সিরাজের কক্ষে ঢোকার নিয়ম ছিল একজন শিক্ষার্থীর

অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা

সিরাজের কক্ষে ঢোকার নিয়ম ছিল একজন শিক্ষার্থীর

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা একাধিক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের প্রভাবে এতোদিন মুখ বন্ধ রেখেছিল ভুক্তোভোগীসহ স্থানীয়রা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ছাত্রী অভিযোগ করেন, বেপরোয়া ছিলেন অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা। সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার একচ্ছত্র অধিপতি ছিলেন তিনি।

যেকোনো সমস্যায় তার কক্ষে কেবল একজন শিক্ষার্থীর প্রবেশের নিয়ম ছিল। আর এই সুযোগটা কাজে লাগাতেন তিনি। নুসরাতের বেলায়ও এই সুযোগটা নিয়েছিলেন তিনি।

এ জন্য মাদ্রাসা কমিটিকে দায়ী করছেন ছাত্রীরা।

তারা বলছেন, যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে মাদ্রাসা কমিটির কাছে অভিযোগ করেছেন নুসরাতসহ একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক। এতে কোনো কাজ হয়নি।

উল্টো সেসব শিক্ষার্থী আর তাদের অভিভাবক বিপদে পড়েছেন। যে কারণে ভয়ে অনেকে অভিযোগ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে গিয়ে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কে বা কারা মারধর করেছে এমন সংবাদ পেয়ে তিনি ওই ভবনের তৃতীয় তলায় যান। সেখানে মুখোশ পরা ৪/৫জন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। সে অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় নুসরাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে বুধবার রাত সাড়ে নয়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত।

এর আগে ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এনে ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

এদিকে নুসরাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এজাহারভুক্ত ছয় আসামি ছাড়াও সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে ৯ এপ্রিল জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালত নূর হোসেন, কেফায়াত উল্যাহ, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন ও শহিদুল ইসলামকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন। ১০ এপ্রিল অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে সাত দিন এবং আবছার উদ্দিন ও আরিফুল ইসলামকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন একই আদালতের বিচারক।

পরের দিন ১১ এপ্রিল উম্মে সুলতানা পপি ও যোবায়ের হোসেনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ১৩ এপ্রিল জাবেদ হোসেনকে সাত দিনের রিমান্ড দেন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইন।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর