পুত্রবধূর কান কেটে নিলেন শাশুড়ি!

সংগৃহীত ছবি

পুত্রবধূর কান কেটে নিলেন শাশুড়ি!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ছেলের বউয়ের কানে রয়েছে স্বামীর দেওয়া গয়না। আর সেটা খুলে নিতে গিয়েই পুত্রবধূর কান কেটে নিলেন শাশুড়ি। অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের সিউড়ি থানার নিমপলাশি গ্রামে। ঘটনার পর আক্রান্ত নারী পুলিশের দারস্থ হলে তাকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সেখানে সাতটি সেলাই দিয়ে তার দু'কান জোড়া দেওয়া হয়।

গৃহবধূর অভিযোগ, শুধু কান কাটা নয়, তাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছিল শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। গৃহবধূর বাবা মাহাতাবউদ্দিন সিউড়ি থানায় শাশুড়ি-ননদ ও ভাশুর-সহ তিনজনের নামে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। ঘটনার পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পলাতক রয়েছে।

গত দু'বছর ধরে রুকসানা বিবির সঙ্গে গণ্ডগোল লেগেই ছিল পরিবারের সদস্যদের। তারই জেরে রবিবার সকালে ওই গৃহবধূর কান থেকে তার দুল নিতে যায় শাশুড়ি। দুল নেওয়ার নামে রুকসানার কেটে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওই বধূর বাপের বাড়ির সদস্যদের।
 
জানা গেছে, বছর চারেক আগে সিউড়ি থানার জুনুদপুরে রুকশানার সঙ্গে নিমপলাশি গ্রামের বাদশা খানের বিয়ে হয়। তাদের একটি বছর তিনেকের মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর থেকে বাদশা ও রুকশানার মধ্যে পারিবারিক অশান্তি চরমে ওঠে। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা সমস্যা সমাধানে আলুন্দা পঞ্চায়েতে বিচারসভা বসায়। বিচারের রায় অপছন্দ হওয়ায় সে রায় মানেনি বাদশার পরিবার। উল্টে পঞ্চায়েতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায়; প্রধান, উপপ্রধান-সহ তিন পঞ্চায়েত সদস্যকে মারধর করে।

পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বাদশাদের পরিবারের উপর মামলা দায়ের করা হয়। গত দু'বছর ধরে সেই মামলা তুলতে পঞ্চায়েতে আর্জি করার জন্য রুকসানার উপর চাপ দেয় তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। তাই নিয়েই অশান্তি চরমে ওঠে।

এদিকে ঝামেলার পর রুকসানার স্বামী বাদশা খান চালকের কাজ নিয়ে কুয়েতে চলে যান। কিন্তু রুকসানার অভিযোগ, স্বামী ওখান থেকে যেমন নির্দেশ দেন, শ্বশুরবাড়ির লোক তেমনই তা পালন করে।  

গৃহবধূর অভিযোগ, রবিবার সকালে তার ননদ আফরোজা বিবি ও শাশুড়ি লুতফা বিবির সঙ্গে মামলা তোলাকে কেন্দ্র করে বিবাদ চরমে ওঠে। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তার উপর চড়াও হয়ে লাঠি দিয়ে মারধর করে। পরে তাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারতে গেলে তিনি কোনও রকমে প্রাণ বাঁচিয়ে পালিয়ে যান।  

আক্রান্ত রুকসানার চাচা সমীর খান জানান, বিয়ের পর থেকেই নানা কারণে রুকসানার উপর অত্যাচার চালাত শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। রবিবার কান কেটে নিলে ছুটতে ছুটতে গ্রামের বাসিন্দা মফিজুল ইসলামের ঘরে ঢুকে পড়েন রুকসানা। সেখান থেকে তার পরিবারে খবর এলে মেয়েকে উদ্ধার করে সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা।

সম্পর্কিত খবর