পাহাড়ে ফের হত্যাযজ্ঞ, আওয়ামী লীগ নেতা খুন

ছবি সংগৃহীত

পাহাড়ে ফের হত্যাযজ্ঞ, আওয়ামী লীগ নেতা খুন

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ে হত্যাযজ্ঞ লেগেই আছে। একের পর এক ঘটছে খুনে ঘটনা। রাঙামাটি উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে ১৩ ঘণ্টার ব্যবধানে ঝড়ল আরও এক প্রাণ। আজ সকালে রাঙামাটির বিলাইছ উপজেলায় ফের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় নিহত হয়েছে লাইছড়ি আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরেশ কান্তি তংঞ্চঙ্গ্যা (৫৫)।

এদিকে একের পর এক হত্যাকাণ্ডে রাঙামাটি জেলায় অশান্তি বিরাজ করছে। চাপা আতঙ্কে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় সাধারণ মানুষ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ ইকবাল জানান, রাতভর নির্বাচনের কাজ শেষে করে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় কাপ্তাই হ্রদের স্পিডবোর্টে করে বাড়ি ফির ছিল বিলাইছড়ি আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরেশ কান্তি তংঞ্চঙ্গ্যা।

সাথে ছিল তার সহধর্মীনি ও ছেলে নিরূপম কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা (২৫)।

এ সময় তাদের বহনকারী স্পিড বোটটি বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া এলাকার আলিক্ষিয়ংয়ে পৌঁছালে সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা চার পাশ থেকে ঘিরে ফেলে। বোটে উঠে প্রথমে সুরেশের মাথায় ও পরে বুকের মাঝখানে গুলি করে পালিয়ে যায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীর দলটি। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। এ সময় তার স্ত্রী ও সন্তান বোটে উপস্থিত থাকলেও তাদের কিছুই করেনি তারা। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় যৌথবাহিনীর সদস্যরা।  

পরে পুলিশি নিরাপত্তায় একই বোটে করে নিজের বাবার গুলি বিদ্ধ লাশ নিয়ে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আসে সুরেশের ছেলে নিরূপম কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা। সেখানে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। ক্ষোভে রাঙামাটি প্রধান সড়কে অবস্থান করে বিক্ষোভ শুরু করে দলীয় নেতাকর্মীরা। পরে অ্যাম্বুলেন্স করে প্রিয় সহকর্মীরা লাশ নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে যায় তারা।

নিহত সুরেশ কান্তির ছেলে নিরূপম কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, একদল মুখোশ পড়া সশস্ত্র উপজাতি সন্ত্রাসী আমাদের স্পিট বোটে উঠে বাবার মাথায় ও বুকে গুলি করে পালিয়ে যায়। আমরা তাদের চিনতে পারিনি। তবে কেন তারা বাবাকে হত্যা করেছে সে বিষয়েও কিছুই জানি না। খুনিদের বিরুদ্ধে তার মা বাদি হয়ে বিলাইছড়ি থানায় মামলা করবে বলে জানায় সে।

রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক (আরএমও) ডা. সৈয়কত আকবর বলছে, ময়নাতদন্তের পর নিহতের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

এদিকে রাঙামাটির দুই উপজেলায় ঘটে যাওয়া এসব খুনের ঘটনার জন্য রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা মাতব্বর শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরকারী সন্তু লারমার সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে দায়ী করেছে। তাবে এ দায় অস্বীকার করেছে সংগঠনটির সংশ্লিষ্টরা নেতারা।

অন্যদিকে, রাঙামাটি উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে পাহাড়ে একের পর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। দুর্গম বাঘাইছড়িতে ৭ খুনের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ বলেন, এই জঘন্যতম ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করা হবে। খুনিদের গ্রেপ্তার করতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অভিযান শুরু করছে। এছাড়া আরও কোনভাবে যাতে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে না পারে সে বিষয় প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার জোরদাড় করা হয়েছে।


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)

সম্পর্কিত খবর