যুবরাজের আচরণে ক্ষুব্ধ সালমান

যুবরাজ সালমান-রাজা সালমান

যুবরাজের আচরণে ক্ষুব্ধ সালমান

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাম্প্রতিক আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েছেন সৌদি রাজা সালমান। এতে উত্তরাধিকারের মধ্যে অস্থিতিশীলতা ডেকে আনার মতো দূরত্ব বাড়ছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে বলে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে প্রচার করা হয়েছে।

খবরে বলা হয়, ইয়েমেনের যুদ্ধসহ সৌদি অনেক গুরুত্বপূর্ণ নীতি নিয়ে সৌদি রাজা এবং যুবরাজের মধ্যে মত পার্থক্য বাড়ছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এ মতপার্থক্য অনেক বেশি প্রকট হয়ে উঠছে।

এ খবরে আরও বলা হয়েছে, সৌদি ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে রাজা এবং যুবরাজের টানাপড়েনের সূচনা হয়। ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে গত বছরের ২ অক্টোবর খাসোগিকে হত্যা করা হয়। যুবরাজের নির্দেশেই নজিরবিহীন এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হয়।

গার্ডিয়ানকে একটি সূত্র বলেছে, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে রাজা সালমানের মিশর সফরের সময় যুবরাজের সঙ্গে টানাপড়েন নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়।

সে সময় রাজার কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে হুঁশিয়ার করে দেন সালমানের উপদেষ্টারা।  

বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়। সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ৩০ সদস্যের নতুন একটি নিরাপত্তা দলকে তড়িঘড়ি বিমান যোগে মিশরে পাঠানো হয়। ৩০ সদস্যের প্রতিজনকে দলভুক্ত হওয়ার আগে কঠোর বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। মিশরে রাজার নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত যে দলটি ছিল তার স্থলাভিষিক্ত হয় নতুন এ দল। নতুন দল পাঠানোর কারণ হলো, পুরানো দলের কয়েকজন যুবরাজের  প্রতি অনুগত হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল।

রাজা সালমান সৌদি আরবে ফিরে আসার পর তাকে স্বাগত জানাতে যারা গিয়েছিলেন সেখানে এমবিএস ছিলেন না। আর এ মধ্য দিয়ে পিতা-পুত্র টানাপড়েনের বিষয়টি প্রকাশ্য রূপ নেয়।

সৌদি রাজার মিশর সফরের সময় এমবিএস দু’টো গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটান। এর মধ্যে আমেরিকায় প্রথম বারের মতো একজন সৌদি নারীকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেয়া এবং যুবরাজের আপন ভাই প্রিন্স খালিদ বিন সালমানকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়া রয়েছে।

খালিদকে নিয়োগ দেয়ার মাধ্যমে প্রতিরক্ষা খাতে সৌদি ক্ষমতাসীন পরিবারের একটি শাখার কর্তৃত্ব আরো মজবুত হলো। রাজা সালমানকে না জানিয়েই এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

রাজা মনে করেন, এতো উঁচু পদে খালিদকে ঠেলে দেওয়ার সময় এখনো আসেনি।

সৌদি সূত্র থেকে বলা হয়েছে, টেলিভিশনের খবর থেকেই এ দুই নিয়োগ সম্পর্কে প্রথমে জেনেছেন সৌদি রাজা।

এদিকে গত মাসে পবিত্র কাবাঘরের ছাদে পদচারণা করে গোটা মুসলমান বিশ্বকে খেপিয়ে তুলেছেন এমবিএস। সৌদি কোনো কোনো আলেম এ নিয়ে রাজার কাছে যুবরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগও করেছেন। সৌদি রাজপরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে এ খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর