রাঙামাটিতে ধানের শীষ মনি স্বপনের হাতে

মনি স্বপন দেওয়ান

রাঙামাটিতে ধানের শীষ মনি স্বপনের হাতে

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি প্রতিনিধি

রাঙামাটিতে ঐক্যফ্রন্টের (বিএনপি) দুই হেবিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে অবশেষে ধানের শীষ দখল করেছেন মণি স্বপন দেওয়ান। সম্প্রতি তার মনোনয়ন চূড়ান্ত করে দলটির হাইকমান্ড। একই সঙ্গে দীর্ঘ দিনে লালিত স্বপন ভেঙ্গে গেছে বিএনপির অন্যতম প্রার্থী দীপেন দেওয়ানের।  

রাঙামাটি জেলা রিটানিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়ন যাচাই-বাচাইয়ে টিকে থাকলেও, নিজ দলের কাছে হেরে গেলেন তিনি।

এ নিয়ে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় চলছে আলোচনা-পর্যালোচনা। তা নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে কোন্দল। বেড়েছে দূরত্বও।

কিন্তু তবুও রাঙামাটি জেলা বিএনপির র্শীষ নেতারা বলছেন, কেন্দ্রীয়ভাবে যাকে মনোনীত করা হয়েছে, তাকেই সমর্থন দিয়ে রাঙামাটি আসন ধরে রাখতে সর্বশেষ প্রয়াস থাকবে তাদের।

রাঙামাটি জেলা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, এবার আসনটিতে দলীয় প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে রাঙামাটি জেলা বিএনপির একটি অংশ সমর্থন দিয়ে আসছিল দীপেন দেওয়ানকে। তাদের দাবি তিনি যোগ্য এবং ত্যাগী নেতা। তিনি জেলা যুগ্ম জজ থেকে সরকারি চাকরি ইস্তফা দিয়ে জরুরি অবস্থার সময় এ জেলায় দলের হাল ধরেছেন। তাকে মনোনয়ন দেওয়া না হলে রাঙামাটি আসনটি ধরে রাখা দুষ্কর হতে পারে বিএনপির জন্য।

রাঙামাটি জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক মেয়র সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ভূট্টো বলেন, দীপেনকে না দেওয়ায় আমরা হতবাক। মনোনয়নের প্রক্রিয়ায় দীপেন দেওয়ানকে মূল প্রার্থী হিসেবে রাখা হয়েছিল। আর তার বিকল্প প্রার্থী হিসেবে রাখা হয়েছিল মণি স্বপন দেওয়ানকে। কিন্তু শেষ মুহূর্তের এমন সিদ্ধান্তে আমরা হতাশ। তবু দলীয় সিদ্ধান্তে ধানের শীষের জন্য কাজ করব।

এদিকে দল থেকে মনোনীত না হলেও হতাশ হয়নি রাঙামাটি জেলা বিএনপির অন্যতম নেতা দীপেন দেওয়ান।

তিনি বলেন, আমি দলের জন্য কাজ করেছি, শ্রম দিয়ে যাচ্ছি। তাই মনোনয়ন চেয়েছিলাম। অনেক আশা-ভরসা ছিল। এখন দলীয় সিদ্ধান্ত যা হয়েছে, তাতে কিছুই বলার নেই। ধানের শীষের জন্য কাজ তো করবই। কারণ দলে ছিলাম, আছি, থাকব। আমাদের মূল লক্ষ্য নির্বাচনে লড়ে দলের চেয়ারপরসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনা এবং দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।

অন্যদিকে রাঙামাটি জেলা বিএনপির একটি অংশ বলছে, ২০০১ সালের নির্বাচনে মণিস্বপন দেওয়ান বিএনপির প্রার্থী হিসেবে রাঙামাটি-২৯৯ আসনটি ধরে রেখে ছিলেন। এবারও তার বিকল্প কিছুই হবে না। কারণ পাহাড়ে এখনো মনি স্বপন দেওয়ানের জনপ্রিয়তা রয়ে গেছে। তাই তারা নিশ্চিত এবার নির্বাচনেও বিএনপির পক্ষে লড়ে মনি স্বপনই জয়ী হবেন।

তবে অভিযোগ রয়েছে, র্দীঘ দিন বিএনপি ত্যাগ করে নিজের স্বার্থ অর্জনের জন্য এলডিপিতে চলে যায় মনিস্বপন। ক্ষমতায় থাকাকালেও দলীয় নেতাকর্মীদের জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকা রাখেননি তিনি। তা ছাড়া তিনি বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়ে রাঙামাটি আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার আগেও দলের কেউ ছিলেন না। এতটা বছর পরে হঠাৎ করে দলের মনোনয়ন পেলেন তিনি। এটা নিয়ে জেলা বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎকণ্ঠা।

রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শাহ আলম বলেন, আমরা ব্যক্তি নয়, দলের স্বার্থ বড় করে দেখেছি। কেন্দ্র থেকে যাকে মনোনীত করেছে আমাদের সবার উচিত তার পক্ষে কাজ করা। রাঙামাটি জেলা বিএনপির সকল নেতাকর্মী এখন ঐক্যবদ্ধ। এ নির্বাচনে আসন উদ্ধারের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। তাই রাঙামাটি-২৯৯ আসনটি বিএনপিরই দখলে থাকবে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/মুমু/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর