রূপ বৈচিত্র্য হারাচ্ছে রাঙামাটি!

রূপ বৈচিত্র্য হারাচ্ছে রাঙামাটি!

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

অযত্ন, অবহেলা আর অব্যবস্থাপনায় রূপ বৈচিত্র্য হারাচ্ছে রাঙামাটি। অপরিকল্পীত নগরায়ণ। যত্রতত্র হাট-বাজার। সড়কে সড়কে অবৈধ স্থাপনা।

যেখানে সেখানে জমানো হচ্ছে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। এতে যেভাবে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, ঠিক একইভাবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারাচ্ছে রাঙামাটি।  

অন্যদিকে দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটকরা এখানে বেড়াতে এসেও মন ক্ষুন্ন করছে। এতে যেমন রাঙামাটি পর্যটন শূূণ্য হচ্ছে, তেমনি ধ্বংসের দিকে অগ্রসর হচ্ছে পর্যটন সম্ভ্যাবনাময় স্থানগুলোও।

নজরদারি নেই কোন ব্যবস্থাপনায়। তবে মাঝে মধ্যে কিছু পরিকল্পনার কথা শুনা গেলেও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেই কারো।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি শহর জুড়ে গড়ে উঠেছে হাজারো অবৈধস্থাপনা। নিয়ম-নীতি থাকলেও তোয়াক্কা করে না কেউ। ইচ্ছামত চলছে সব কিছুই। যে যার মত ফুটপাত ও সড়ক দখল করে গড়ে তুলছে নানা ভাসমান দোকান-পাট। এছাড়া যত্রতত্র বিভিন্ন গাড়ি পাকিং তো রয়েছেই। ফুটপাত থাকলেও ইট-পাথর ও কংক্রিটসহ টেলা গাড়ির দখলে সব। এতে সাধারণ মানুষের চলাচলে যেমন অসুবিধা হচ্ছে, তেমনি চরম ভোগান্তি বেড়েছে কমলমতি শিক্ষার্থীদের। বাধ্য হয়ে গাড়ি চলাচলে সড়কে হাটছে অনেকে। তাই প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন সড়ক দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে মানুষ।

অন্যদিকে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বেশকিছু দিন ধরে ফুটপাতগুলোকে অবৈধ স্থাপনা মুক্ত করতে ভ্রাম্যমাণ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। সে সময় পরিচ্ছিন্ন নগরীতে পরিণত হয় রাঙামাটি। স্বস্তি ফিরে আসে সাধারণ মানুষের মধ্যে।  
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ জানান, রাঙামাটি শহরকে অবৈধস্থাপনা মুক্ত করতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দীর্ঘদিন পরিচ্ছন্ন অভিযান চালানো হয়েছে। সে সময় রাঙামাটির বৈচিত্র্যতা ফিরে আসলেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা ফিরে আসেনি। যতদিন অভিযান চলে, ততদিন সবাই নিময়-নীতি মেনে চলে। কিন্তু কিছু দিন পর সব আগেরমত হয়ে যায়। মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা গেলে রাঙামাটিকে অবৈধস্থাপনা মুক্ত করা কোন ব্যাপার হবে না। তবে জেলা প্রশাসনের অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান এখনো অব্যাহত আছে।

এদিকে, অপরিকল্পতি পৌর নগরায়নের কারণে যত্রতত্র গড়ে উঠছে বিভিন্ন দালান কোটা। এসব দালানের সীমানা প্রাচির এখন বেশকিছু সড়কের উপর। দখল হয়ে গেছে কাপ্তাই হ্রদের পাড়ও। দিনে পর দিন গড়ে উঠছে নতুন নতুন টং ঘর (কাঠের খুঁটি উপর ঘর)। আর এসব ঘর-বাড়ির থেকে যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। একইভাবে দখল হয়ে গেছে পাড়া-মহল্লার সড়কগুলো। মুদির দোকানিরাও পসরা সাজিয়ে বসেছে সড়কের উপর। সড়কের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের ময়লার স্তুপে চরম বিপাকে পড়তে হয় সাধারণ পথচারীদের। বিঘ্ন হয় যান চলাচলেও।

এ ব্যপারে রাঙামাটি পৌর মেয়র মো. আকবর হোসেন চৌধুরী জানান, পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রতিদিন রাঙামাটি শহরের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার-পরিছন্ন করা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় মানুষদের নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া ময়লা-অবর্জনা যত্রতত্র না ফেলার জন্য সচেতন করা হয়েছে। কিন্তু কিছু অসচেতন মানুষের জন্য মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়তে হয়। আর যেসব এলাকায় অবৈধভাবে অপরিকল্পীত বাড়ি-ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। পৌর সভার একটি বিশেষ দল তার তালিকা তৈরি করছেন। তালিকা অনুযায়ে ওই সব এলাকার অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।  


NEWS24▐ Kamrul 

সম্পর্কিত খবর