প্রশ্নপত্র ফাঁসে শিক্ষামন্ত্রীর ব্যাখ্যা

সংগৃহীত ছবি

প্রশ্নপত্র ফাঁসে শিক্ষামন্ত্রীর ব্যাখ্যা

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

চলমান এসএসসি পরীক্ষায় একের পর এক প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় চারিদিকে সমালোচনার ঝড় বইছে। এ নিয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশে দুটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তিন মন্ত্রীর উপস্থিতিতে যৌথ জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়কমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পাবলিক পরীক্ষাসমূহে কয়েক লাখ পরীক্ষার্থী কয়েক হাজার কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন থেকে পরীক্ষা গ্রহণ পর্যন্ত এর সঙ্গে প্রায় লক্ষাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকেন। এর কোনও এক পর্যায়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে।

যেমন-

১. প্রশ্নপত্র কম্পোজ থেকে প্রিন্টিং এ সবই হয় বিজি প্রেসে। এখানে কর্মরত কোনও একটি গ্রুপ স্মৃতিতে ধারণ করে প্রশ্ন ফাঁস করতে পারে। তবে তাদের প্রশ্ন কপি করার কোন সুযোগ নেই।

২. বিটিআরসি কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন আপলোডকারীদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না এবং সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

৩. অতিরিক্ত কেন্দ্র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার ব্যবস্থাপনা করার মত পর্যাপ্ত জনবল নেই। তাছাড়া কেন্দ্রগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মূল কেন্দ্র হতে দূরবর্তী স্থানে। এতে ৩০ মিনিট সময়ের অধিক পূর্বে কেন্দ্রসচিবগণ প্রশ্ন খুলতে বাধ্য হচ্ছেন।

৪. গুটিকয়েক শিক্ষক/ কর্মচারীর কারণে স্মার্টফোনে গোটা প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে পড়ছে। পরীক্ষার্থী কিংবা পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্তদের স্মার্টফোন নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

৫. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসকারীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। এটা পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ১৫ দিন পূর্ব হতে করা সম্ভব হলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।

৬. নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট / দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে ট্রেজারি/ নিরাপত্তা হেফাজত হতে প্রশ্ন নিয়ে তা পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না মর্মে অভিযোগ রয়েছে।

পাবলিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সভায় কার্যপত্রে এসব বিষয় তুলে ধরেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এসব সমস্যা কীভাবে সমাধান করা সম্ভব সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।

যৌথসভার বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোজাম্মেল হক খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত খবর