নুসরাতকে পুড়িয়ে পরীক্ষা দেয় ওই দুই ছাত্রী

নুসরাত হত্যা

নুসরাতকে পুড়িয়ে পরীক্ষা দেয় ওই দুই ছাত্রী

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন দিয়ে হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে আটক জুবায়ের ও জাবের। তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জানায়, রাফি হত্যার ঘটনায় আটক পপি ও তার বান্ধবী নুসরাত জাহান রাফির শরীরে আগুন দেওয়ার পর পরীক্ষায় অংশ নেয়। অজ্ঞাত ওই বান্ধবী এখন পলাতক রয়েছে।

গতকাল রাত একটার দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশন) তাহেরুল হক চৌহান এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেছিলেন।

আরও পড়ুন: সোনাগাজীর সাবেক ওসির বিরুদ্ধে মামলা

তিনি জানিয়েছিলেন, আসামিরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিজ্ঞ আদালতের কাছে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। আসামিরা পুরো বিষয় খোলাসা করেছেন। হত্যাকাণ্ডটি কারা ঘটিয়েছে, কীভাবে ঘটিয়েছে, কী প্রক্রিয়ায় ঘটিয়েছে বিস্তারিত বলেছেন। কিন্তু তা আপনাদের সামনে মামলার তদন্তের স্বার্থে পেশ করব না।

তাহেরুল হক চৌহান বলেন, আসামিরা অপরাধ স্বীকার করেছেন। তারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তারা জেলখানা (সিরাজ উদ দৌলা) থেকে হুকুম পেয়েছেন।

নুসরাত হত্যায় সরাসরি জড়িত চারজনের সবাইকে গ্রেপ্তার করতে পারিনি। দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তাহেরুল হক চৌহান।

আরও পড়ুন: সিরাজের কক্ষে ঢোকার নিয়ম ছিল একজন শিক্ষার্থীর

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে গিয়ে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কে বা কারা মারধর করেছে এমন সংবাদ পেয়ে তিনি ওই ভবনের তৃতীয় তলায় যান। সেখানে মুখোশ পরা ৪/৫জন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। সে অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় নুসরাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে বুধবার রাত সাড়ে নয়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত।

আরও পড়ুন: ‘গায়ে আগুন দেওয়ার আগে তারা টয়লেটে লুকিয়ে ছিল’

এর আগে ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এনে ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

এদিকে নুসরাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এজাহারভুক্ত ছয় আসামি ছাড়াও সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে ৯ এপ্রিল জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালত নূর হোসেন, কেফায়াত উল্যাহ, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন ও শহিদুল ইসলামকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন। ১০ এপ্রিল অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে সাত দিন এবং আবছার উদ্দিন ও আরিফুল ইসলামকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন একই আদালতের বিচারক।

আরও পড়ুন: ‘দুই ছাত্র ও দুই ছাত্রী রাফির গায়ে আগুন দেয়’

পরের দিন ১১ এপ্রিল উম্মে সুলতানা পপি ও যোবায়ের হোসেনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ১৩ এপ্রিল জাবেদ হোসেনকে সাত দিনের রিমান্ড দেন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইন।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর