি।  

নিউইয়র্ক, লং আইল্যান্ড, বোস্টন, ওয়াশিংটন মেট্রো এলাকা পরিভ্রমণ করেছেন সফরসঙ্গী মিলা প্রু-কে নিয়ে। কোথাও ছিল না সাংগঠনিক কোন সভা-সমাবেশ।

সে ধরনের ব্যানার-ফেস্টুনও নজরে আসেনি। তবে জড়ো হওয়া সকলেই ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির আলোকেই কথাবার্তা হয়েছে। সকলকেই তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে আবারো জয়ী করতে নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগ বাড়াতে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফেরা বাংলাদেশ দিপ্ত প্রত্যয়ে এগিয়ে চলছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, এই ধারা অটুট রাখতে পারলেই বঙ্গবন্ধু তথা মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন পূরণ করা সহজ হবে। ব্যক্তি জীবনে আইনজীবী হিসেবে মানুষকে কনভিন্স করার যথেষ্ট সামর্থ্যবান ইশরাতুন্নেসা প্রবাসের আওয়ামী পরিবারের সান্নিধ্যে এসে সবকিছুই ভুলে গিয়েছিলেন। বোন, ভাবির ভূমিকায় আবির্ভূত হয়ে প্রাণ খুলে সময় অতিবাহিত করেছেন প্রতিটি পর্বে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় একটি রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদকের পত্নী কিংবা বিশেষভাবে তৎপর একজন মন্ত্রীর স্ত্রী হিসেবেও নিজেকে উপস্থাপন করেননি। অর্থাৎ প্রাণের সাথে প্রাণ মিশিয়ে নানা প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। শুনেছেন প্রবাসীদের এগিয়ে চলার অভিজ্ঞতা। জেনেছেন প্রিয় মাতৃভূমি নিয়ে প্রবাসীদের ভাবনার কথাও। বিশেষ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান কর্মকাণ্ডের প্রতি দল-নিরপেক্ষ প্রবাসীদের ভাবনা নিয়ে কৌতূহল পরিলক্ষিত হয়েছে ইশরাতুন্নেসার মধ্যে। তার স্বামীর নেতৃত্বে কেমন করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-সেটিও ছিল কৌতূহলের সীমানায়। তৃণমূল থেকে উঠে আসা ওবায়দুল কাদেরের কর্মনিষ্ঠার উৎস ইশরাতুন্নেসা সকলকে জানিয়ে গেলেন যে, ভালো কাজের স্বীকৃতি দিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেন না বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। দলের জন্যে নিবেদিতপ্রাণ সকলেই তা অনুভব করেন। প্রবাসেরও অনেকেই তার প্রমাণ পেয়েছেন ইতিমধ্যেই। সুতরাং সংগঠনের জন্য, দেশের জন্যে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজের অন্যতম অবলম্বনই হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।  

ইশরাতুন্নেসার সম্মানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ, বোস্টনের প্রবাসীরা এবং মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগ অনানুষ্ঠানিক ডিনারের আয়োজন করে। নিজের এলাকা কোম্পানীগঞ্জের প্রবাসীরাও একই ধরনের আয়োজন করেছিলেন। সবগুলোতেই প্রাণের মিলন ঘটেছে। পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ যোগাযোগ দৃঢ় করার আহবান জানিয়েছেন তিনি। সকলকে অনুরোধ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা সরকারের নীতি-নির্ধারকদের সাথে শেয়ার করতে।  

ব্রুকলীনে যে বাসায় ছিলেন সেখানেই অনেককে সাক্ষাৎ দিয়েছেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের নির্মল পরিবেশ তৈরি করেছেন। সকলকে আহবান জানিয়েছেন দেশের উন্নয়নে সহযোগিতার জন্য। দেশ এগিয়ে গেলেন প্রবাসের স্বপ্ন সফল হবে বলে মন্তব্য করেছেন।  

গত সোমবার রাতে তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়েছিলেন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের মিয়া। তার সাথে ছিলেন আরো কয়েকজন। ফুলেল শুভেচ্ছা আর আন্তরিক আতিথেয়তা শেষে ইশরাতুন্নেসা বলেছেন, ‘দেশ এবং মানুষের প্রয়োজনেই ক্ষমতায় দরকার শেখ হাসিনাকে। টানা দুই টার্ম ক্ষমতায় থাকার কারণেই বাংলার মানুষের কাছে উন্নয়নের অনেক কিছু দৃশ্যমান হচ্ছে। আবারও ক্ষমতায় এলে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা আরো সুন্দর হবে। ’  তাই সামনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়ী করতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সাধ্যমত কাজ করতে হবে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে উত্তর আমেরিকায় বাংলা ভাষার সর্বাধিক প্রচারিত ‘ঠিকানা’ পত্রিকাকে আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, ‘নেতা না হয়েও প্রকৃত একজন নেতার মত মনে হয়েছে। এমন মানুষ সান্নিধ্যে রয়েছেন বলেই ওবায়দুল কাদের ভাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হতে পেরেছেন। এমন মহিয়সী রমনীরাই হলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার অন্যতম অবলম্বন। ’

ইশরাতুন্নেসার সবকটি ইভেন্টে উপস্থিত থাকা নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী বলেছেন, ‘সাধারণ সম্পাদক এবং প্রভাবশালী একজন মন্ত্রীর স্ত্রী হওয়া সত্বেও তাঁর মধ্যে কোন অহমিকা কিংবা দাপটের লেশমাত্র দেখিনি। সাদাসিদে মানুষ তিনি। এজন্য যারাই তার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন, তারাই অভিভূত, আপ্লুত। ’ 

ইশরাতুন্নেসা কাদের অবস্থান করেছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গির হোসেনের বাসায়। তার আন্তরিকতাপূর্ণ সমন্বয়েই বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের সাথে কথা বলার সুযোগ পান সড়ক পরিবহন ও সেতু বিষয়ক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সহধর্মিণী।  

তার এ সফর প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘নিতান্তই একজন ভদ্র নারী। আমরা সকলেই অভিভূত, নেতা-কর্মীদের প্রতি রয়েছে তার গভীর মমত্ববোধ। আমরা সকলেই অনুপ্রাণীত হয়েছি তার সান্নিধ্য পেয়ে। ’

সম্পর্কিত খবর