দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে শঙ্কায় ফখরুল

ফাইল ছবি

দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে শঙ্কায় ফখরুল

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে দলের নেতাকর্মীদের রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
 
ইতিহাসে সবচেয়ে সঙ্কটময় মুহূর্তে উপস্থিত হয়েছি দাবি করে তিনি বলেন, এ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না, গণতন্ত্র টিকবে কি না, দেশ সে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে। তাই মানুষের গণতন্ত্র, নাগরিক ও মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে মুক্ত করতে হবে।

আর বসে থাকার সময় নেই।
 
বিএনপির নেতাকর্মীদের আন্দোলনমুখী হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, নিজেদের চেতনা জাগ্রত করুন, সবাই উঠে আসুন ঘর থেকে বের হয়ে আসুন। সমস্ত অন্যায় অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হোন।

শনিবার বেলা ১১ টা ৪০ মিনিটে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।


 
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যেমে আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করে আনব। আমি দলের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানবো আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করুন, রাজপথে নেমে আসুন, কোনো বিশৃঙ্খলা করবেন না।
 
আন্দোলনের মাধ্যমে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায় করব উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারি দল উস্কানি দেবে যাতে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হয় তারা রাজনৈতিক সুবিধা নিতে পারে। আমরা তাদের সেই সুযোগ দেব না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমদের নেত্রীকে মুক্ত করব।  

বর্তমান সরকারকে অবৈধ দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সরকার মিথ্যা, সাজানো মামলায় তাকে অন্যায়ভাবে নির্জন কারাগারে আটক করে রেখেছে। কারাগার থেকে তাকে মুক্ত করবার জন্যে, দেশের হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র মুক্ত করবার জন্য, মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেবার জন্য আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। সেই আন্দোলন আজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। তার অংশ হিসেবে আজকের এই গণস্বাক্ষর কর্মসূচি, এ কর্মসূচি চলতে থাকবে। জনগণের উত্তাল প্রতিরোধের মুখে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে অবশ্যই হটতে হবে।
 
খালেদা জিয়ার মুক্তি দেশের সাধারণ মানুষ ও গণতন্ত্রের মুক্তি মনে করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা অনির্বাচিত, অনৈক সরকারের পদত্যাগ ও খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি। খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়ে দেশের মানুষ ও গণতন্ত্রকে কারাগারে পাঠিয়েছে।  
 
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, এবার আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করবো। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবো। দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে। যার মাধ্যমে দেশের মানুষ আবারও শান্তিতে থাকতে পারবে।
 
দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির অক্ষমতার কারণে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি। আমি তাকে বলতে চাই। বিএনপি সন্ত্রাস নয় শান্তিতে বিশ্বাস করে। আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে দুর্বলতা ভাবলে ভুল করবেন। আপনারা আমাদের উস্কানি দিচ্ছেন সেটা যাতে নিজেরা অপকর্ম, নাশকতা করে বিএনপির উপর দোষ চাপাতে পারেন।

বিএনপির গণস্বাক্ষর কর্মসূচি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে  এসময় উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ,মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, কন্ঠ শিল্পী বেবি নাজনীন প্রমুখ।
 
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির আজকের এ গণসাক্ষর কর্মসূচি চলবে সারাদেশব্যপী। দলের নেতাকর্মী ও যে কোনো মানুষ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সাক্ষর করতে পারবেন। এদিকে ঢাকা ছাড়াও সারা দেশেশের জেলা, মহানগর ও উপজেলায় একসঙ্গে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

সম্পর্কিত খবর