'অশ্লীলতার' অভিযোগে গ্রেপ্তার সেই ২৪ নারী মুক্ত

'অশ্লীলতার' অভিযোগে গ্রেপ্তার সেই ২৪ নারী মুক্ত

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ট্রাউজার পরে পার্টিতে যাওয়ায় সুদানে গ্রেপ্তার হওয়া ২৪ নারীকে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে অবশেষে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার এক পার্টিতে অভিযান চালিয়ে ওই নারীদের আটক করা হয়। এ নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। পরে সুদানের একটি আদালত তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ খারিজ করে দেয়।

অভিযোগ- তারা বোরখা না পরে টাইট ট্রাউজার পরে পার্টিতে অংশ নিয়েছেন। তারা শ্লীলতার সীমা লঙ্ঘন করেছেন। আর দেশটির আইন অনুযায়ী জনসমক্ষে মেয়েদের ট্রাউজার ও খাটো স্কার্ট পরে বের হওয়া আইনগতভাবে নিষিদ্ধ। কেউ তা লঙ্ঘন করলে শাস্তি হিসেবে ৪০ বেত্রাঘাত ও আর্থিক জরিমানার বিধান রয়েছে।

এসব ক্ষেত্রে পুলিশ যে কোন সময় যে কাউকে গ্রেপ্তারও করতে পারে।

আইনের কারণে সুদানে নারীরা সবসময় ঢিলেঢালা ও সমগ্র শরীর ঢাকা পোশাকই পরিধান করে। নারী অধিকারকর্মীরা বলছেন, এই আইনের যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে। শুধু নারীরাই এর ভিকটিম হচ্ছে। প্রতি বছর এই আইনের আওতায় অন্তত ১০ হাজার নারীকে অশ্লীলতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং সাজা দেওয়া হচ্ছে।

আমিরা ওসমান নামের এক অধিকারকর্মী বলেন, পার্টিটা একটা আবদ্ধ কক্ষে হচ্ছিল। এটা নিয়ে অশ্লীলতার অভিযোগ তোলার কোন সুযোগ নেই। এছাড়া যে মেয়েদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ওই পোশাক পরেছিল। এ ধরণের অযাচিত গ্রেপ্তার নারী অধিকার খর্ব করছে।  

যে পাবলিক অর্ডার অ্যাক্টের মাধ্যমে মাধ্যমে এই গ্রেপ্তার সেটাকে নারীদের জন্য হয়রাণিমূলক বলে মনে করছেন অনেকে।

উল্লেখ্য, দেশটিতে ক্রিমিনাল কোডের আর্টিকেল ১৫২ অনুযায়ী দেশটির পাবলিক অর্ডার পুলিশ ( অথবা 'নৈতিক পুলিশ') যদি মনে করে কেউ জনসম্মুখে 'উত্তেজক' ও 'অশ্লীল পোশাক' পরে জনসাধারণের অনুভূতিতে বিরক্তির উদ্রেক করছে তবে তাৎক্ষণিক তাকে গ্রেপ্তার করতে পারবে।  

দোষী সাব্যস্থ হলে আটক নারীর ৪০ টি বেত্রাঘাত এবং জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে।

মানবাধিকার সংস্থা 'অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল' বলছে, আইনটি নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য তৈরি হলেও এটি বৈষম্যমূলকভাবে শুধু নারীদের ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হচ্ছে।  

জানা গেছে, সুদান পাবলিক অর্ডার অ্যাক্টের আওতায় ২০১৬ সালেই মেয়েদের বিরুদ্ধে ৪৫ হাজারের বেশি অভিযোগ দায়ের হয়।  -ডেইলি মেইল ও দি নিউ আরব

সম্পর্কিত খবর