রংপুরে ২ হাজার জনকে আসামি করে ২ মামলা
ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে সহিংসতা

রংপুরে ২ হাজার জনকে আসামি করে ২ মামলা

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর ছবি ও স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে রংপুরে হিন্দুদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ৩০ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুক্রবার বিকেলে ওই ঘটনার পর রাতভর অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ ঘটনায়  ২৫-৩০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ২ হাজার জনকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করেছে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন (বিশেষ শাখা) জানান, পুলিশ বাদী হয়ে গঙ্গাচড়া ও কোতয়ালি থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছে।

এখন পর্যন্ত ৫৩ জনকে আটক করা হয়েছে।


শনিবার সকালে পাগলাপীর, শলেয়া শাহ, ঠাকুরবাড়িসহ কয়কটি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পুলিশের অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ঘটনাস্থলের আশপাশের ৪-৫ গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। ওইসব এলাকায় থমথমে ও ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে।

এদিকে, সদর উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের ঠাকুরপাড়া গ্রামে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনায় সেখানে বসবাসরত শতাধিক হিন্দু পরিবারের মাঝে এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

আবারও আগুন দেওয়া হতে পারে এমন আশঙ্কায় তারা না ঘুমিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রাত্রীযাপন করেছেন বলে জানিয়েছেন হিন্দু পরিবারের সদস্যরা। তবে আবার যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় এজন্য ওই এলাকায় শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।  

রাতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজনকে পুলিশ পাহারায় ঠাকুর প্রাইমারি স্কুলে রাখা হয়েছিল। সেখানে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন। এছাড়াও সকালে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ তিন হাজার টাকা ও দুই বান্ডিল করে টিন প্রদান করা হয়েছে। সেখানে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের কাজ অব্যাহত রয়েছে।

জানা গেছে, গঙ্গাচড়া উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের ঠাকুরপাড়া এলাকার মৃত খগেন রায়ের ছেলে টিটু রায় ৫ নভেম্বর ফেসবুকে ‘ধর্মীয় অবমাননাকর’ স্ট্যাটাস দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে ওই গ্রাম ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এ ঘটনায় গঙ্গাচড়া উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের লালচান্দপুর গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে টিটু রায়কে আসামি করে ৫ নভেম্বর গঙ্গাচড়া থানায় মামলা করেন। টিটু রায় গ্রামে থাকেন না। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। গত মঙ্গলবার ওই যুবককে গ্রেপ্তারের দাবিতে পাগলাপীর এলাকায় বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভের পর তাকে (টিটু) গ্রেপ্তারের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

টিটু রায়ের মা জীতেন বালাসহ অন্য স্বজনদের দাবি, টিটু অশিক্ষিত। সে লেখাপড়া জানে না। কীভাবে ফেসবুক চালাতে হয় তাও সে জানে না। টিটুকে ফাঁসাতে কেউ পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটাতে পারে। তারা এর সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষিদের শাস্তির দাবি জানান।

সম্পর্কিত খবর