নুসরাত হত্যা: নূর উদ্দিন ভালুকায় গ্রেপ্তার

অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার সঙ্গে হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি নূর উদ্দিন

নুসরাত হত্যা: নূর উদ্দিন ভালুকায় গ্রেপ্তার

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার মুক্তি দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্বদাতা এবং হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি নূর উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে ময়মনসিংহের ভালুকার সিডস্টোর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ময়মনসিংহ ব্রাঞ্চ।

তাকে গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করে ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার বলেন, নূর উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ঘটনার প্রথম থেকেই সিরাজ উদদৌলার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নূর উদ্দিনকে প্রধান সন্দেহভাজনদের একজন মনে করছেন স্থানীয়রা।

তাদের ভাষ্যে, নুসরাতকে আগুনে ঝলসে দেওয়ার ঘটনার আগের দিন ৫ এপ্রিল রাতে এবং ঘটনার দিন ৬ এপ্রিল সকালেও নুর উদ্দিনকে মাদ্রাসার মূল ফটকে দেখা গেছে। তার সঙ্গে ছিলেন শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম নামে আরও একজন। এ দু’জনই মামলার দ্বিতীয় ও তৃতীয় নম্বর আসামি।

নুসরাতের শ্লীলতাহানির মামলায় ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা গ্রেফতার হলে তার মুক্তির দাবিতে ‘মুক্তি পরিষদ’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়।

এ কমিটির আহ্বায়ক হন নূর উদ্দিন এবং যুগ্ম-আহ্বায়ক হন শাহাদাত। তাদের নেতৃত্বেই সিরাজ উদদৌলার মুক্তির দাবিতে ২৮ ও ৩০ মার্চ উপজেলা সদরে দুই দফা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়।

অভিযোগ পাওয়া যায়, শ্লীলতাহানির মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এরাই নুসরাত ও তার স্বজন-সঙ্গীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে গিয়ে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কে বা কারা মারধর করেছে এমন সংবাদ পেয়ে তিনি ওই ভবনের তৃতীয় তলায় যান। সেখানে মুখোশ পরা ৪/৫জন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। সে অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় নুসরাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে বুধবার রাত সাড়ে নয়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত।

আরও পড়ুন: নুসরাত হত্যা: আরেক আসামি ঢাকায় গ্রেপ্তার

এর আগে ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এনে ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন নুসরাত জাহান রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।

আরও পড়ুন: অধ্যক্ষ সিরাজের ঘনিষ্ঠরা উধাও

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর