সমালোচনার তীরে বিদ্ধ ভাবনা

আশনা হাবিব ভাবনা

সমালোচনার তীরে বিদ্ধ ভাবনা

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

'দুই দিনের বৈরাগী ভাতকে বলে ফ্রাইড রাইস', 'খালি কলস বাজে বেশি', 'ভাল করে আয়নায় নিজেকে দেখেন', 'মানসিকতা এতো নিচু হয় ক্যামনে', 'ফুটানি দেখাইতে না জানলেও চাপা আছে সেই লেভেলের'- ফেসবুকে এ রকম নানা তীর্যক মন্তব্যে ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। আর এর পেছনে রয়েছে একটি অনলাইন পোর্টালকে দেওয়া ভাবনার একটি সাক্ষাৎকার। যেখানে ভাবনা বলেন, 'বাংলাদেশের কোনও ব্রান্ড আমি কিনিও না, পরিও না। বাংলাদেশে কি কোনও ব্রান্ড আছে নাকি?'

সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ হতেই ক্ষোভে ফুসে উঠেছে নেটিজেনরা।

মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় ভাবনার ওই বক্তব্য। ফেসবুকে নানা রকম তীর্যক মন্তব্যে জর্জরিত হচ্ছেন অভিনেত্রী। এমনকি ওই পোর্টালের প্রকাশিত নিউজের কমেন্ট বক্সেও নানারকম মন্তব্যে ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছেন ভাবনা।

নেটিজেনদের মতে গর্ব করার মতো অনেক ব্রান্ড রয়েছে বাংলাদেশের অথচ ভাবনার মতো একজন অভিনেত্রী দেশকে এভাবে হেয় করেন কীভাবে।

news24bd.tv

ভাবনা ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, বাংলাদেশের কোনো ব্র্যান্ড আমি কিনিও না, পরিও না। মিথ্যা কথা বলে লাভ নাই। আসলে নেহাত প্রয়োজন না হলে আমি বাংলাদেশ থেকে শপিং করি না। দুবাই এবং সিঙ্গাপুর থেকেই আমার বেশি শপিং করা হয়। খুব পছন্দ করে কিনতে ভালোবাসি। তাই সব জায়গার জিনিস আমার খুব একটা পছন্দও না। বলতে পারেন আমি খুব ফ্যাশন সচেতনও বটে।  

এ অভিনেত্রী আরও বলেন, ইদানীং আমার ফার ব্র্যান্ডের জিনিস খুব ভালো লাগছে। সারাদিন শুটিং করে যা উপার্জন করি, সব আমার লাকজারির (বিলাসিতা) জন্য। ভালো খাব, আর ভালো পরব- এটাই আমার চাওয়া। পরতে কষ্ট হলেও আমি খুব ফ্যাশনেবল হাই হিল পরি। হাই হিল জুতা আমার খুব পছন্দও। গত মাসে বড় দিনে গুচি'র ফার-এর একটি লেটেস্ট জুতা বের হয়েছে। ওই জুতাটাই আমি কিছুদিন আগে কিনেছে। একরকমের জুতা বলিউডের কারিনা কাপুরও কিনেছে।

তিনি বলেন, 'সেলোয়ার-কামিজ আমার ভালো লাগে না। সেলোয়ার কামিজ খুব একটা পরিও না। শাড়ি বা লেহেঙ্গা কিনতে সবসময় ইন্ডিয়াতে যাই। ইন্ডিয়ায় গেলে আমি অনামিকা খান্না, মনিশ মালহোত্রা ও সব্যসাচীর ডিজাইন করা শাড়ি ও লেহেঙ্গা বেশি কিনি। অনামিকা খান্নার ডিজাইন করা পোশাক আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। '

