শুটিং দেখতে গিয়ে নায়িকা!

ফাইল ছবি

শুটিং দেখতে গিয়ে নায়িকা!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

জেরিন খান, বলিউডের বর্তমান সময়ের হার্টথ্রুব নায়িকাদের একজন। কিন্তু তার অভিনয় জগতে আসার গল্পটা পুরোই কাকতালীয়। ভক্ত হিসেবে বলিউড সুলতান সালমান খানের সঙ্গে দেখা করতে এসে হয়ে গেছেন অভিনেত্রী।

সালমান খানের বিপরীতে 'বীর' সিনেমার মাধ্যমে বলিউড যাত্রা শুরু।

এরপর হেট স্টোরি থ্রি, রেডি, ভেরাপান, ওয়াজা তোম হো সহ বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন জেরিন। এ অভিনেত্রীর পরবর্তী সিনেমা আকসার টু মুক্তির অপেক্ষায়।

যদিও হেট স্টোরি থ্রিতে জেরিনের ব্যাপক খোলামেলা উপস্থিতি সালমান মোটেও ভাল চোখে দেখেননি, তবে জেরিন তাতে কান দেননি। এর কারণও হয়ত আছে।

বীর ছবিতে মিষ্টি মুখের জেরিন দর্শকের হৃদয়ে নাড়া দিলেও ক্রমেই হারিয়ে যান। দীর্ঘ সময় চেষ্টা করেও লাইম লাইটে আসতে পারেননি। পরেই সিদ্ধান্ত নেন, খোলামেলা হয়েই নিজের জায়গা তৈরি করবেন। আর তাই হেট স্টোরিতে দর্শন দেখতে পায় অন্য এক জেরিনকে। আকসার টু ছবিতেও একই ধরণের উত্তেজনার পারদ চড়াতে যাচ্ছেন এ নায়িকা।

রুপালি জগতে পা রাখার আগে কল সেন্টারসহ অনেক ছোটখাটো জায়গায় কাজ করেছেন জেরিন। সম্প্রতি ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমে সেই সময়ের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন তিনি। জেরিন বলেন, ‘আমি ১৭ বছর বয়স থেকে কাজ করছি। তখন অবস্থা ভালোই ছিল। কিন্তু পারিপার্শ্বিক কারণে আমাকে পড়ালেখা বাদ দিয়ে কাজ শুরু করতে হয়।

সে সময় বিষয়টি অনেক কঠিন ছিল, তবে জীবনের শুরুতেই বাস্তব অভিজ্ঞতা আমাকে অনেক শক্তিশালী করেছে এবং সে কারণে আমি আজকের অবস্থানে এসেছি। আমি ছোটখাটো কাজ করতাম এ জন্য অনেক ধরনের মানুষের সঙ্গে আমার পরিচয় হতো। এর ভালো দিক হলো, আমি তাদের দেহভঙ্গি দেখেই তাদের ভাষা বুঝে যেতাম এবং এতে আমার যোগাযোগ ক্ষমতা বেড়ে যায়।

আমার প্রথম কাজ কল সেন্টারে। আমি তিন মাসের ট্রেনিং নিয়েছিলাম এবং মাসে ১০ হাজার রুপি বেতন পেতাম। এটি ভালোই চলছিল কিন্তু সে সময় আমার চাকরিটা ছাড়তে হয়েছিল। খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম এবং হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। তারপর বিমানবালা হওয়ার ইচ্ছা হয়। নিজেকে সেভাবেই প্রস্তুত করছিলাম। আমার কিছু বাড়তি ওজন কমানোর চেষ্টা করছিলাম। তখন আমাকে কেউ একজন পরামর্শ দেয় প্রচারণামূলক কাজ করার জন্য। সেগুলো বেশ আকর্ষণীয় ছিল। একদিনে আমি ৬৫০ রুপি পেতাম। বেশির ভাগ সময় আমাকে করপোরেট অফিসের ডেস্কে কাজ করতে হতো এবং অনেকদিন মুম্বাই কনভেনশন অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে কাজ করেছি। এটি ব্যক্তিগত মালিকানায় সবচেয়ে বড় স্থায়ী এক্সিবিশন সেন্টার এবং এতে অনেক আন্তর্জাতিক মেলা ও প্রদর্শনী হয়েছে। এটি মুম্বাইয়ের গোরেগাঁওয়ে অবস্থিত, বিমানবন্দর থেকে ১০ মিনিটের এবং লোকাল ট্রেন স্টেশন থেকে হাঁটা পথ।

আমি অনেক বাণিজ্য মেলায় অংশ নিয়েছি এবং গাড়ি, পোশাক- এ ধরনের অন্যান্য ব্র্যান্ডের হয়ে কাজ করেছি। অনেক সময় ব্র্যান্ডগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ অনেক বিষয়ে মডেল হিসেবে আমার ছবি ব্যবহার করত। এ থেকে আমি কিছু বাড়তি অর্থ পেতাম এবং আমার মডেলিংয়েরও কিছুটা অভিজ্ঞতা হয়। এই কাজ অনেক আনন্দের ছিল এবং আমি ভালো অঙ্কের অর্থ সঞ্চয় করতে পেরেছিলাম যা দিয়ে পরিবারের দেখাশোনা করতে পারতাম। এতে আমি অনেক শক্তিশালী ও বুদ্ধিদীপ্ত হয়ে উঠেছিলাম, যা এ ধরনের বড় শহরে চলার জন্য খুবই প্রয়োজন। আমি বান্দ্রা থেকে গোরেগাঁও লোকাল ট্রেনে চলাচল করতাম।   

তখন প্রথম আমি ট্রেনে যাতায়াত করি এবং সেই সময়টা আমার মনে গেঁথে থাকবে। ওই ছোটখাটো কাজ করার কারণেই এখন আমার সিনেমা বক্স অফিসে ব্যর্থ হলেও আমি সহজে হতাশ হই না। এগুলো আমাকে শিখিয়েছে, কাজ যত ছোট হোক না কেন তাতে শতভাগটাই দিতে হবে। কারণ বলা যায় না, ভাগ্য কখন আপনার দুয়ারে এসে কড়া নাড়বে। এটা আমার বেলায় ঘটে যখন একটি সিনেমার শুটিং দেখতে যাই। একটি স্টুডিওতে সুভাষ ঘাইয়ের যুবরাজ সিনেমার শুটিং করছিলেন সালমান খান। আমি ভক্ত হিসেবে তার সঙ্গে দেখা করি এবং কিছু বুঝে ওঠার আগেই অনিল শর্মার বীর সিনেমায় সালমান খানের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পাই। সিনেমায় রাজকন্যার চরিত্রে অভিনয় করি এবং বাকিটা তাদের ভাষায়, ইতিহাস। ’

সম্পর্কিত খবর