প্রেমিকার স্বামীকে খুন করে প্রেমিকের প্লাস্টিক সার্জারি!

প্রেমিকার স্বামীকে খুন করে প্রেমিকের প্লাস্টিক সার্জারি!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ভারতের তেলেঙ্গানায় সাথী নামে এক নারী তার প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুন করেছে।  শুধু তাই নয়, স্বামীকে খুন করার পর প্রেমিককে স্বামী বলে চালিয়ে দেন ওই নারী। কিন্তু সব কিছু ভেস্তে দিল এক বাটি মাটন স্যুপ!

জানা গেছে, ২৭ বছর বয়সী সাথী নামের ওই নারী পেশায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের নার্স। তিন বছর আগে সুধাকর রেড্ডি নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

তাদের একটি সন্তানও রয়েছে।

তেলেঙ্গানার নাগারকুরনুলের বাসিন্দা সাথীর সঙ্গে পরিচয় হয় পেশায় ফিজিওথেরাপিস্ট রাজেশের। দু’জনের ঘনিষ্ঠতা থেকে প্রেম। শেষ পর্যন্ত দু’জনে মিলে সুধাকরকে খুন করার পরিকল্পনা করে।

গত ২৭ নভেম্বর প্রথমে অ্যানেস্থেশিয়ার সাহায্যে সুধাকরকে অজ্ঞান করে সাথী এবং রাজেশ। এর পরে ভারী জিনিস দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয় সুধাকরের মাথা। সবশেষে একটি জঙ্গলের মধ্যে সুধাকরের দেহ ফেলে দেয় সাথী এবং রাজেশ।

সুধাকর যে খুন হয়েছেন, সেটাই কাউকে বুঝতে দিতে চায়নি সাথী এবং রাজেশ। আর সেই জন্য ভয়ঙ্কর এক পরিকল্পনা করে তারা। রাজেশের মুখ অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে বিকৃত করা হয়। এর পর ওই অবস্থায় প্লাস্টিক সার্জারির জন্য রাজেশকে হাসপাতালে নিয়ে এসে নিজের স্বামী সুধাকর বলে পরিচয় দেয় সাথী। এমনকি, সুধাকরের পরিবারের লোকজনকেও তাই বলে সে। সাথী দাবি করে, কয়েকজন দুষ্কৃতী তাদের উপর হামলা করে সুধাকরের এই অবস্থা করেছে।

এর পরেই অবশ্য বিপত্তি বাঁধে। হাসপাতালে অন্যান্য রোগীদের মতো রাজেশকেও মাটন স্যুপ খেতে দেওয়া হয়। কিন্তু রাজেশ স্যুপ খায়নি। হাসপাতালের কর্মীদের রাজেশ জানায়, যে সে নিরামিষাশী। একথা জানতে পেরেই সন্দেহ হয় সুধাকরের পরিবারের সদস্যদের। কারণ, সুধাকর নিরামিষাশী ছিলেন না।  

তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা জানিয়েছেন, সুধাকর সেজে থাকা রাজেশের স্বভাবের এই পরিবর্তনগুলি সুধাকরের আত্মীয়দের নজর এড়ায়নি। সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা ক্রমাগত রাজেশকে নিজেদের পরিবার নিয়েই প্রশ্ন করতে থাকেন। বিপদ বুঝে কথা না বলে তাঁদের সঙ্গে সাংকেতিক ভাষায় কথা বলতে শুরু করে রাজেশ। এর পরেই পুলিশে অভিযোগ জানায় সুধাকরের পরিবার।  

পুলিশি জেরার মুখে অবশেষে নিজের আসল পরিচয় স্বীকার করে রাজেশ। গত সোমবার গ্রেফতার করা হয় সাথীকেও।   জেরায় সাথী জানায়, ২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়া তেলেগু ছবি ‘ইয়েভাদু’ দেখে সুধাকরকে খুনের এই ছক তার মাথায় আসে। ওই ছবিতে আহত এক যুবকের মুখ প্লাস্টিক সার্জারি করে নিজের মৃত ছেলের মুখের আদলে বদলে দিয়েছিলেন এক চিকিৎসক।

ছবির গল্প আপাতত বাস্তব রূপ পায়নি। সাথীর মতোই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই প্রেমিক রাজেশকেও নিজেদের হেফাজতে নেবে পুলিশ।

সম্পর্কিত খবর