মেয়ের পোশাকে রক্ত দেখেই সন্দেহ হয় মায়ের

ক্লাসরুমে শিশু শিক্ষার্থীরা। (অন্য একটি স্কুলের ছবি)

মেয়ের পোশাকে রক্ত দেখেই সন্দেহ হয় মায়ের

বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে অভিজাত স্কুলটি
নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

স্কুল থেকে বৃহস্পতিবার বাড়ি ফেরার পর চার বছরের মেয়ের পোশাকে রক্তের দাগ লেগে থাকতে দেখেন মা। তারপরই জানা যায়, ওই শিশুটিকে স্কুলেরই দুই শিক্ষক যৌন নির্যাতন করেছেন। খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তপ্ত হয়ে পড়ে পরিস্থিতি। অভিভাবকরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।

শেষ পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হতে চলেছে সেই স্কুল।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কলকাতার জি ডি বিড়লা স্কুলে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনায় এখনো বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। বাধ্য হয়ে রবিবার স্কুলের প্রিন্সিপাল স্কুল বন্ধের ঘোষণা দেন। নোটিসও লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে স্কুলের দেয়ালে।

তাতে লেখা রয়েছে, আগামী সোমবার থেকে স্কুল বন্ধ থাকছে।

ছাত্রীটির ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টে নির্যাতনের ঘটনার প্রমাণ পাওয়ার পরে সন্ধ্যায় দুই শিক্ষক - অভিষেক রায় ও মুহম্মদ মফিজুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। চকলেটের লোভ দেখিয়ে স্কুল চলাকালে ওই ছাত্রীকে তারা টয়লেটে নিয়ে যায় এবং যৌন নির্যাতন করে।  

দক্ষিণ কলকাতার জি ডি বিড়লা সেন্টার ফর এডুকেশন নামের মেয়েদের বেসরকারি স্কুলে প্রি প্রাইমারি বিভাগের ওই ছাত্রী বৃহস্পতিবার বাড়ি যাওয়ার পরেই তার মা লক্ষ্য করেন যে তার যৌনাঙ্গ থেকে অবিরাম রক্তক্ষরণ হচ্ছে। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরে তিনিই প্রথম সন্দেহ করেন যে শিশুটির ওপরে যৌন নির্যাতন চালানো হয়ে থাকতে পারে।

থানায় অভিযোগ জানানোর পর রাতেই মেয়েকে নিয়ে কলকাতার এস এস কে এম হাসপাতালে যান শিশুটির বাবা-মা।  পরে ডাক্তারি রিপোর্টে যৌন নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া যায়।

এই ঘটনা সামনে আসার পর শুক্রবার সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন অভিভাবকরা।   

অভিভাবকরা বেশ কিছু দাবি সামনে এনেছেন। স্কুলে পর্যাপ্ত সিসিটিভি লাগাতে হবে, নিচু ক্লাসে কোনও পুরুষ শিক্ষক রাখা যাবে না, প্রত্যেকটা শৌচালয়ের বাইরে মহিলা সহকারি রাখতে হবে, স্কুলের বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণের জন্য অভিভাবকদের নিয়ে একটা কমিটি তৈরি করতে হবে।

অভিভাবকদের এই সমস্ত দাবির প্রেক্ষিতে যতদিন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হচ্ছে, ততদিন স্কুল বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন প্রিন্সিপাল।

প্রসঙ্গত, এই একই স্কুলে বছর তিনেক আগেও একটি ছাত্রীর ওপরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। তখনও স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে ক্লোজড সার্কিট টিভি, নারী সহায়িকা নিয়োগের মতো নানা নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। তবে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।

সম্পর্কিত খবর