এগুলো ছাড়াও কী কী ব্রান্ডের ঘড়ি বা অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার করেন তা ওই প্রতিবেদককে জানান ভাবনা। সাক্ষাৎকারটির সঙ্গে ভাবনার বেশকিছু ছবিও প্রকাশ করে অনলাইন পোর্টালটি। কিন্তু, সাক্ষাৎকারে ভাবনার সব কথা পাঠকরা ভালোভাবে নেয়নি। বিশেষ করে বাংলাদেশের ব্রান্ড নিয়ে ভাবনার মন্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়ে যায় তীর্যক মন্তব্যের ঝড়।

আরশাদ সোহেল নামে একজন লিখেছেন, 'দেশকে এতো হেয় করে সেই দেশে থাকাই উচিৎ না'

ফারজানা সুলতানা নামে একজন ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, কি আমার চেহারা,নাম হচ্ছে পেয়ারা। বিদেশি ব্রান্ডের নাম বললেই ফেমাস হওয়া যায় না। ফুটানি যত্তসব। বিদেশ চলে গেলেই পারে। এখানের কিছুই যখন পছন্দ না। ' 

প্রিন্স সুজন নামে একজন মন্তব্য করেছেন- 'এই মাকাল ফল কই থাইকা আসছে ? বাংলাদেশে কোন ব্র্যান্ড নাই !!!!!!!!!!!!!! এই মেয়েকে পাবনার মেন্টাল হাসপাতালে পাঠায় না কেন ?'

খায়রুল জনি লিখেছেন, 'আমি এই ফালতু মেয়েকে গাউছিয়া থেকে কাপড় কিনতে দেখেছি। আফসোস এই কথা যদি বলবে জানতাম তাহলে ভিডিও করে রাখতাম।

সাক্ষাৎকারের সঙ্গে প্রকাশিত ভাবনার ছবিগুলোর কথা উল্লেখ করে নিরমা লিখেছেন, 'একটা ব্রান্ডেড পোশাকের ছবি দেখলাম না। ফুটানি দেখাইতে না জানলেও চাপা আছে সেই লেভেলের। মানিষ মালহোত্রা, সব্যসাচী তার পছন্দের নমুনাস্বরূপ কোন পোশাক কিনেছে দেখতে মন চায়। '

চৌধুরী নাঈম হাসান  ওই পোর্টালটিকে উদ্দেশ করে লিখেছেন, 'এই অভিনেত্রিকে জানিয়ে দিন, Mango, Forever 22, H&M, Armani, Prada, Gucci এর সবাই বাংলাদেশ থেকে কাপড় বানাইয়া নেয়। '

জাকারিয়া হোসাইন লিখেছেন, 'ভাওরে ভাও লেখাটা পড়ে আমার চান্দিটা গরম হয়ে গেল। এই সব ফহিন্নি বয়সের শেষে চিকিৎসা করানোর টাকা থাকে না, সব টাকা দুবাই-সিংগাপুর শপিং করে শেষ। তার পর সরকারের দিকে তাকায় থাকে কিছু টাকা দেবার জন্য, মরণ থেকে বাচাঁর জন্য।

এরকম তির্যক মন্তব্য বেগবান হচ্ছে সময়ের সাথে।

এদিকে বুধবার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে ভাবনা দাবি করেন, সাক্ষাৎকারে তার বক্তব্য কিছুটা ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যা পরে ঠিক করা হয়। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট অনলাইনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

ভাবনার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হল-

কালকে একটা ভুল নিউজ যখন আসলো তখন আমি শ্যুটিংয়ে। দেখতে দেখতে দেরি হয়ে গেল...আমার কথাগুলো ভুল করে লিখেছে। যা বলেছি তার কোনোটাই ঠিকঠাক লেখে নাই। যাই হোক যখন কোনো খুশির সংবাদ আসে তখন দেখি না কাউকে ফোন করতে। আমার কিছু সহকর্মীদের মন্তব্য দেখে আমার হাসি পেল। তারা যেন অপেক্ষায় থাকে কখন কার বাজে নিউজ আসবে।

(ফেসবুকের এসব মন্তব্য ও প্রতিক্রিয়ার স্ক্রিনশট সংরক্ষিত আছে। )

সম্পর্কিত খবর