বিবাহবার্ষিকী পালনে বাংলাদেশে ছুটে এলেন এলিজাবেথ

এলিজাবেথ ও মিঠুন

বিবাহবার্ষিকী পালনে বাংলাদেশে ছুটে এলেন এলিজাবেথ

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

২০১৪ সালের মাঝামাঝি। ফেসবুকে দু'জনের পরিচয় হয়। একজন বাংলাদেশি তরুণ, অন্যজন আমেরিকান তরুণী। সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে থাকে।

একপর্যায়ে একে অন্যের প্রেমে পড়েন। ফেসবুকের সম্পর্ককে চূড়ান্ত রূপ দিতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন দুজনে মিলে। গত বছরের  ২ জানুয়ারি বাংলাদেশে চলে আসেন সেই মার্কিন তরুণী এলিজাবেথ। ৯ জানুয়ারি দুটি মন এক সুতোয় বাঁধা পড়ে।
 খুলনার শালম এজি চার্চে মিঠুনের সঙ্গে এলিজাবেথের বিয়ের হয়। কিছুদিন থাকার পর নিজ দেশে ফিরে যান এলিজাবেথ। রয়ে যান মিঠুন। কিন্তু, নিজ দেশে গিয়ে সবকিছু ভুলে যাননি মার্কিন 'পাখি'। একবছর পর বিবাহবার্ষিকী পালন করতে ফের বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন তিনি।

news24bd.tv

আমেরিকা থেকে আসা স্ত্রী এলিজাবেথকে বিবাহবার্ষিকীর কেক খাইয়ে দিচ্ছেন মিঠুন

 

এ সপ্তাহেই এলিজাবেথ বাংলাদেশে এসেছেন বিবাহবার্ষিকী পালন করতে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে লাল শাড়িতে সেজে বাঙালি বধূ বেশে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে কেক কাটেন তিনি। বেনারসী পরে সরিষা ক্ষেতের পাশে বরকে নিয়ে ছবি তুলেছেন।  

news24bd.tv

আমেরিকা ফিরে যাওয়ার সময় স্বামী মিঠুনকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ভিসা জটিলতায় তাকে রেখেই চলে যেতে হয় এলিজাবেথকে। এই দীর্ঘ সময় নিয়মিত মিঠুনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন এলিজাবেথ। একইসঙ্গে মিঠুনকে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করছেন।

মিঠুনের স্ত্রী এলিজাবেথ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটর সিটির রয় এমলিকের কন্যা। প্রথমে এলিজাবেথের পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে নিতে না চাইলেও এক পর্যায়ে মেয়ের জেদের কাছে হার মানতে বাধ্য হন।  তবে সম্পর্কের চূড়ান্ত পরিণতিতে পৌঁছতে এলিজাবেথকে অনেক বাধা মোকাবেলা করতে হয়। বাংলাদেশে আসার টাকা জোগাড় করতে চাকরি নিতে হয়।

news24bd.tv

প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে স্বামীর সঙ্গে সরিষা ক্ষেতে এলিজাবেথ

 

মিঠুন বিশ্বাস জানান, ‘২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে ফেসবুকে এলিজাবেথের সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর বন্ধুত্ব; এক পর্যায়ে আমরা পরস্পরকে ভালোবেসে ফেলি। আড়াই বছরের সম্পর্কের পর আমরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেই। দুই পরিবারকেই জানানো হয়। কিন্তু বাগড়া দেয় এলিজাবেথের পরিবার। মিঠুনের সঙ্গে পরিচয়ের আগে এলিজাবেথ বাংলাদেশ বলে কোনও দেশ আছে বলে জানত না। মিঠুনের কথা পরিবারকে জানালে এলিজাবেথের পরিবার তার কাছে বাংলাদেশকে উগ্রপন্থী মুসলিম দেশ বলে ধারণা দেয়। বাংলাদেশে গেলে তাকে মেরে ফেলা হবে বলে ভয়ভীতিও দেখায়। তবে মিঠুনের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে জেনে পরিবারের নিষেধ অগ্রাহ্য করার সিদ্ধান্ত নেয় এলিজাবেথ। গ্রাজুয়েশন শেষ করা এলিজাবেথ চাকরির জন্য ঘুরতে শুরু করে। কিছুদিনের চেষ্টায় সে ওয়ালমার্টে চাকরি পায়। টাকা জমানোর জন্য কয়েক মাস চাকরি করে সে। এরপর বাংলাদেশে পাড়ি জমায়।  

news24bd.tv

গত বছরের সেই বিয়ের ছবি

 

গত বছরের ২ জানুয়ারি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মিঠুন এয়ারপোর্ট থেকে তাকে নিয়ে আসেন নিজের গ্রামে। মিঠুনের পরিবারের সম্মতিতে ৪ জানুয়ারি তাদের বাগদান সম্পন্ন হয়। ৯ জানুয়ারি খুলনার শালক এজি চার্চে বিয়ে হয় তাদের। বাঙালি রীতি মেনেই বিয়ে করেন এলিজাবেথ। মিঠুনের সঙ্গে তার বিয়ে পড়ান চার্চের রেভারেল্ড লিতু মুন্সি। বিয়ের পর এলিজাবেথ বেশ কিছুদিন থাকেন শ্বশুরবাড়ি ঝিনাইদহের রাখালগাছিতে। বাংলা বলাও শিখতে শুরু করেন। এরপর চলে যান নিজ দেশে।  

মিঠুন জানান, বিয়ের আগে ওর পরিবার বাধা দিলেও এখন তারা এই বিয়ে মেনে নিয়েছেন। তারাও এখন খুশি।

সম্পর্কিত খবর